‘ইন্ডিয়া’ নাম বদলে ফেলবে দেশ? সেক্ষেত্রে ওই নামের দাবিদার হতে পারে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান। হ্যাঁ, ‘ইন্ডিয়া’-র পরিবর্তে ভারত, সম্প্রতি দেশের এই নামবদলের জল্পনা ঘিরে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। আর সেই আবহেই এবার উসকে উঠল নয়া রটনা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ভারত বনাম পাকিস্তান। খবরের কাগজে প্রায়শই এই শিরোনাম দেখা যায়। ক্রিকেট, ফুটবল কিংবা সিনেমা, ভারত-পাক দ্বৈরথ চিরন্তন। কিন্তু এবার হয়তো দুই প্রতিবেশী ম্যাচের আগে খবরের শিরোনাম হবে, ভারত বনাম ‘ইন্ডিয়া’। শুনতে অবাক লাগছে? অথচ, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঠিক এমনই দাবি উঠেছে। যার নেপথ্যে রয়েছে দেশের নাম বদলের নতুন জল্পনা।
আরও শুনুন: ৯ বছরে কদিন ছুটি নিয়েছেন মোদি? জবাব দিল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর
লোকসভা ভোটের আগে দেশের নাম বদলে ‘ইন্ডিয়া’ (India) থেকে ‘ভারত’ (Bharat) করতে চলেছে মোদি সরকার, সম্প্রতি এমনই জল্পনা উসকে উঠেছে দেশে। জি-২০ বৈঠকের আবহেই এই জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। সত্যি বলতে, বৈঠকে অংশ নেওয়া বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্র প্রকাশ্যে আসার পরেই এই ইস্যুতে জল্পনা শুরু হয়। সেখানে ইংরেজিতে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ লেখা হয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও এ নিয়ে কথা চলছেই। আর সেই পরিস্থিতিতেই এবার শোনা গেল নয়া রটনা। পাকিস্তানের এক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, নামবদলের জল্পনা সত্যি হলে ‘ইন্ডিয়া’ নামের উপরে অধিকার দাবি করতে পারে পড়শি দেশটি। এমনকি এই দাবি নিয়ে খোদ রাষ্ট্রসংঘের দ্বারস্থও নাকি হতে পারে পাকিস্তান, এমনটাই দাবি করা হয়েছে ওই সংবাদমাধ্যমের তরফে। কিন্তু কোন যুক্তিতে ‘ইন্ডিয়া’ নামের উপরে নিজেদের অধিকার কায়েম করতে পারে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশটি? তার জবাবে বলা হয়েছে, ইন্ডিয়া নামটি আদতে ইন্ডাস বা সিন্ধু উপত্যকার প্রভাবে এসেছে। আর এই অঞ্চলের অনেকখানি যেহেতু পাকিস্তানেও রয়েছে, ফলে এই ‘ইন্ডিয়া’ নামের উপরে পাকিস্তানেরও অধিকার বর্তায় বলেই দাবি অনেকের। এর আগেও পাক জাতীয়তাবাদীরা এই নামের অধিকার নিয়ে তর্কবিতর্ক চালিয়েছেন। স্বাধীনতার প্রাক্কালে এই নামকরণ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন মহম্মদ আলি জিন্নাও। তিনি চেয়েছিলেন, ইন্ডিয়ার বদলে এ দেশের নাম হোক ভারত বা হিন্দুস্তান। এমনকি ১৯৪৭ সালেই, স্বাধীনতার মাত্র মাসখানেক আগে এই নিয়ে খোদ লর্ড মাউন্টব্যাটেনকে চিঠি লিখেছিলেন জিন্না। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের নামবদলের ইঙ্গিত পেতে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সেই পুরনো বিতর্ক।
এমনিতে সঙ্ঘ পরিবার বরাবরই ‘ইন্ডিয়া’ নামটিকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার প্রতীক বলে চিহ্নিত করেছে। ভারতীয় সংবিধান যা-ই বলুক না কেন, আরএসএস নেতাদের যুক্তি, ব্রিটিশদের দেওয়া ওই নাম ‘অখণ্ড ভারত’-এর ধারণার পরিপন্থী। সেই কারণেই বিজেপি সরকার এবার দেশের নামবদলের পথে ঝুঁকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, সরকার আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদের বিশেষ যে অধিবেশন ডেকেছে, তাতে দেশের নামবদলের প্রস্তব পেশ করা হতে পারে। যদিও ভারত সরকার এখনও এই মর্মে কোনও বিবৃতি পেশ করেনি। তবে শেষ পর্যন্ত এই নামবদলের জল্পনা সত্যি হলে পাকিস্তান কী পদক্ষেপ করবে, সেটাই এখন দেখার।