লেডি জাস্টিসের মূর্তি যে বদলে যাচ্ছে, তা নিয়ে অন্ধকারে ছিল খোদ সুপ্রিম কোর্টেরই বার অ্যাসোসিয়েশন। আর তা নিয়েই এবার কার্যত ক্ষোভ উগরে দিলেন সিনিয়র আইনজীবীরা। কোন যুক্তিতে ওই পরিবর্তন, জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের সংগঠন।
ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসাবে গোটা দেশেই ব্যবহৃত হয় লেডি জাস্টিসের মূর্তি। এতদিন নিরপেক্ষতার কাপড়ে বাঁধা ছিল আইনের দেবীর মূর্তিটির দু’চোখ। কিন্তু সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সুপারিশ মেনেই শীর্ষ আদালতের লাইব্রেরিতে বসেছে লেডি জাস্টিসের নতুন মূর্তি। যার এক হাতে ন্যায়ের দাঁড়িপাল্লাটি বজায় থাকলেও, অন্য হাতে তরোয়ালের বদলে উঠে এসেছে সংবিধান। সবচেয়ে বড় কথা, নতুন মূর্তিতে খুলে গিয়েছে আইনের দেবীর চোখের বাঁধন। চন্দ্রচূড় নিজেই এ কথায় জোর দিচ্ছেন যে, আইন অন্ধ নয়, সে সকলকে সমদৃষ্টিতে দেখে।
আইনের দেবীর এই বদল নিয়ে কথা চলছেই। কিন্তু এবার এই ইস্যুতেই বিস্ফোরক খোদ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের সংগঠন দ্য সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন। সিনিয়র আইনজীবী এবং রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বলের নেতৃত্বাধীন ওই আইনজীবী সংগঠনের এগজিকিউটিভ কমিটির দাবি, এই বদল নিয়ে কোনোরকম পরামর্শ করা তো দূর, তাঁদের বিষয়টি জানানোও হয়নি। এই প্রসঙ্গে তাঁরা যে প্রস্তাব পাশ করেছেন, তাতে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা বুঝতেই পারছি না ওই সমস্ত বদলের কারণই বা কী।’’ সুতরাং কোন যুক্তিতে লেডি জাস্টিসের মূর্তিতে বদল করা হল, তাও কোনও পরামর্শ ছাড়াই, প্রশ্ন বার অ্যাসোসিয়েশনের।
সত্যি বলতে, আইনের দেবীর কেবল চোখই খোলেনি। গ্রিক ভাস্কর্যকে রীতিমতো ভারতীয় ঢঙে বদলানো হয়েছে। যেভাবে ইন্ডিয়ান পেনাল কোড বদলে গিয়েছে ন্যায়সংহিতায়, সেভাবেই লেডি জাস্টিসের চেনা মূর্তি বদলে তাতে ভারতীয় ছোঁয়া আনার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন খোদ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। ন্যায়ের প্রতীকের বদলকে সমর্থন করেও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য যেমন একে ‘অনাবশ্যক হিন্দুত্বকরণ’ বলেই মনে করেছেন। এবার এই বদল নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনও।