বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হবে কংগ্রেস। ভোটের আগেই এমনটা ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন। সম্প্রতি সেই জ্যোতিষের দাবি, ২০২৪-এ প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন এক মহিলা। ইতিমধ্যেই তাঁর এই মন্তব্যে শোরগোল শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, ঠিক কোন মহিলা নেত্রীকে ইঙ্গিত করছেন ওই জ্যোতিষী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
আর মাত্র কয়েক মাস। নতুন বছরেই দেশ জুড়ে লোকসভা নির্বাচনের বাদ্যি বেজে উঠবে। কেন্দ্রের মসনদে একইভাবে টিকে থাকতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছে বিজপি। উলটোদিকে বিরোধীরাও ‘জোট’ বেঁধে প্রস্তুত। লক্ষ একটাই, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ‘সিংহাসনচ্যুত’ করা। আর সেই আশাতেই কার্যত সিলমোহর দিলেন কর্ণাটকের এক জ্যোতিষী। তাঁর দাবি, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন কোনও মহিলা।
আরও শুনুন: অপরাধী দেখলেই ‘ঠোক দো’, যোগীরাজ্যের এনকাউন্টার নীতিকে কী চোখে দেখছে সুপ্রিম কোর্ট?
ইন্দিরা গান্ধী ভারতের একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী। তবে এবার হয়তো সেই ধারণা বদলে যাবে। কর্ণাটকের এক জ্যোতিষের দাবি অন্তত তেমনই। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, লোকসভা নির্বাচন নিয়ে বিস্ফোরক কিছু দাবি তুলেছেন কর্ণাটকের তিপ্তুর অঞ্চলের জ্যোতিষী ড. যশবন্ত। তিনি স্থানীয় নোনাভিনাকেরে শনিমন্দিরের একজন পূজারি। তবে জ্যোতিষ শাস্ত্রে তাঁর অগাধ জ্ঞান। সংবাদমাধ্যমের দাবি, বিধানসভা নির্বাচনে কর্ণাটকে কংগ্রেসের জয়ের কথাও আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন এই জ্যোতিষী। শুধু এলাকার মানুষ নয়, সে রাজ্যের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরাও যশবন্তের কাছে ভবিষ্যৎ গণনার জন্য আসেন। তেমনই কেউ ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন নিয়ে তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন। সে উত্তর দিতে গিয়েই বিস্ফোরক দাবি করে বসেন যশবন্ত। তাঁর কথায়, ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন কোনও মহিলা। তাঁর মতে, কোনও দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে। ফলত কোনও নির্দিষ্ট দলের প্রতিনিধির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ নেই। বিভিন্ন দল মিলিয়ে যে সরকার তৈরি হবে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হবেন কোনও মহিলা। যদিও এক্ষেত্রে একটি শর্তের কথাও উল্লেখ করেছেন যশবন্ত। তাঁর কথায়, ভাগ্য নির্ধারিত হয় নক্ষত্রের অবস্থান অনুযায়ী। তাই যে কোনও সময়ে তা বদলে যেতেই পারে। এই মুহুর্তে গণনায় তিনি যা জানতে পেরেছেন তা বলেছেন, তবে আগামী দিনে তা বদলে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। বিশেষত নির্বাচন কবে হচ্ছে তার উপর নির্ভর করবে মহিলা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, যদি মহাশিবরাত্রির আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে কেন্দ্রের ক্ষমতায় আবারও ফিরবে বিজেপি। এবং প্রধানমন্ত্রী হবেন সেই মোদিই। তবে শিবরাত্রির পর নির্বাচন হলে, মোদির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আশা কমবে। সেক্ষেত্রে তিনি যেমনটা ভবিষ্যৎবাণী করেছেন, অর্থাৎ কোনও মহিলার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
আরও শুনুন: ‘পাপ্পু’ ব্যঙ্গ উধাও! কেন রাহুল ক্রমে মাথাব্যথার কারণ বিজেপির কাছে?
প্রথমে তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। নেটিজেনদের মধ্যে যা তুমুল উত্তেজনার ঢল নামায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলেও এই নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়। তারপর সর্বভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমেও এই খবর প্রকাশিত হয়। আসলে, বিরোধী দলগুলি ইতিমধ্যেই এক জোট হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে। সেক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট দলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়াকেই, স্বাভাবিক বলে ধরে নিচ্ছেন কেউ কেউ। আর এমনটা হলে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনও সম্ভাবনা থাকবে না মোদির। তবে সেই পদে যে কোনও মহিলা বসতে পারেন, এমনটাও অনেকেই ভাবতে পারেননি। এদিকে বিরোধী জোটে মহিলা নেত্রীর সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। তাই ইতিমধ্যেই কোন নেত্রী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। এমনকি কর্ণাটকের ওই জ্যোতিষের কানেও এই প্রশ্ন যায়। তবে এবার আর সরাসরি কোনও নাম বলেননি তিনি। আগের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনেই তাঁর দাবি, সব কিছু নির্ভর করছে নক্ষত্রের অবস্থানের উপর। আবারও তিনি সাফ জানিয়ে দেন, শিবরাত্রির আগে নির্বাচন হলে এই প্রশ্নের কোনও মানেই হয় না। কারণ সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী হবেন মোদিই। তবে শিবরাত্রির পরে নির্বাচন হলে, তাঁকে আরও একবার গণনা করতে হবে। এবং তারপরই কোন নেত্রীর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি, তা জানাতে পারবেন বলেই দাবি ওই জ্যোতিষের। তবে সে অপেক্ষায় বসে নেই বিরোধী দলের একাংশ। অনেকেই ওই জ্যোতিষের গণ্না ধ্রুব সত্য ভেবে নিয়ে, উদযাপন আরম্ভ করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ওই জ্যোতিষের ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল। তবে সবকিছুর উত্তর দেবে সময়ই, ওয়াকিবহাল মহলের দাবি অন্তত তেমনই।