কুম্ভের ভিড়ে প্রবল চাপে বারানসী। সঙ্গমে স্নান সেরে কাশীধামে হাজির হচ্ছেন ভক্তরা। আর সেই ভিড় সামলাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই কুম্ভ শেষ না হওয়া অবধি স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল বারানসী প্রশাসন। এমনকি এইকদিন বন্ধ থাকবে বেনারসের গঙ্গারতিও। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে প্রয়াগের কুম্ভমেলা। তবে বিদায়লগ্নেও ভিড় কমেনি এতটুকু। বরং তা আরও বেড়েছে এমনটা বলাই যায়। পাল্লা দিয়ে বারাণসীতেও ভিড় বাড়ছে। এবং তা এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে, শহরের সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এমনকি কুম্ভ শেষ না হওয়া অবধি বন্ধ রাখা হবে গঙ্গারতিও।
:আরও শুনুন:
কুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু! দেহ নিখোঁজ, তিনদিন পর হেঁটে বাড়ি ফিরলেন ‘মৃত’
যেদিকেই তাকাও শিব মন্দির। রাস্তার প্রতিটা মোড়েই অবস্থান করছেন মহাদেব। আর হবে নাই বা কেন! কাশীধাম তো স্বয়ং মহেশ্বরের বিচরণক্ষেত্র। স্রেফ দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম হিসেবে নয়, একাধিক কারণে বেনারস গোটা দেশে প্রসিদ্ধ। কুম্ভের আবহে এই কাশীধামেই ভিড় জমাচ্ছেন ভক্তরা। কারণ প্রয়াগ থেকে বারাণসী খুব বেশি দূর নয়। তাই কুম্ভ যাওয়ার পথে বা স্নান সেরে ফেরার পথে অনেকেই হাজির হচ্ছেন কাশীধামে। এখানে আলাদা করে কোনও মেলা নেই। তাই হোটেলে দিনকয়েক নিশ্চিন্তে কাটানো যাবে, এই ভাবনাতেই বেনারসে থাকতে আসছেন ভক্তরা। কিন্তু সেই সংখ্যা বিগত কয়েকদিনে এতটাই বেড়েছে, যে ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। এদিকে, শিবরাত্রি সামনেই। সেই উপলক্ষে প্রতিবার ভিড় হয় বেনারসে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। সবমিলিয়ে আগামীদিনে যে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে তা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু ভক্তদের কাশীধামে আসা আটকানোও সম্ভব নয়। অর্থাৎ আলাদা কোনও নিয়ম বা নোটিশ জারি করে ভিড় কমানো সম্ভব নয়। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই, কাশীর বাসিন্দাদের মানিয়ে নিতে হচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে। স্কুলে যাতায়াত করায় রীতিমতো সমস্যা হচ্ছিল অনেকের, তাই তা বন্ধ রাখা হয়েছে। অনলাইন ক্লাস চলছে কিছু কিছু স্কুলে। তবে সবচেয়ে বেশি যা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তা হল গঙ্গারতি।
:আরও শুনুন:
শুধু মৃত্যুমিছিল নয়, কুম্ভে জাগছে নতুন জীবনের আলো, মেলা চত্বরেই জন্মাল ১১ শিশু
বেনারসের এই বিশেষ আরতি দেখার জন্য দূরদুরান্ত থেকে ছুটে আসেন অনেকে। ঝড়-জল এমনকি অতিমারির সময়টাতেও যা বন্ধ হয়নি। তবে কুম্ভের আবহে ভিড়ের চাপে আরতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাশীর প্রশাসন। আসলে, আরতি হয় নির্দিষ্ট কিছু ঘাটে। তাও দিনের নির্দিষ্ট সময়। বছরভর এই সময়টায় ওই কয়েকটি ঘাটে তিলধারণের জায়গা থাকে না। শুধু ঘাটে নয়, অনেকেই নৌকায় চেপে গঙ্গায় বসে আরতি দেখেন। কিন্তু এই মুহূর্তে বারাণসীর যা ভিড় তাতে গঙ্গারতির সময় বড়সর দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এই আশঙ্কা থেকেই আরতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তাতে বিপদের ঝুকি কমলেও, হতাশ ভক্তরা। বিশেষ করে যারা কুম্ভস্নান সেরে বারাণসী গিয়েছিলেন তাঁরা বেজায় হতাশ হয়েছে এই সিদ্ধান্তে।