ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বৃহন্নলাদের বাহিনী করে তোলা হচ্ছে। অগ্নিবীর নিয়োগের প্রসঙ্গে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য আরজেডি নেতা সুরেন্দ্র যাদবের। আর এই মন্তব্যের জেরে অগ্নিবীর নিয়ে ফের উসকে উঠল বিতর্ক। শুনে নেওয়া যাক।
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে অগ্নিবীরদের নিয়োগ নিয়ে এবার তোপ দাগলেন বিহারের সমবায় মন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা সুরেন্দ্র যাদব। তাঁর দাবি, অগ্নিবীর নিয়োগের সিদ্ধান্ত আসলে দেশের সেনাবাহিনীর শক্তিক্ষয় করছে। একে বৃহন্নলাদের বাহিনী বলেও তোপ দেগেছেন ওই নেতা। আর তাঁর এহেন মন্তব্যের জেরেই এবার উসকে উঠেছে বিতর্ক।
আরও শুনুন: সংস্কৃত থেকেই এসেছে ‘আল্লাহ্’ শব্দটি, দাবি বেনারসের শঙ্করাচার্যের
গত জুন মাসে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের তরুণ-তরুণীদের ৪ বছরের জন্য সেনায় নিয়োগের জন্য ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প ঘোষণা করেছিল। পরে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ২৩ বছর করা হয়। চুক্তির ভিত্তিতে সেনা নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক হলেও ইতিমধ্যেই ‘অগ্নিবীর’ নিয়োগ শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এই ইস্যুতেই এবার তোপ দেগেছেন ওই নেতা। তাঁর দাবি, এখন থেকে সাড়ে আট বছর পরে সেনাবাহিনীর জওয়ানরা অবসর নেবেন, কিন্তু অগ্নিবীরদের তখনও ট্রেনিং পর্যন্ত শেষ হবে না। আর সেই কারণেই ঠিক সাড়ে আট বছর পরে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বৃহন্নলাদের বাহিনী বলে মনে করা হবে, এমনটাই মনে করেন ওই নেতা। যেখানে দেশের সেনাবাহিনী যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল, সেখানে এই সিদ্ধান্ত নেওয়াকে আত্মঘাতী বলেই মনে করছেন তিনি। কিন্তু সে কথা বলতে গিয়ে একইসঙ্গে এই অগ্নিবীরদের পাশাপাশি বৃহন্নলা সম্প্রদায়ের মানুষদেরও অপমান করে বসেছেন ওই নেতা।
আরও শুনুন: অফিসের চাপে হাঁপিয়ে উঠেছেন? বিয়ে করলেই মুক্তি, বেতন-সহ এক মাসের ছুটি দেবে এই দেশ
আসলে সমাজে পৌরুষের একটা নির্দিষ্ট ছক রয়েছে। যেসব কাজে অনেক শক্তি এবং সাহসের প্রয়োজন, সেইসব কাজ যেন কেবলমাত্র পুরুষেরই, এমনই একটা ধারণা প্রচলিত। আবার কোনও পুরুষ যদি সেই ছকের বাইরে বেরোতে চান, তাহলে তাঁকে নপুংসক কিংবা বৃহন্নলা বলে উপহাস করা হয়। অথচ বিজ্ঞান স্পষ্টই জানায় যে, কে পুরুষ হবে আর কে নারী, কিংবা কে বৃহন্নলা হবে, এর সবটাই আসলে প্রাকৃতিক ভাবেই নির্ধারিত। জিনগত কারণেই কেউ বৃহন্নলা হয়ে জন্মাতে পারেন। এক্ষেত্রে যেমন পুরুষসুলভ কাজ না করার কোনও কারণ নেই, আবার কেবল এই শারীরিক গঠনের কারণে তাঁদের অপমান করার অধিকারও কারও নেই। খোদ মহাভারতেই অজ্ঞাতবাসের সময় বৃহন্নলার বেশ ধারণ করতে দেখা যায় অর্জুনকে। পাশাপাশি এ কথাও সত্যি যে, কোনও ব্যক্তি শারীরিকভাবে পুরুষ হলেও সমাজের বেঁধে দেওয়া পৌরুষের ছককে তিনি অস্বীকার করতেই পারেন। সেক্ষেত্রেও তাঁকে অপমান করার কোনও অধিকার জন্মায় না কারোরই। কিন্তু সমাজের ওই প্রচলিত ধারণারই ছাপ পাওয়া গিয়েছে এই নেতার কথায়। বৃহন্নলাদের সঙ্গে শক্তিহীনতার সমীকরণ টেনে পৌরুষের ওই গতে বাঁধা সংস্কারকেই চিনিয়ে দিয়েছেন ওই ব্যক্তি।