সন্তানকে বাঁচাতে বাঘের সঙ্গে ভিড়ে গেলেন মা। রীতিমতো বাঘের মুখ থেকে লড়াই করে ছিনিয়ে আনলেন একরত্তি সন্তানকে। আসুন, শুনে নিই সেই অসম সাহসিকতার গল্প।
সন্তানকে বাঁচাতে কী না করতে পারেন মা! এমনকী অবলীলায় বিপন্ন করতে পারেন নিজের প্রাণও। আর সে কথাই ফের প্রমাণ করে দিলেন মধ্যপ্রদেশের উমরিয়া জেলার এই মহিলা। একরত্তি সন্তানকে বাঘের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে ভিড়ে গেলেন বাঘের সঙ্গে।
আরও শুনুন: কোলের শিশুকে সরিয়ে রেখে ডুবন্ত ব্যক্তিকে বাঁচালেন মহিলা, কুর্নিশ নেটদুনিয়ার
বান্ধবগড় ব্যাঘ্রপ্রকল্পের মালা বিট এলাকার রোহানিয়া গ্রামের বাসিন্দা অর্চনা চৌধুরী। রবিবার প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে মাঠে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল তাঁর ১৫ মাসের ছেলে রবিরাজ। সেসময় হঠাৎই জঙ্গলের ভিতর থেকে একটি বাঘ বেরিয়ে এসে হামলা করে তাঁদের উপরে। ছোট ছেলেটিকে মুখে নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টাও করে বাঘটি।
বাঘের মুখে নিজের একরত্তি সন্তানকে দেখে মাথা ঠিক রাখতে পারেননি অর্চনা। সাত-পাঁচ না ভেবেই বাঘের উপর পালটা হামলা করে বসেন তিনি। একবার নয় একাধিক বার। ততক্ষণে তাঁর চেঁচামেচিতে লোকজন জড়ো হয়েছে সেখানে। গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে শেষমেশ শিশুটিকে ফেলে জঙ্গলের ভিতরে পালিয়ে যায় বাঘটি।
আরও শুনুন: কারাগারেই জন্মাল বন্দিনীর সন্তান, উদযাপনে মাতল গোটা জেল
প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অর্চনা ও তাঁর ছেলেকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান গ্রামবাসীরা। অর্চনার স্বামী ভোলাপ্রসাদ জানান, পেট, কোমর ও হাতে মারাত্মক চোট পেয়েছেন ২৫ বছরের অর্চনা। চোট পেয়েছে শিশুটিও। মাথায় ও পিঠে আঘাত রয়েছে তাঁর। স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে পরে দুজনকেই উমরিয়া জেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। দু’জনের অবস্থাই স্থিতিশীল। সেখানে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন উমরিয়ার কালেক্টর সঞ্জীব শ্রীবাস্তব। হামলাকারী বাঘটির খোঁজে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু করেছে বনদপ্তর। বনের খাবার ছেড়ে কেন হঠাৎ মানুষের উপর হামলা করল বাঘটি, তা-ও বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে অর্চনার সাহস ও বীরত্বের প্রশংসা না করলেই নয়। যেভাবে লড়াই করে তিনি বাঘের মুখ থেকে ছিনিয়ে এনেছেন সন্তানকে, তার জন্য তাঁকে কুর্নিশ করেছেন গোটা দেশ। ইতিমধ্যেই নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যপ্রদেশের অর্চনার বীরত্বের এই গল্প।