মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে আরতি। তাও আবার মুসলিমদের পবিত্র ধর্মস্থানকে উদ্দেশ্য করেই। সম্প্রতি, এমনই অভিযোগে গ্রেপ্তার ৫ যুবক। ঘটনার ভিডিও ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়েছে নেটদুনিয়াতেও। কোথায় ঘটেছে এই কাণ্ড? আসুন শুনে নিই।
সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে হামেশাই উত্তাল হয় নেটদুনিয়া। তবে সেই হিংসা যাতে ব্যাপক আকার না নেয়, এবার সেই ব্যবস্থাই করল কর্ণাটক পুলিশ। সম্প্রতি নেটদুনিয়ায় বেশ উত্তাপ ছড়িয়েছে এক বিতর্কিত ভিডিও। যেখানে দেখা গিয়েছে, কয়েকজন হিন্দু যুবক মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে সেদিকে উদ্দেশ্য করেই আরতি করছেন। ঘটনার তদন্তে, নেমে সেই ৫ যুবককেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে সেইসঙ্গে, নেটদুনিয়া থেকেও ভিডিওটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
আরও শুনুন: অনুপ্রেরণা অভিষেক বচ্চনের সিনেমা, বোর্ডের পরীক্ষায় সফল ভাবে উত্তীর্ণ ১২ কয়েদি
ঘটনাটি কর্ণাটকের কোপ্পাল জেলার। কিছুদিন আগেই গনেশপুজো উপলক্ষে রাজকীয়ভাবে সেজেছিল সে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত। ব্যতিক্রম ছিল না কোপ্পাল জেলাও। তবে পুজো অপেক্ষা সেখানে মূর্তি বিসর্জন নিয়ে মাতামাতি হয় বেশি। আর সেই বিসর্জনের দিনই ঘটেছে এমন কাণ্ড। এদিন গণেশ বিসর্জন উপলক্ষে এলাকার প্রায় সমস্ত মন্ডপ থেকেই বেরিয়েছিল শোভাযাত্রা। তার মধ্যে একটি শোভাযাত্রা স্থানীয় জামিয়া মসজিদের সামনে দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। যে কোনও সময় অশান্তি হতে পারে, এই আশঙ্কায় আগে থেকেই সেখানে মোতায়েন ছিল পুলিশ। তবু অপ্রীতিকর ঘটনা পুরোপুরি এড়ানো যায়নি। এদিন হঠাৎই মসজিদের সামনে সেই শোভাযাত্রা থেমে যায়। তারপর সেই মিছিলের কয়েকজন যুবক মসজিদের সামনে বাজি ফাটাতে শুরু করেন। মসজিদ কর্তৃপক্ষ বারবার মানা করা সত্ত্বেও তাঁরা থামেননি বলেই অভিযোগ। যদিও তক্ষনি পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। মসজিদের সামনে থেকে ওই মিছিল সরিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানেই পুলিশকে লুকিয়ে আরও এক কাণ্ড ঘটান মিছিলে থাকা কয়েকজন। যে ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে নেটদুনিয়ায়। সেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, মিছিলের কয়েকজন যুবক মসজিদের দিকে মুখে করে আরতি করছেন। শুধু তাই নয় সেদিকে উদ্দেশ্য করে সিঁদুর ছুড়তেও দেখা যায় তাঁদের। ভিডিওটি নজরে আসতেই ওই যুবকদের শনাক্ত করে পুলিশ। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে, তাঁদের গ্রেপ্তারও করা হয়। সেইসঙ্গে নেটদুনিয়া থেকে ওই ভিডিওটিও সরানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ।
আরও শুনুন: ইদের বিজ্ঞাপন কেন তরোয়াল আকৃতির! হোর্ডিং খুলে ফেললেন খোদ মুসলিমরাই
এখানেই শেষ নয়, এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও পোস্টের কিছু নিয়ম ঠিক করেছে কোপ্পাল পুলিশ। সেই নির্দেশ মেনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে হবে ভিডিও। অশান্তি ছড়াতে পারে এমন কিছু লেখাও যাবে না সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনটাও সাফ জানিয়েছেন তাঁরা। আসলে, কিছুদিন ধরেই কর্ণাটকের বিভিন্ন অংশ সাম্প্রদায়িক অশান্তিতে উত্তাল হয়ে রয়েছে। সেইসব ঘটনার আঁচ কোপ্পাল জেলায় যাতে না লাগে, তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করছে সেখানকার প্রশাসন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়মও সেই উদ্দেশ্য নিয়েই করা হয়েছে, এমনটা মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।