৫ বার কান ধরে ওঠবস। এতটুকু শাস্তিই যথেষ্ট ধার্য্য হল নাবালিকাকে ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের জন্য। একরত্তি শিশুকে ধর্ষণ করেও প্রায় বিনা শাস্তিতে ছাড়া পেল যুবক। আর সেই শাস্তির নিদান দিলেন গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরাই। কোথায় ঘটেছে এমন অমানবিক কাণ্ড? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ধর্ষণের শাস্তি কান ধরে ওঠবস! শুনতে অবাক লাগলেও, বিহারের এক গ্রামে ৫ বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণে অভিযুক্তকে দেওয়া হল এমনই শাস্তি । সকলের সামনে মাত্র ৫ বার ওঠবস করিয়েই তার সব দোষ মাফ করে দিল ওই গ্রামের পঞ্চায়েত। কিন্তু ঘটনার ভিডিও নেটমাধ্যমে প্রকাশ পেতেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন নেটিজেনরা।
আরও শুনুন: কোথায় ভূত! কে বলে শুভ কাজ হয় না! শ্মশানে জন্মদিন পালন করে বার্তা ব্যক্তির
সম্প্রতি নেটদুনিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে জনৈক যুবক কান ধরে ওঠবস করছে। আর তাকে ঘিরে রয়েছে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী। স্বাভাবিক ভাবেই কৌতূহল জাগে, কোন অপরাধের জন্য এই শাস্তি? নেটিজেনদের মধ্যে সেই প্রশ্নই ওঠে। কিন্তু উত্তরে যা জানা গেল তা শিউরে ওঠার মতো। জানা গিয়েছে, ওই যুবক ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত। গ্রামেরই এক ৫ বছরের শিশুকে চকোলেট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সে নিজের পোলট্রি ফার্মে নিয়ে যায়। তারপর সেখানেই শিশুটিকে ধর্ষণ করে। এদিকে দীর্ঘক্ষণ শিশুটিকে দেখতে না পেয়ে তার পরিবারের লোকজন খোঁজ শুরু করেন। তাঁরাই পোলট্রি ফার্ম থেকে শিশুটির সঙ্গে ওই যুবককে পাকড়াও করেন। কিন্তু পুলিশের কাছে না গিয়ে যুবককে তাঁরা নিয়ে যান গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যদের সামনে। সমস্ত ঘটনা শোনার পর পঞ্চায়েত সিদ্ধান্ত নেয়, আইন মোতাবেক নয়, যুবকটিকে শাস্তি দেওয়া হবে পঞ্চায়েতের মর্জি অনুযায়ী। কিন্তু যুবকের বিরুদ্ধে হওয়া ধর্ষণের অভিযোগটি বেমালুম উপেক্ষা করে যান তাঁরা। গ্রামের ‘মোড়ুলরা’ মিলে নিদান দেন সকলের সামনে কেবলমাত্র পাঁচ বার ওঠবস করলেই যুবকটিকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাঁদের মতে ধর্ষণের জন্য নয়, শিশুটিকে ওই ফার্মে নিয়ে যাওয়ার অপরাধের শাস্তি হিসেবে এই ওঠবস করতে বলা হয়েছে যুবকটিকে। সেই মতোই যুবকটিকে ওঠবস করতে দেখা গিয়েছে এই ভিডিওতে।
আরও শুনুন: রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, কাতারে থাকছেন না ‘বিশ্বকাপের হটেস্ট ফ্যান’
কিন্তু বিহারের নওয়াদা জেলার এই ঘটনার কথা নেটমাধ্যমে প্রকাশ পেতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নেটপাড়ায়। প্রায় প্রত্যকেই ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের জন্য পাওয়া শাস্তির বহর দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে গ্রাম পঞ্চায়েতের এমন অদ্ভুত বিচার নিয়ে। ইতিমধ্যেই ঘটনার ভিডিওতে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। তাঁরা যেন অবিলম্বে বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখেন এবং অভিযুক্ত যুবকের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করেন সেই অনুরোধও করেছেন নেটিজেনরা। পাশাপাশি পুলিশের কাছেও এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাঁরাও ঘটনার তদন্তে নেমেছেন বলেই জানা গিয়েছে।