শোনাতে হবে বলিউডের গান। এমনটাই আবদার বাংলদেশী শ্রোতাদের! কিন্তু সেই গান গাইবে কে? ডাক পড়ছে পাকিস্তানী গায়কদের। ওপার বাংলায় ভারতীয় হিন্দি সিনেমার গান শোনাতে হাজির হচ্ছেন রাহত ফতে আলি খান, আতিফ আসলামের মতো শিল্পীরা! আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বাংলদেশের অনুষ্ঠানে গাইতে হবে ভারতীয় গান! এমন ইচ্ছা শিল্পীর নয়, শ্রোতাদের। সোশাল মিডিয়ায় ভারত বিদ্বেষ উগরে দিলেও, বলিউড গানেই তাদের আগ্রহ। সম্প্রতি ওপার বাংলায় পাকিস্তানী গায়ক রাহত হতে আলি খানের অনুষ্ঠানেই ধরা পড়ল এমন ছবি।
ভারতে বছর খানেক আগেই নিষিদ্ধ হয়েছেন বেশ কিছু পাকিস্তানী শিল্পী। কূটনৈতিক সম্পর্কের কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। তালিকায় আতিফ আসলাম, রাহত ফতে আলির মতো শিল্পীরা ছিলেন। শুধু ভারতে অনুষ্ঠান করা নয়, বলিউডে গান গাওয়ার ক্ষেত্রেও জারি হয় নিষেধাজ্ঞা। এই নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি, নিয়মের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রায়শই তর্ক জমে। তবে নিষেধাজ্ঞার আগে পাকিস্তানের এইসব শিল্পীরা চুটিয়ে অনুষ্ঠান করেছেন ভারতে। বলিউড গানের ক্ষেত্রেও তাঁদের কম অবদান নেই। আতিফের কন্ঠে রীতিমতো জনপ্রিয়তা পেয়েছে একাধিক বলিউড গান। ভারতে নিষিদ্ধ হলেও বাংলাদেশে অনুষ্ঠান করতে সমস্যা নেই এঁদের। তাই ওপার বাংলায় শুরু হয়েছে পাক শিল্পীদের কনসার্ট। কিছুদিন আগেই শো করেছেন আতিফ, এবার বাংলাদেশকে গান শোনালেন রাহত ফতে আলিও। তবে এই অনুষ্ঠান নিয়ে বেজায় হইচই শুরু হয়েছে নেটদুনিয়ায়। কারণ পাকিস্তানের গায়কের কাছে মূলত ভারতীয় হিন্দি গান শোনার আবদার জানিয়েছে বাংলাদেশের শ্রোতারা। আর তাতেই চটেছে নেটিজেনরা।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, একজন শিল্পীর কাছে গানের আবদার জানানোয় এত আপত্তি কেন?
কারণটা অবশ্যই ভারত-বাংলাদেশের বর্তমান সম্পর্ক। হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই অশান্ত বাংলাদেশ। অশান্তির আবহে তৈরি হয়েছে একের পর এক ইস্যু, বেড়েছে সমস্যা। তবে হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ সেই সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে। অতিষ্ট হয়ে স্বদেশ ছাড়ছেন সে দেশের হিন্দুরা। ভারতে পালিয়ে এসে কোনওক্রমে প্রাণে বাঁচতে চাইছেন। এই নিয়ে বাংলাদেশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারত। দিল্লির তরফে সাফ জানানো হয়েছে, অবিলম্বে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। তাতে লাভের লাভ তেমন হয়নি বললেই চলে। বরং ইউনুস সরকারের একের পর এক পদক্ষেপ চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে ভারত বিদ্বেষের নমুনা। একইসঙ্গে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে ব্যস্ত সে দেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিছুদিন আগেই পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বার্তালাপ সারতে দেখা গিয়েছে ইউনুস খানকে। সহজ করা হয়েছে পাকিস্তান-বাংলাদেশ যাওয়ার পথ। এবার পাক শিল্পীদেরও সাদরে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে বাংলাদেশ। তাঁদের অনুষ্ঠানে উপচে পড়ছে ভিড়। এমন সব শিল্পীদের আনা হচ্ছে যারা ভারতে নিষিদ্ধ। তবে তাঁরা গাইছেন ভারতীয় সিনেয়ার গানই। এই নিয়েই নেটদুনিয়ার প্রশ্ন, যে ভারতকে নিয়ে এত সমস্যা, কেন সেখানকার গান শুনতে চাওয়া হচ্ছে? পালটা জবাব দিয়েছে বাংলাদেশের জনতাও। তবে দু পক্ষই নিজেদের দাবিতে অনড়। সবমিলিয়ে বাংলাদেশে পাক শিল্পীদের অনুষ্ঠান করার বিষয়টা বেজায় শোরগোল ফেলেছে নেটপাড়ায়।