লাভ জিহাদ ইস্যুতে ফের বিতর্ক উসকে উঠল দেশে। শ্রদ্ধা হত্যার প্রসঙ্গ টেনে এবার লাভ জিহাদ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য ছুড়ে দিলেন এক বিজেপি নেতা। শুধু মহারাষ্ট্রেই এক লক্ষ লাভ জিহাদের ঘটনা ঘটে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। আরও কী বলেছেন ওই নেতা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
লাভ জিহাদের অভিযোগে মাঝে মাঝেই উত্তাল হয়ে ওঠে দেশ। এর বিপক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিও। আর এই আবহেই এবার বিস্ফোরক দাবি করলেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা তথা সে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী মঙ্গল প্রভাত লোধা। তাঁর দাবি, মহারাষ্ট্রে নাকি ইতিমধ্যেই অন্তত এক লক্ষ লাভ জিহাদের ঘটনা ঘটে গিয়েছে। কিন্তু এমনটা যে আর বরদাস্ত করা হবে না, শ্রদ্ধা হত্যার ইস্যু টেনে সে বিষয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই নেতা। বস্তুত ভিনধর্মের মধ্যে বিয়ে হচ্ছে কি না, তার খতিয়ান নেওয়ার জন্য ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসেই এক কমিটি গড়ে ফেলেছে মহারাষ্ট্র সরকার। রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের তত্ত্বাবধানে জোরকদমে কাজ শুরু করেছে সেই কমিটি। রাজ্যে কোথায় কোথায় ভিন ধর্মের যুগলের মধ্যে বিয়ে হয়েছে, এই বিয়ের পরে মেয়েটি তার নিজের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে কি না, এই সব কিছুই খতিয়ে দেখছে ওই কমিটি। আর কমিটির দেওয়া পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করেই এবার মন্ত্রীর দাবি, মহারাষ্ট্রে প্রায় এক লক্ষ লাভ জিহাদের ঘটনা ঘটে গিয়েছে। আর এই প্রসঙ্গেই তাঁর হুঁশিয়ারি, শ্রদ্ধা ওয়ালকার যেভাবে তাঁর প্রেমিকের হাতেই নিহত হয়েছিলেন, তেমন ঘটনা ঘটতে দেবেন না তিনি। যদিও, শ্রদ্ধা হত্যায় প্রথমে লাভ জিহাদের বিতর্ক উঠে এলেও পরে দেখা গিয়েছে, নিহত ও হত্যাকারী দুজনেই হিন্দু। তা সত্ত্বেও, লাভ জিহাদ প্রসঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়কে তোপ দাগতে গিয়ে ফের শ্রদ্ধা কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনেছেন ওই বিজেপি নেতা।
আরও শুনুন: হনুমান মন্দিরের সামনে মাংস পৌঁছতে আপত্তি, ডেলিভারি বয়কে সংবর্ধনা মন্দির কর্তৃপক্ষের
আসলে, হিন্দু এবং মুসলিমের মধ্যে বিয়ের ঘটনা ঘটলে প্রায়শই তাকে ‘লাভ জিহাদ’ বলে দাগিয়ে দিয়ে থাকেন উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। তাঁদের দাবি, কোনও প্রেম ভালবাসার টানে নয়, এই বিয়ে নিছকই এক ধর্মীয় চাল। আসলে হিন্দু মেয়েদের ভুলিয়েভালিয়ে বিয়ে করতে চায় মুসলিম ধর্মাবলম্বী পুরুষেরা। তারপর জোর করে মেয়েটির ধর্মান্তর করে এবং তার গর্ভে একাধিক সন্তানের জন্ম দিয়ে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ানোই তাদের লক্ষ্য, এমনটাই দাবি হিন্দুত্ববাদীদের। যদিও সাম্প্রতিক কালেই এই প্রসঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছে বম্বে হাই কোর্ট। আদালত স্পষ্টই জানিয়েছে, সম্পর্কে থাকা দুই ব্যক্তি দুই ধর্মের হলেই সেই ঘটনাকে লাভ জিহাদ বলা যায় না। ভালবাসার সম্পর্ককে রাজনৈতিক ভাবে না দেখারই পক্ষপাতী আদালত। কিন্তু তারপরেও মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের সূত্র ধরে সেই রাজ্যেই ফের উসকে উঠল লাভ জিহাদের প্রসঙ্গ।