আপনারা ইচ্ছে হলে বিকিনি পরুন। কিন্তু আমাদের মেয়েদের হিজাব খুলতে বলছেন কেন?- হিজাব বিতর্কে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে হিজাব পরা কোনও মহিলাকে দেখতে চান বলেও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি। ঠিক কী বলেছেন ওয়েইসি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
হিজাব বিতর্কের জেরে সরগরম দেশ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করা হবে কি না সে বিষয়ে এখনও কোনও স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি খোদ সুপ্রিম কোর্টও। এই পরিস্থিতিতে এবার মুখ খুললেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। মুসলিমরা মেয়েদের জোর করে হিজাব পরতে বাধ্য করে না বলেই দাবি তাঁর। পাশাপাশি হিজাব দিয়ে মাথা ঢাকার অর্থ মস্তিষ্ককে চেপে রাখা নয়, এমনটাই মনে করেন ওয়েইসি। দেশের অগ্রগতিতে মুসলিম মেয়েদের অবদানও কম নয়, এ কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি জানালেন, দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে একদিন হিজাব পরা কোনও মহিলাকেই দেখতে চান তিনি। হিজাব ইস্যুতে বিভিন্ন মহলের চাপানউতোরের মধ্যেই ফের নতুন করে বিতর্ক উসকে দিলেন এআইএমআইএম প্রধান।
আরও শুনুন: ধর্ম সংসদে হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নিতে বলার জের, ঘৃণাভাষণে দাঁড়ি টানতে পদক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টের
চলতি বছরের গোড়াতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করেছে কর্ণাটক সরকার। বিতর্কের জল গড়িয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। কিন্তু রায় নিয়ে মতান্তর দেখা দেয় শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির মধ্যে। হিজাব পরার ব্যক্তিগত অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে চেয়েছেন বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া। আর অনেকটা সেই সুরেই ওয়েইসি এবার প্রতিষ্ঠা করতে চাইলেন, হিজাব পরা আসলে মুসলিম মেয়েদের ব্যক্তিগত পছন্দ, এর জন্য তাদের কোনোভাবেই বাধ্য করা হয় না। তাঁর বক্তব্য, একজন হিন্দু, শিখ অথবা খ্রিস্টান পড়ুয়াকে তাদের ধর্মীয় চিহ্ন-সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়, কিন্তু একজন মুসলিম পড়ুয়াকে নয়। কেন তাদের হিজাব খুলতে বলা হবে, এই প্রশ্নেই সরব হয়েছেন ওয়েইসি। তাঁর বক্তব্য, “তাহলে মেয়েরা কী পরবে? বিকিনি? হ্যাঁ, তা পরার অধিকারও রয়েছে আপনার। কিন্তু আমাদের মেয়েদের হিজাব খুলতে বলছেন কেন?”
আরও শুনুন: কোভিডের পর নয়া দুর্যোগের ভবিষ্যদ্বাণী স্বঘোষিত ‘ত্রিকালজ্ঞের’, গুজরাট সফরে গিয়ে সাক্ষাৎ করলেন মোদি
হায়দরাবাদের মেয়েদের উদাহরণ টেনে ওয়েইসি বলেছেন, বিপজ্জনক ভাবে গাড়ি চালানোর ব্যাপারে তাঁদের জুড়ি মেলা ভার। সুতরাং এহেন মেয়েদের উপরে কোনোরকম নিয়মকানুনই চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় বলে তাঁর মত। তা ছাড়া হিজাব পরেও মুসলিম মেয়েরা দেশের উন্নতিতে যথেষ্ট অবদান রাখছেন বলেই মনে করেন ওয়েইসি। এমনকি দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে হিজাব পরা কোনও মহিলাকে দেখতে চান বলেও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি।
যদিও ওয়েইসির বক্তব্যের পালটা দিয়েছেন বিজেপির নেতা সিটি রবি। ঈশ্বরের নাম নিয়ে তালিবান কিংবা লাদেনের কার্যকলাপকে ওয়েইসি সমর্থন করেন কি না, এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন ওই নেতা। এআইএমআইএম প্রধান আসলে চরমপন্থার সপক্ষে বলে মনে করেন তিনি। কিন্তু দেশে সেই জাতীয় কার্যকলাপ সহ্য করা হবে না বলেই গেরুয়া শিবিরের তরফে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই বিজেপি নেতা।