বিজেপির হাতেই প্রভূত উন্নতি হয়েছে দেশের। তাই লোকসভায় বুঝেশুনে ভোট দেওয়ার পরামর্শ দিলেন মুসলিম ধর্মগুরু। নির্বাচনী আবহে মোদির পাশে দাঁড়ালেন খোদ আজমের শরিফের দেওয়ান, সৈয়দ জয়নুল আবেদিন আলি খান। কী বললেন তিনি? শুনে নেওয়া যাক।
বিজেপির হাতে আসলে দেশের গণতন্ত্রই বিপন্ন, বারে বারেই এমন অভিযোগ উঠছে দেশের রাজনীতিতে। গণতন্ত্র, অর্থাৎ গণের ভিন্ন ভিন্ন মতের, মতের বৈচিত্র্যের অধিকার। ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস- সব ক্ষেত্রেই অন্যকে বিব্রত না করে ব্যক্তিগত পরিসরে নিজের মতো আচরণের অধিকার। যে অধিকার দেয় এ দেশের সংবিধানই। কিন্তু বিজেপির নানা কাজে সেই ভিন্নতাকে এক ছাঁচে ঢেলে দেশকে একমাত্রিক ভাবেই দেখার প্রবণতা ফুটে ওঠে। আর সেই প্রেক্ষিতেই বিরোধীদের অভিযোগ, দেশের সংবিধানকেই আসলে বদলে দিতে চাইছে বিজেপি সরকার। কিন্তু বিরোধীদের সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে এবার মোদি শিবিরের পাশে দাঁড়ালেন খোদ আজমের শরিফের দেওয়ান, সৈয়দ জয়নুল আবেদিন আলি খান। জোর গলায় ঘোষণা করলেন, আদৌ সংবিধান বদলে দেওয়ার মতো কোনও কাজ করছে না বিজেপি। বরং ভুয়ো অভিযোগ তুলে দেশবাসীকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। মোদি সরকারের আমলেই দেশের উন্নতি হয়েছে বলেও ঢালাও প্রশংসা করলেন তিনি। তাই লোকসভা ভোটের মাঝে দেশবাসীকে তাঁর পরামর্শ, দেশের উন্নতির দিকটি খতিয়ে দেখেই ভোট দেওয়ার জন্য।
আরও শুনুন:
হিন্দুত্ব বা সঙ্ঘ নিয়ে ধারণা নেই, মোদিই রোল মডেল, তাই প্রার্থী মুসলিম ব্যক্তি
বিজেপি শিবিরের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি যে অভিযোগ ওঠে, তা মুসলিমবিদ্বেষের। আর সেখানেই জরুরি হয়ে ওঠে গণতন্ত্র রক্ষার প্রশ্নও। সেখানে মুসলিম ধর্মগুরুর কাছ থেকেই এহেন সার্টিফিকেট লোকসভার মধ্যে বাড়তি অক্সিজেন জোগাল বিজেপিকে। বিশেষ করে চলতি নির্বাচনের আগেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি পাশ হয়েছে সংসদে, লাগু হয়ে গিয়েছে সিএএ। যাকে মুসলিমদের পক্ষে অশনি সংকেত বলেই বিরোধিতার সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে মুসলিম মহল থেকেও লাগাতার নিশানা করা হয়েছে বিজেপিকে। কিন্তু সৈয়দ জয়নুল-এর সাফ বক্তব্য, ১৯৫০ সালে দেশের সংবিধান তৈরি হয়েছে। তারপর থেকে একাধিক সংশোধনী পাশ হয়েছে সংসদে। দেশ ও জাতির স্বার্থেই সংবিধানের তেমন সংশোধন হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু তার মানে আদৌ সংবিধান বদলে দেওয়া নয়। ১৯৭৫-এ ইন্দিরা গান্ধীর জারি করা জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ টেনেও বিরোধীদের কার্যত বিঁধেছেন এই ধর্মগুরু।
আরও শুনুন:
গেরুয়া মানেই দল! রং না বদলেও সম্ভব গেরুয়াকরণ
শুধু তাই নয়, মোদি সরকারকে খোলা প্রশংসা করতেও কুণ্ঠা নেই সৈয়দ জয়নুলের। বরং এই আমলেই দেশের প্রভূত উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করছেন তিনি। আর লোকসভার আগে সে কথা মনে করিয়ে দিয়েই দেশবাসীর কাছে তাঁর পরামর্শ, কোন দলের হাতে দেশের উন্নতি ঘটছে, তা দেখে নিয়ে ভোট দেওয়া উচিত। অর্থাৎ নির্বাচনী আবহে কার্যত মোদি-সহ বিজেপি শিবিরের পাশে দাঁড়ানোর বার্তাই দিলেন মুসলিম ধর্মগুরু।