দীর্ঘ বিতর্ক আর বিবাদ পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত অযোধ্যায় খুলে যাচ্ছে রাম মন্দিরের দরজা। সেই অনুষ্ঠান ঘিরেই সাজো সাজো রব। এই আবহে লক্ষ্মীলাভের মুখ দেখছে অযোধ্যার হোটেলগুলিও। কীভাবে? শুনে নেওয়া যাক।
বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির তৈরির অনুমতি মেলার পরই সাড়ম্বরে শুরু হয়েছিল মন্দির প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর পুরোদমে শুরু হয়েছিল রাম মন্দির নির্মাণের কাজ। বস্তুত এই মন্দিরকে সামনে রেখেই একাধিক রাজনৈতিক প্রকল্পের পালে হাওয়া দিয়েছে দেশের গেরুয়া শিবির। সুতরাং রাম মন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে যে আগ্রহ মাত্রা ছাড়াবে গোটা দেশেই, সে কথা জানাই ছিল। আর এই সুযোগেই লক্ষ্মীলাভের আশায় বুক বাঁধছে অযোধ্যা। জমি বাড়ি কিংবা হোটেল ব্যবসা, সব ক্ষেত্রগুলিতেই বড় লাভের সম্ভাবনা উসকে দিয়েছে এই মন্দির নির্মাণ।
আরও শুনুন: রাম মন্দিরের পাশেই চাই জমি! যোগী সরকারের কাছে আবদার দেশের অন্যান্য রাজ্যের
জানা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের গোড়ায় অযোধ্যার যে কোনও হোটেলের ভাড়াই আকাশছোঁয়া বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনি সময়ে হোটেলে যে ঘরের ভাড়া দিনে তিন হাজার টাকা, জানুয়ারি মাসে তা হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। আসলে আগামী বছরের ২২ জানুয়ারি রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে। মন্দিরের দরজা খুলে যাবে দর্শনার্থীদের জন্য। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে উপস্থিত থাকবেন খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদি। থাকবেন গেরুয়া শিবিরের তাবড় নেতারাও। আর সেই সময়ে অযোধ্যায় উপস্থিত থাকার জন্য ভক্তদের মধ্যে যে হুড়োহুড়ি পড়বে, তাও তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই কারণে আগেই সরযূ নদীর তীরে তাঁবুর শহর গড়ে তুলছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। সেখানে ১২০টি ঘর রয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সেখানে থাকতে পারবেন দর্শনার্থীরা। পাশাপাশি অযোধ্যার হোটেল মালিকদের সংগঠন জানিয়েছে, শহরে মোট হোটেলের সংখ্যা ১৩৮টি। তাতে ঘর রয়েছে চার হাজার। এ ছাড়াও শহরে ৭০টি অতিথিনিবাস, ৫০টি ধর্মশালা এবং ১০০টি হোমস্টে রয়েছে। তারপরেও ওই সময়ে রামজন্মভূমিতে থাকার জায়গা মেলা ভার হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেই জানাচ্ছেন পর্যটকেরা। রামলালার কৃপাতেই লাভের মুখ দেখছেন বলে বিশ্বাস স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ীদেরও।
আরও শুনুন: বিদেশের ‘অযোধ্যা’ থেকে আসছে মাটি, মিশে যাবে দেশের রাম মন্দিরে
এমনিতেই মন্দির নির্মাণের আবহে অযোধ্যায় শুরু হয়েছিল জমি কেনার ধুম। সাধারণ মানুষ তো বটেই, রাম মন্দির সংলগ্ন এলাকায় জমি কেনার জন্য যোগী সরকারের কাছে আবদার জানিয়েছে মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, আসাম, সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশের মতো একাধিক রাজ্য সরকার। যার জেরে যোগী সরকারের তরফে ১৪০৭ একর জমি প্লট করে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগের কথা ভেবেই জমি কেনায় এই বাড়তি উৎসাহ বলে মনে করা যাচ্ছিল। সেই ভাবনা যে নেহাত মিথ্যে ছিল না, এবার হোটেলের ব্যবসায় লক্ষ্মীলাভ তারই ইঙ্গিত দিল। অযোধ্যায় উন্নয়নের কারণে পর্যটন ব্যবসায় ২৫ হাজার কোটি টাকা বেসরকারি বিনিয়োগের আশা করছেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। সেই আশাতেই বুক বাঁধছেন অযোধ্যার হোটেল মালিকরাও।