‘রাস্তে সে যা রাহা থা, ভেলপুরি খা রাহা থা’ গানটা নিশ্চয়ই শুনেছেন। ভেলপুরির নাম শুনলেই জিভে আসে জল আট থেকে আশি সকলেরই। মুখরোচক খাবারের মধ্যে একেবারে প্রথম সারির সদস্য এই ভেলপুরি। এবার দেশের গণ্ডি টপকে বিদেশের মাটিতেও ছড়িয়ে পড়ল এর জাদু। মাস্টারশেফ-এর মতো বিশ্বখ্যাত রান্নার রিয়্যালিটি শো-এর বিচারক মহল এবার মুগ্ধ হলেন ভেলপুরির স্বাদে। কীভাবে তাঁদের পাতে পৌঁছল এই খাবার? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার মঞ্চ বিশ্বের তাবড় তাবড় শেফের কাছে এক স্বপ্নের জায়গা। আবার অনেকেই মনে করেন ভারতের মতো এত খাদ্য বৈচিত্র্য বোধহয় পৃথিবীর আর কোনও দেশেই দেখা যায় না। এবার সেই মাস্টারশেফের মঞ্চেই পরিবেশন করা হল ভারতের জনপ্রিয় খাবার ভেলপুরি। আর তা মুখে দিয়েই মুগ্ধ হলেন বিচারক মহলের প্রত্যেকেই। ভারতের গলিতে গলিতে ঠেলা গাড়ি করে বিক্রি হওয়া ভেলপুরি কিনা মুগ্ধ করেছে মাস্টারশেফের বিচারকদের! এমন ঘটনায় বেশ অবাক হয়েছেন নেটিজেনরাও। টুইটারে এই নিয়ে বেশ শোরগোলও পড়েছে ইতিমধ্যেই।
আরও শুনুন: প্রকৃতির ডাক বড় বালাই! সাড়া দিতে ম্যাচ চলাকালীনই মাঠ ছেড়েছেন বিখ্যাত ফুটবলাররাও
সারাহ টোড নামে জনৈক প্রতিযোগী মাস্টারশেফ অনুষ্ঠানের এক পর্বে বানিয়েছিলেন ভেলপুরি। প্রতিযোগিতার নিয়মানুসারে প্রতিদিন তাঁদের দেওয়া হয় একটি করে চ্যালেঞ্জ। সেদিনের চ্যালেঞ্জ ছিল, দ্রুত একটি মুখরোচক খাবারের পদ তৈরি করা। কম সময়ে যিনি দারুণ মুখরোচক কিছু তৈরি করবেন, তিনিই করবেন বাজিমাত। আর এই চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়েই মাত্র ১০ মিনিটে সারা বানিয়ে ফেলেন এই ভারতীয় খাবারটি। নিতান্ত সাধারণ কিছু উপকরণ আর সামান্য সময় খরচ করেই বানিয়ে ফেলা যায় ভেলপুরি – একথা তো সবাই জানে। কিন্তু স্বাদের দিক থেকেও যে তা অতুলনীয়, সে পরিচয় পেল মাস্টারশেফের বিচারকরাও। ভেলপুরি মুখে দিয়েই তাঁরা রীতিমতো অবাক হয়ে যান। সারার উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, কী করে তিনি মাত্র ১০ মিনিটে এত রকম ‘ফ্লেভার’ এক জায়গায় এনেছেন? প্রশংসা করে এও বলেন যে এত রকম মশলার পাশাপাশি কাঁচা পিঁয়াজের ব্যবহার আরও অনন্য করে তুলেছে এই খাবারটিকে।
আরও শুনুন: অন্তর্বাসের নেই লিঙ্গভেদ! প্যান্টি পরে এবার প্রথা ভাঙলেন পুরুষ মডেল
আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভেলপুরির বাজিমাতের খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে নেটদুনিয়ায়। এরপরই এক ব্যক্তি টুইট করে লিখেছেন, মাস্টারশেফের মতো মঞ্চে সমাদৃত খাবার আমরা পেয়ে যাই ঘরে বসেই, তাও মাত্র ২০ টাকার বিনিময়ে। আবার অন্য একজন লিখেছেন, আমাদের এখানের ভেলপুরি বিক্রেতারা মাত্র এক মিনিটেই বানিয়ে ফেলেন এই অসাধারণ খাবারটি। ‘ভেল’ শব্দের অর্থ এমন এক খাবার যা সমুদ্রের ধারে বসে খেতে হয়। সেই থেকেই শোনা যায় এই ভেলপুরির জন্ম গুজরাটে। যদিও ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে নানা প্রক্রিয়ায় বানানো হয় ভেলপুরি। মূলত মুড়ির সঙ্গে বিভিন্ন রকম মশলা, আলু, টমেটো, লঙ্কা আর ছোট ছোট পাপড়ি মিশিয়ে বানানো হয় এই খাবার। অনেকেই এর মধ্যে টক-মিষ্টি চাটনি বা টক দইও দিয়ে থাকেন। সব কিছু একসঙ্গে দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিলেই, ভেলপুরি তৈরি। প্রসঙ্গত কিছুদিন আগে মাস্টারশেফের মঞ্চে পান্তা ভাত-সহ বেশ কিছু ভারতীয় খাবার পরিবেশন করা নিয়ে অবাক হয়েছিলেন নেটিজেনরা। এবার সেই তালিকায় যোগ হল সাধের ভেলপুরি-ও।