রিয়াধের একটি এআই ইভেন্টে কৃত্রিম পুরুষ-রোবটের সঙ্গে সকলের আলাপ করিয়ে দিচ্ছেলেন মহিলা সাংবাদিক রাওয়া কাসিম। দেখা যায়, আচমকাই রোবটের একটি হাত এগিয়ে এসে স্পর্শ করছে ওই মহিলাকে। সে স্পর্শ মোটেও মহিলার পক্ষে সুখকর হয়নি। তিনি একটু চমকে যান। কারণ যেভাবে তাঁকে স্পর্শ করা হয়েছে তা বেশ আপত্তিকর। এই সব ‘অনভিপ্রেত ভুল’ থেকে তাহলে মুক্তি কোথায়?
রোবটের স্পর্শদোষ! নাকি হাতের বাইরে চলে যাওয়া হাতের জিনিস! যা-ই হোক না কেন আদতে রোবটের নিয়ন্ত্রণহীন হাত ছুটে গেল নারীঅঙ্গের দিকেই। কৃত্রিম হলেও পুরুষ, তা-ই কি রোবটও বেপরোয়া! অনেক অনেক প্রশ্ন। তবে, আপাতত সব উত্তরই ধোঁয়াশাময়।
ঘটনাটি ইতিমধ্যে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। ছোট্ট একটা ভিডিও ক্লিপিং ভবিষ্যতের মুখে ছুড়ে দিয়েছে গাদাখানেক সংশয় আর দ্বিধা। রিয়াধের একটি এআই ইভেন্টে কৃত্রিম পুরুষ-রোবটের সঙ্গে সকলের আলাপ করিয়ে দিচ্ছেলেন মহিলা সাংবাদিক রাওয়া কাসিম। দেখা যায়, আচমকাই রোবটের একটি হাত এগিয়ে এসে স্পর্শ করছে ওই মহিলাকে। সে স্পর্শ মোটেও মহিলার পক্ষে সুখকর হয়নি। তিনি একটু চমকে যান। কারণ যেভাবে তাঁকে স্পর্শ করা হয়েছে তা বেশ আপত্তিকর। প্রাথমিক ভাবে হকচকিয়ে গেলেও, তিনি রোবটকে থামতে নির্দেশ দেন। রোবটাও এক মুহূর্তে শান্ত ছেলে হয়ে যায়। এখন মানুষের ক্ষেত্রে এই ধরনের স্পর্শের প্রতিক্রিয়ার ভাষা মানুষের জানা। সেই নিরিখে ব্যবস্থাও নেওয়া যায়। কিন্তু রোবটের ক্ষেত্রে সেই প্রতিক্রিয়া ঠিক কেমন হবে? ধন্দের জায়গাটি ঠিক সেখানেই।
পৃথিবীতে মানুষের সংসারে ধীরে ধীরে ঢুকে পড়ছে রোবট। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এসে মানুষকে কতটা বেকায়দায় ফেলবে, তা নিয়ে এই মুহূর্তে তুমুল চর্চা। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, রোবটের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের রসায়নটি ঠিক কী হবে! এই যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা অপ্রত্যাশিত বলেই দাবি করছেন রোবট নির্মাতারা। তাঁরা বলছেন, পুরুষ রোবটটির সবরকম গতিবিধি বেশ ভালভাবেই পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হয়েছিল। তারপরেও কেন এরকমটা ঘটল তা নিশ্চিত খতিয়ে দেখা হবে। কোথাও এমন একটা কিছু ঘটে গেছে যাতে যন্ত্র ভুল বুঝেছে। অর্থাৎ মানুষের ইশারাতে তা চালিত হলেও, সেই ইশারার মধ্যে এমন কিছু গোলোযোগ আছে, যাতে একটা অনভিপ্রেত ঘটনা ঘোটে যেতে পারে। তাহলে কি বলা যায়, মানুষের হাতে তৈরি জিনিস, তার হাতের বাইরে পেরিয়ে যেতে পারে! সম্ভাবনা তো একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
রোবটের এই ‘বদমাইশি’ নিয়ে অবশ্য অন্য একটা মতও ঘোরাফেরা করছে। অনেকেই বলছেন, রোবট তো আর নিজে থেকে কিছু করেনি। তাকে যা শেখানো হয়েছে, তাই-ই করেছে। সম্ভবত, তার কাজের পরিধির মধ্যে ওই মহিলা চলে এসেছিলেন। তাই সে মহিলাকে সরে যাবার বা এগিয়ে যাবার বার্তা দিয়েছিল। ঘটনাচক্রে সেই স্পর্শ একেবারেই ঠিকঠাক নয়। তবে, এখানে রোবটকে দোষ দেওয়া হবে না তার কাজকে স্বাভাবিক একটা যন্ত্রের কাজ হিসাবে গণ্য করা হবে, তাই নিয়ে ধন্দ। নির্মতারা বারবার বলছেন, ভুল যদি থেকেই থাকে তা খুঁজে বের করা হবে। তা নয় কোনও বিশেষ একটি রোবটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তবে প্রশ্ন এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাজের পরিধি এবং তার ব্যবহার নিয়ে। তা মানুষকে কতখানি প্রভাবিত করবে, মানুষ তার জবাব-ই বা কী দেবে, এসবেরই যেন এখন উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না। যন্ত্র না হয় ভুল করেছে বলে রেহাই পেয়ে গেল! তবে সেই যন্ত্রের ভুলের দরুন নারীকে একটি অনভিপ্রেত স্পর্শের মুখে পড়তে হল। অর্থাৎ যন্ত্রের নেপথ্যে মানুষের ভুলই এমন ঘটনা ঘটাল যা মানুষের পৃথিবীতেই কাম্য নয়। রোবটের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নেই। অথচ সেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গেই মানুষের আগামীদিনের সহবাস! এই সব ‘অনভিপ্রেত ভুল’ থেকে তাহলে মুক্তি কোথায়? প্রশ্ন সেই আদিকালের তবে এআই জমানাতেও এসে যেন তার সদুত্তর মেলে না।