‘ঘর আছ তার দুয়ার নাই লোক আছে তার বাক্য নাই’- লালন সাঁইয়ের এই গানে তো ছিল গভীর দর্শনের কথা। তা দর্শনটুকু হাতে রেখে বাকি কথা যদি সত্যি সত্যি ফলে যায়,তবে তো ভারী মুশকিলের ব্যাপার। আর সেই ঘর যদি হয় বাথরুম, তবে আর রক্ষে নেই। সম্প্রতি এমনই কাণ্ড ঘটেছে একটি স্কুলে। সেখানে সমস্ত শৌচাগারের দরজা খুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। কী কারণে এ হেন অদ্ভুত সিদ্ধান্ত, শুনে নিন।
শৌচাগার আছে। তবে তার দরজা নেই। ফলে গোপনীয়তা উঠেছে লাটে। কিন্তু প্রশ্ন যখন পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে, তখন আপসের প্রশ্নই নেই। এমনটাই দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের।
পড়ুয়াদের নিরাপত্তার প্রয়োজনে খুলে নেওয়া হল শৌচাগারের দরজা। অবাক হচ্ছেন! ভাবছেন এ কেমন পদক্ষেপ! সম্প্রতি এমনই হয়েছে টেক্সাসের অস্টিন এলাকার একটি হাই স্কুলে। সেখানকার প্রত্যেকটি শৌচাগারের দরজা খুলে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
আরও শুনুন: সোশ্যাল মিডিয়ার নেশা ছাড়াতে ‘থাপ্পড় থেরাপি’, বেতন দিয়ে রাখা হল তরুণী কর্মচারী
টেক্সাসের ওই স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল ক্রিস্টিনা স্টিলি হান্টজিন পড়ুয়াদের অভিভাবকদের একটি চিঠি লিখে জানিয়েছেন, ওই স্কুলের ৯০ শতাংশ পড়ুয়াই নাকি মাদকাসক্ত। আর শৌচাগারেই নাকি চলে সেই মাদকের রমরমা। সেখানেই নানাবিধ অবৈধ কাজকর্ম চালায় মাদকাসক্ত পড়ুয়ারা। চলে ড্রাগ নেওয়া ও সে সবের লেনদেন। অধ্যক্ষা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি পড়ুয়াদের আচার ব্যবহারে গণ্ডগোল লক্ষ করেছেন। তার মধ্যে বেশ কিছু জিনিস বিদ্যালয়ের নিয়মের লঙ্ঘন বলেই জানিয়েছেন তিনি। তাই পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই শৌচাগার থেকে দরজা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
আরও শুনুন: স্রেফ একটি কুকুরের কারণেই দুই দেশের মধ্যে হল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, জানেন এই ঘটনা?
অভিভাবকদের দেওয়া ওই চিঠিতে অধ্যক্ষা এ-ও জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপের পরে ওই ধরনের ঘটনার ঘনঘটা অনেকটাই কমানো গিয়েছে। তবে গোপনীয়তার প্রসঙ্গ তুলে স্কুল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন অনেকেই। অনেকেরই প্রশ্ন, শৌচাগারের দরজা খুলে নিলেই কমানো যাবে মাদকাসক্তি। এই ভাবে অন্য বিপদের সম্ভাবনাও বাড়তে পারে। তবে পড়ুয়াদের সুরক্ষা ছাড়া আপাতত আর কোনও দিকে তাকাতে রাজি নন প্রিন্সিপ্যাল। অতএব আপাতত দরজা ছাড়াই শৌচাগার ব্যবহার করতে হবে সেই স্কুলের পড়ুয়াদের। তা কতটা অস্বস্তির? আপাতত সে প্রশ্ন নাহয় মুলতুবিই থাক।