মুখে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। লক্ষ্য অযোধ্যায় গিয়ে রামলালাকে দর্শন করা। সেই উদ্দেশ্যেই এই শীতের মধ্যেই ৬ দিন ধরে পথ হেঁটে অযোধ্যায় পৌঁছলেন ৩৫০ জন মুসলিম। শুনে নেওয়া যাক।
ধর্মে মুসলিম। কিন্তু তার জন্য তো রামলালার ভক্ত হতে বাধা নেই। ধর্মের বাধা পেরিয়েই তাই অযোধ্যায় রামলালার কাছে পৌঁছলেন ৩৫০ জন মুসলিম। লখনউ থেকে পুরো পথটাই তাঁরা এসেছেন পায়ে হেঁটে। মুখে ছিল ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। টানা ৬ দিন ধরে হেঁটে অবশেষে দেবতার কাছে পৌঁছেছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: ৩৫ বছর ধরে রামচরিতমানস পড়ে শোনান, রাম মন্দিরেও যেতে চান যোগীরাজ্যের মহম্মদ
লখনউ থেকে অযোধ্যা। পথ নেহাত কম নয়। প্রায় ১৫০ কিলোমিটার। সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের কড়া শীতের কামড় তো রয়েছেই। কিন্তু কোনোরকম যানবাহনে সওয়ার হননি তাঁরা। ভগবানের কাছে পৌঁছনোর জন্য কৃচ্ছ্রসাধন করা জরুরি, এমন বিশ্বাস তো এ দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। সেইভাবেই, এই ভক্তেরাও ঠিক করেছিলেন পায়ে হেঁটেই অযোধ্যা পৌঁছবেন তাঁরা। জানা গিয়েছে এই দলটির নেতৃত্বে ছিল মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ, আরএসএস-এর একটি মুসলিম শাখা। প্রত্যেকদিন ২৫ কিলোমিটার করে পথ পেরিয়েছেন তাঁরা। রাতে বিশ্রাম নিয়ে পরদিন সকালে আবার শুরু করেছেন যাত্রা। আর এভাবেই ৬ দিন ধরে একটু একটু করে পথ হেঁটে তাঁরা পৌঁছে গিয়েছেন রাম মন্দিরের দরজায়। রামলালার দর্শন সেরে জানিয়েছেন, কেবল হিন্দুরা নন, এ দেশের সকল মানুষেরই পূর্বসূরি রামলালা।
আরও শুনুন: শুধু অযোধ্যা নয়, দেশে রয়েছে আরও একাধিক রাম মন্দির… চেনেন সেসব?
ভারতবর্ষে নানা মত, নানা দ্বন্দ্ব। তবে, তার মধ্যেই যা থাকে তা হল মেলবন্ধন। সম্প্রীতির আলো। রাম মন্দির ঘিরে যে নানা বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল, সেখানে এই সম্প্রীতি নিয়েই প্রশ্ন ছিল অনেকের। এক বড় অংশের মানুষ যখন এই মন্দির প্রতিষ্ঠাকে হিন্দু ধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠা বলে সরব হচ্ছেন, সেই কোলাহলে কি কোথাও ভিনধর্মের স্বর চাপা পড়ে যাচ্ছে? এমনটাই সংশয় ছিল অনেকেরই। সেখানেই এক অভিনব সম্প্রীতির নজির গড়লেন এই মুসলিম ভক্তরা। যেন বুঝিয়ে দিলেন, কোনও একটি ধর্মের বাঁধনে ভক্তের ভগবানকে বেঁধে রাখা চলে না। ভক্তি আর ভালোবাসা আসলে ধর্মের গণ্ডি মানেও না। হিন্দু হোন কি মুসলিম, রামের উপাসনা করতে পারেন যে কেউই, সাম্য ও সম্প্রীতির এই অধিকারকেই আরও একবার চিনিয়ে দিলেন এই ভক্তরা। সঙ্গে চিনিয়ে দিলেন ভারতের প্রকৃত ছবিটিও।