৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে ছিল ভারত। ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে ভারতীয় সেনা ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি চেয়েছেন বিজেপি নেতা। ওপার বাংলার বর্তমান পরিস্থিতি সামলাতে ইন্দিরার পথেই হাঁটুন মোদি, দাবি তাঁর। আর কী বলেছেন বিজেপি নেতা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। হাসিনা সরকারের পতন। নতুন করে স্বাধীনতা খুঁজে পাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্ব। এই আবহে ভারত যেন ওপার বাংলার পাশে দাঁড়ায় সেই দাবি তুলেছেন বিজেপি নেতা। ৭১-এর মুক্তি যুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে, মোদিকে ইন্দিরার পথেই দেখতে চেয়েছেন তিনি।
সালটা ১৯৭১। বাংলাদেশের ফরিদপুরে ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে জনাকয়েক মুক্তিযোদ্ধা। সঙ্গে কয়েকজন ভারতীয় সেনা। হঠাৎই কাছে প্রচণ্ড শব্দ করে ফাটল পাক সেনাদের শেল। ভারতীয় সেনাদের আড়ালে থেকে কোনওমতে প্রাণে বাঁচলেন মুক্তিযোদ্ধারা। একটা নয়, বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের এমন হাজারও ঘটনা রয়েছে। ‘বন্ধু’ ভারতকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেনি বাংলাদেশও। বঙ্গবন্ধু মুজিবুরের কথাতেও সে প্রসঙ্গ ফিরেছে বারবার। এরপর কেটেছে পাঁচ দশক। স্বাধীন বাংলাদেশ সাক্ষী থেকেছে আরও অনেক উত্থান পতনের। কিন্তু সরকার পতনের মতো ভয়াবহ ঘটনা এর মধ্যে হয়নি। ২০২৪ সালে সেই অভিজ্ঞতাও হল ওপার বাংলার। যদিও সে দেশের মানুষ হাসিনা সরকারের পতনকে, নতুন করে স্বাধীনতা অর্জনই ভাবছেন। গণভবন দখল করে চলছে বিজয়োল্লাস। একইসঙ্গে পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকেই এগোচ্ছে। সেনাশাসনেও বাংলাদেশে নৈরাজ্য কমছে না এতটুকু। দিকে দিকে হাহাকার, কন্নার শব্দ, ছাপিয়ে যাচ্ছে সব কোলাহল। এই পরিস্থিতি সামলাতে পারেন কেবল মোদি, এমনটাই দাবি বিজেপি নেতা জগন্নাথ সরকারের। মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে মোদিকেও ইন্দিরা গান্ধীর মতোই পদক্ষেপ করতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
পদত্যাগ করে আপাতত ভারতে রয়েছেন শেখ হাসিনা। সরকারি ভাবে সে খবর জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেইসঙ্গে তিনি আরও জানান ওপার বাংলায় আটকে রয়েছেন প্রায় ১৯ হাজার ভারতীয়। দেশের তরফে এঁদের ফেরানোর চেষ্টা চলছে। তবে বাংলাদেশে আটকে থাকা হিন্দুদের নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগে রয়েছেন এ দেশের অনেকেই। বিশেষ করে গেরুয়া শিবিরের নেতারা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এ প্রসঙ্গে বৈঠক সেরেছেন অমিত শাহ-জেপি নাড্ডার সঙ্গে। তবে বিজেপি নেতা জগন্নাথ সরকার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছেই দরবার করেছেন। বাংলাদেশের হিন্দুদের বাঁচাতে বিশেষ ব্যবস্থা করুন মোদি, তাঁর একমাত্র দাবি এটাই। ৭১ মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ উল্লেখের পাশাপাশি, ধর্ম এবং যুদ্ধের কথাও বলেছেন তিনি। বিজেপি নেতার দাবি, যে কোনও মূল্যেই ধর্ম রক্ষা করতে হবে। তার জন্য যুদ্ধের প্রয়োজন হলে, সেটাই করা হোক। সেইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে কে সরকার গড়ল সে ব্যাপারে তাঁর মাথাব্যথা নেই। হিন্দুরা শান্তিতে থাকুক এটাই কাম্য, দাবি বিজেপি নেতার।