অযোধ্যার পর চাই কাশী ও মথুরাও। এই দুই হিন্দু তীর্থক্ষেত্রে থাকা জ্ঞানবাপী ও শাহি ইদগাহ মসজিদ ছেড়ে দিক মুসলিমরা, তাহলেই হিন্দুরাও আর অন্য কোনও মসজিদের দখল নিয়ে মাথা ঘামাবে না। সাফ জানিয়ে দিলেন রাম মন্দির ট্রাস্ট কর্তা।
অযোধ্যায় রাম মন্দির গড়ে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা সম্পূর্ণ। এই ঘটনাকে নিজেদের হারানো জমি পুনরুদ্ধার করা বলেই দাবি করছেন হিন্দুত্ববাদীরা। এবার সেই একই সুরে কাশী ও মথুরাতেও মন্দির ফিরে পাওয়ার দাবিতে সুর চড়ালেন রাম মন্দির ট্রাস্ট কর্তা। ট্রাস্টের কোশাধ্যক্ষ গোবিন্দ দেব গিরি মহারাজের সাফ বক্তব্য, মুসলিমদের হাতে এককালে ধ্বংস হয়েছিল দেশের অন্তত সাড়ে তিন হাজার মন্দির। তবে সেই পুরোনো কথা ধরে থাকলে সামনে এগোনো সম্ভব নয় দেশের পক্ষে। তাই এই সময়ে দাঁড়িয়ে সেই ধ্বংসের কথা তাঁরা ভুলে যেতে রাজি, তবে তার জন্য একটি শর্ত রয়েছে। অযোধ্যার পর কাশী ও মথুরাতেও ফের গড়ে তুলতে হবে মন্দির, আর তার জন্য বিনা বাধায় মসজিদের দখল ছেড়ে দিতে হবে মুসলিম পক্ষকে। অর্থাৎ মুসলিম পক্ষকে কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদ এবং মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদ ছেড়ে দেওয়ার কথাই বললেন রাম মন্দিরের ট্রাস্ট কর্তা। তাঁর বক্তব্য, মুসলিম আক্রমণের চিহ্ন মুছে ফেলার জন্যই এই উদ্যোগ, সুতরাং মুসলিম পক্ষেরও এ কথা মেনে নেওয়াই উচিত। শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজতে চেয়েই এই দাবি করেছেন তিনি, জানালেন গোবিন্দ দেব গিরি মহারাজ।
-: আরও শুনুন :-
রাম মন্দিরের দরুন বাড়বে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা, মুসলিম নেতার গলাতেই পালটা সুর
আসলে শাসক বদলে গেলে তার সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় দেশের ছবিটাও। এ দেশকে হিন্দু রাজারা শাসন করেছেন দীর্ঘদিন, পরবর্তী কালে তাঁদের কেউ কেউ বৌদ্ধ বা জৈন ধর্মও গ্রহণ করেছেন। এরপর মুসলিম, আর তারপর খ্রিস্টান শাসকের হাতে গিয়েছে দেশ। ভিনধর্মের শাসকেরা নিজেদের ধর্মমত প্রচারের জন্য অন্যান্য ধর্মের কণ্ঠরোধের চেষ্টাও করেছেন নানাভাবেই। সেই কারণেই মুসলিম শাসনকালে দেশে বেশ কিছু মন্দির-মঠ ধ্বংস হয়েছে বলেই জানান ঐতিহাসিকেরা। তা ছাড়া পর্যাপ্ত ধনসম্পদ থাকায়, বাইরের মুসলিম হামলার কারণেও অনেকসময়েই বিপর্যস্ত হয়েছে হিন্দু ধর্মস্থানগুলি। আর সেই ঘটনা নিয়েই বারে বারে সুর চড়ায় হিন্দুত্ববাদী শিবির। রাম মন্দিরের মতোই বারাণসীর জ্ঞানবাপী ও মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদ নিয়েও টানাপোড়েন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এমনিতে কাশী ও মথুরাকে পবিত্র তীর্থস্থান বলেই মানেন হিন্দুরা। তাই হিন্দু পক্ষের দাবি, ওই দুই মসজিদের জায়গাতেও আগে মন্দিরই ছিল। যা ভেঙে মসজিদের গোড়াপত্তন করেন মুসলিম শাসকেরা। তাঁদের দাবিতেই জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সমীক্ষায় হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গিয়েছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে এএসআই। আর তারপরই মন্দির ফিরে পাওয়ার দাবিতে আরও সরব হিন্দু পক্ষ। আদালতের নির্দেশে মামলা নিষ্পত্তির আগেই জ্ঞানবাপীর সিল করা অংশে শুরু হয়ে গিয়েছে পূজার্চনাও। ইতিমধ্যেই এই রায়কে দাসত্ব মুক্তির পথে আর এক ধাপ এগোনো বলে ঘোষণা করেছেন রাম মন্দিরের প্রধান পুরোহিত। এবার ট্রাস্ট কর্তার বক্তব্যে মুসলিম পক্ষের উপর কার্যত আরও চাপ বাড়াল হিন্দুত্ববাদী শিবির।