“আমাকে তুই আনলি কেন, ফিরিয়ে নে।” না ঠিক এভাবে না বললেও অনেকটা এই সুরেই মায়ের ডাক্তারকে কাঠগড়ায় তুললেন মেয়ে। তাঁকে জন্মাতে দেওয়ার সিদ্ধান্তই নাকি চিকিৎসকের ভুল। এমনই অভিযোগ বছর কুড়ির মেয়েটির। আর সেই মামলা অনায়াসে জিতেও গেলেন তিনি। পেলেন লাখ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণও। কোথায় ঘটল এমন আজব ঘটনা, শুনে নিন।
ডাক্তার বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ- তেমন কোনও নতুন ঘটনা নয়। তবে নিজের জন্মের জন্য চিকিৎসককে কাঠগড়ায় তোলা, না এমন ঘটনা কিন্তু সচরাচর দেখা যায় না।
বছর কুড়ির তরুণী।
কেন তাঁর এমন সিদ্ধান্ত?
জন্ম থেকেই স্পাইনা বাইফিডা নামে একটি রোগের আক্রান্ত তিনি। এই রোগে মাতৃগর্ভে ঠিক মতো তৈরি হয়নি শিরদাঁড়াটি। ফলে মেরুদণ্ডের বেশ কিছুটা অংশেই রয়ে গিয়েছে শূন্যস্থান। এর জন্য প্রায়শই একটি টিউবের মধ্যে ২৪ ঘণ্টা কাটাতে হয় তরুণীকে। বন্ধ হয়ে যায় চলাফেরা। সেই দিনগুলো দুর্বিষহ লাগে তাঁর। আর সেই কারণেই তাঁর ক্ষোভ গিয়ে পড়ে সেই চিকিৎসকের উপর, যিনি তাঁর মায়ের গর্ভবস্থায় চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন। এই তরুণীর নাম ইভি টুমবেস। ব্রিটেনের লিঙ্কনশায়ারের এক বিখ্যাত প্যারা-শোজাম্পার তারকা তিনি। ঘোড়াদের নিয়ে একের পর এক হার্ডেল পেরিয়ে পেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া- শারীরিক অসুবিধা সত্ত্বেও এমনই একটি খেলায় রীতিমতো সিদ্ধহস্ত ইভি।
আরও শুনুন: চুরি হয়েছে পেনসিল, বন্ধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে সটান থানায় হাজির খুদে
নিজের শারীরিক অবস্থার জন্য চিকিৎসকের গাফিলতিকেই দোষ দিয়েছেন ইভি। আর শুধু দোষারোপ করেই থেমে থাকেননি। ড. ফিলিপ মিশেল নামে ওই চিকিৎসককে আদালতেও দৌড় করিয়েছেন তিনি। গর্ভাবস্থায় ইভির মাকে দেখতেন এই চিকিৎসকই। ইভি-র অভিযোগ, তাঁর মাকে গর্ভাবস্থায় ফলিক অ্যাসিড খাওয়াতে গাফিলতি করেন ওই চিকিৎসক। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন, গর্ভাবস্থার আগে ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া করে থাকলে ফলিক অ্যাসিডের কোনও প্রয়োজন নেই। ইভির যে অসুখ, ফলিক অ্যাসিডের অভাবেই সেই রোগের ঝুঁকি বাড়ে বলে জানান বিশেষজ্ঞেরা। বর্তমানে চিকিৎসকেরা গর্ভাবস্থার অন্যতম জরুরি এবং বাধ্যতামূলক বলে ধরেন এই ওষুধটিকে।
আরও শুনুন: মিলছে না মনের মতো সঙ্গিনী, ডেটিং অ্যাপের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত যুবকের
ড. ফিলিপ যদি ঠিক সময়ে ঠিক পরামর্শ ইভি-র মাকে দিতেন, তবে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হত না ইভিকে। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সম্প্রতি কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তুলে লন্ডন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ইভি। আর সেই মামলায় জিতেও যান ইভি। মিলেছে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণও। ঠিক কত টাকা না- জানতে পারলেও, তা নাকি সারাজীবন ইভির চিকিৎসা চালানোর পক্ষে যথেষ্ট।
বাকি অংশ শুনে নিন।