আজানের সময় বন্ধ হোক মন্ত্রপাঠ। দুর্গাপুজোর আগে এমনই আর্জি বাংলাদেশ সরকারের। এই নিয়ে সে দেশের হিন্দুদের কাছে অনুরোধও জানানো হয়েছে। ঠিক কী দাবি বাংলাদেশ সরকারের? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। বছরঘুরে মর্তে ফিরবেন উমা। এ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটা করে আয়োজন হবে দুর্গাপুজোর। বাংলা মেতে উঠবে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে। একসঙ্গে উৎসবের আলোয় সাজবেন বাংলাদেশের হিন্দুরা। তবে এবছর তাঁদের মেনে চলতে বিশেষ কিছু নিয়ম। সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ইচ্ছা অন্তত তেমনটাই।
ছাত্র আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। তারপর কেটেছে একটা গোটা মাস। ওপার বাংলার প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। যার প্রধান হিসেবে রয়েছে নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুস। তবে বাংলাদেশের অশান্ত পরিবেশ এখনও শান্ত হয়নি। বিশেষ করে সে দেশের হিন্দুরা আক্রান্ত হচ্ছেন, এমন খবর প্রায়শই সামনে আসছে। ভারত সরকারের কাছে সেই নিয়ে পদক্ষেপের আর্জিও জানিয়েছেন অনেকেই। এই আবহে সামনে এল নতুন তথ্য। জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশে দুর্গাপুজো করার ক্ষেত্রেও বিশেষ নিয়ম জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে দেশের নতুন সরকার। তবে আদেশ বা ফতোয়া হিসেবে নয়, অনুরোধের সুরেই হিন্দুদের কাছে নতুন আর্জি পেশ করা হয়েছে। সরকারের দাবি, আজানের সময় পুজোর মন্ত্রপাঠ বন্ধ রাখতে হবে। কোনও মসজিদে নমাজ পাঠ চললে তার আশেপাশে পুজোর মন্ত্র যেন শোনা না যায়, এমনটাই চাইছে সে দেশের সরকার। শুধু মন্ত্রপাঠ হয়, কোনও গান বাজানো যাবে না দিনের ওই নির্দিষ্ট কিছু সময়ে। মাইক বন্ধ রাখতে হবে পুজো কর্তৃপক্ষকে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র সংক্রান্ত উপদেষ্টা মহম্মদ জাহাঙ্গির আলম চৌধুরি হিন্দুদের কাছে বিশেষ আর্জি রেখেছেন। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, আজান শুরুর ৫ মিনিট আগে বন্ধ করতে হবে প্যান্ডেলের মাইক। যে সময়ে নমাজ বা আজান হবে তখন দুর্গাপুজোর সমস্ত সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ রাখার কথাও বলা হয়েছে। গান বাজনা হোক বা ঢাক-মন্ত্রোচ্চারণের আওয়াজ, পুজোমণ্ডপ থেকে যেন শব্দ না বেরয়। তাঁদের এই অনুরোধ মেনে নিতে ইতিমধ্যেই সম্মতি দিয়েছে পুজো কমিটিগুলো, এমনটাও জানিয়েছেন জাহাঙ্গির।
বাংলাদেশ অশান্তির পর আশঙ্কা ছিল, এবার সে দেশে দুর্গাপুজো আদৌ হবে কি না। তবে পুজোয় কোনও সমস্যা হবে না সে কথা জানিয়ে দেয় বাংলাদে সরকার। জানা গিয়েছে, প্রতিটি প্যান্ডেলে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। শুরু মন্ডপ নয়, সে দেশে রয়েছে একাধিক দেবী মন্দির। সেখানেও ঘটা করে দুর্গাপুজোর ব্যবস্থা হয়। তবে এবার দুর্গাপুজোর সংখ্যা কমেছে। গতবছর ৩৩ হাজার ৪৩১টি মণ্ডপ ছিল গোটা বাংলাদেশে। এবার সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৬৬৬-এ। ঢাকায় মোট ১৫৭টি মণ্ডপ হবে। সর্বত্রই মানা হোক নতুন নিয়ম। এমনটাই দাবি বাংলাদেশের নতুন সরকারের।