কোনও বাণ ছুড়লে আগুন বেরোয় তো কোনও বাণ আবার বন্যা ডেকে আনে- এমন কতশত অস্ত্রের কথাই তো পুরাণ মহাকাব্যে পাওয়া যায়। আর সেখান থেকেই এবার যুদ্ধের নয়া কৌশল শিখে নিতে চাইছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
গোটা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী বলে স্বীকৃতি পেয়েছে ভারতীয় সেনা। কিন্তু শুধু সংখ্যার নিরিখেই নয়, কৌশলগত দিক দিয়েও এবার সেরা হওয়ার লক্ষ্য তাদের। আর সেই কারণেই আধুনিক যুদ্ধবিদেরা নন, বরং ভারতের প্রাচীন পুরাণ-দর্শনের দ্বারস্থ হচ্ছে দেশের সেনাবাহিনী। সম্প্রতি এমনটাই জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তরফ থেকে। আপাতত কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র, কমণ্ডকের নীতিসারা এবং তামিল সাধক কবি থিরুভাল্লুভারের লেখা থিরুক্কুরাল বা কুরাল-কে বেছে নেওয়া হয়েছে এই কাজের জন্য। এই প্রাচীন পুথিগুলি থেকেই যুদ্ধের কলাকৌশল, রীতিনীতি, কূটনীতি শেখানো হবে সেনাবাহিনীকে। পাশাপাশি বর্তমান সময়ে সেই কৌশলগুলো কতখানি কার্যকরী, তাও ব্যাখ্যা করা হবে, জানা গিয়েছে এমনটাই।
আরও শুনুন: ওয়াহিদার সম্মানেও জুড়ল মহিলা সংরক্ষণ বিল প্রসঙ্গ, এখানেও কি ভোটের বার্তা শাসক দলের?
আসলে শিক্ষা, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সব ক্ষেত্রেই ভারতীয়করণের প্রয়াস নিয়েছে কেন্দ্র। আধুনিক সময়ে যা কিছু উন্নতি, তার প্রায় সবই প্রাচীন ভারতে ছিল- এমন কথা মাঝে মাঝেই শোনা যায় শাসক দলের মুখে। জানা যাচ্ছে, সেই ভাবনা থেকেই ‘উদ্ভব’ নামে একটি প্রকল্প নিয়েছে সেনাবাহিনী। এই প্রকল্পের উদ্বোধন করতে গিয়ে সেনার মুখপাত্র সুধীর চামোলি বলেছেন, পুরনোর সঙ্গে নতুনের সমন্বয় ঘটানোই এই প্রকল্পের লক্ষ্য। হাজার হাজার বছর ধরে ভারতবর্ষে যে প্রশাসনিক পদ্ধতি কাজ করে গিয়েছে, তার কৌশল এবং বিবর্তনকেও খুঁজে দেখবে প্রকল্পটি। যার দরুন বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে প্রাচীন কালের জ্ঞানকে কাজে লাগাতে পারবেন সেনা আধিকারিকরা।
আরও শুনুন: দেশের নামবদল বিতর্কের ছাপ রাষ্ট্রসংঘেও! ‘ইন্ডিয়া’ নয়, ‘ভারতের’ নাম নিলেন জয়শঙ্কর
২০২১ সালে গুজরাটে কম্বাইন্ড কমান্ডারস’ কনফারেন্স থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই বলেছিলেন এই ভারতীয়করণের কথা। তিনি বলেছিলেন, শিক্ষা, বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে যেসব ঔপনিবেশিক অভ্যাস দীর্ঘদিন ধরে নিয়মমাফিক চলে আসছে, তার থেকে মুক্তি পাওয়া উচিত। বরং দেশের সুরক্ষা ক্ষেত্রে অস্ত্র এবং তার কৌশল প্রয়োগের ব্যাপারে প্রাচীন রীতিনীতির দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। ২০২২ সালে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণেও একই কথা বলেন তিনি। আর সেই পথেই এবার হাঁটল দেশের সেনাবাহিনী।