রাম মন্দির ঘিরে দেশজুড়ে উন্মাদনা। যার ছাপ পড়েছে মন্দিরের দানপাত্রেও। কিন্তু এবার দেখা গেল, মন্দির অর্থনীতির হিসেবে পিছিয়ে নেই কাশী বিশ্বনাথও। সম্প্রতি রেকর্ড আয়ের নজির গড়েছে এই মন্দির। শুনে নেওয়া যাক।
রামজন্মভূমি অযোধ্যায় ফিরেছেন রামলালা, এই বিশ্বাসেই ভক্তির জোয়ার নেমেছে দেশজুড়ে। রাম মন্দিরের দরজা খুলতে না খুলতেই উপচে পড়েছে ভক্তদের ভিড়। আর তাতেই লক্ষ্মীলাভ। মন্দির উদ্বোধনের দিন দশেক পরেই জানা গিয়েছিল, শুধু নগদের হিসেবেই প্রতি দিনে গড়ে এক কোটি টাকারও বেশি আয় হয়েছে মন্দিরের। এখনও ভক্তদের আনাগোনা সেখানে লেগেই রয়েছে, সুতরাং অনুদানের পরিমাণও ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু সম্প্রতি জানা গেল, আয়ের হিসেবে পিছিয়ে নেই কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরও। চলতি বছরের মার্চ মাসের হিসেবে দেখা গিয়েছে, এবার রেকর্ড আয় করেছে এই মন্দির। কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ট্রাস্ট জানিয়েছে, অনুদানের মোট পরিমাণ প্রায় ৮৪ কোটি টাকার কাছাকাছি।
আরও শুনুন:
মন্দির মিস্ট্রি! ভরদুপুরেও ছায়া পড়ে না, বাতাসে ভাসছে পিলার…রহস্যে ঘেরা ভারতের মন্দির
উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর এই মন্দিরকে শিবের দ্বাদশ জ্যোর্তিলিঙ্গের অন্যতম বলে মনে করেন ভক্তরা। দেশের প্রাচীন এই তীর্থক্ষেত্রে সারাবছরই ভিড় জমান দেশবিদেশ থেকে আসা পুণ্যার্থীরা। বিশেষ করে চৈত্র-বৈশাখে তীব্র গরম সত্ত্বেও তাঁদের ভিড় বাড়ে। গরমে ভক্তদের ভিড়ের কথা মাথায় রেখে সম্প্রতিই কুলার, ভেজা মাদুর, জার্মান হ্যাঙ্গারের মতো নানারকম সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। এ থেকেই স্পষ্ট, এই মন্দিরে ভক্তসমাগমের সংখ্যাটা কী বিপুল। আর তারই ছবি দেখা গিয়েছে মন্দিরের দানবাক্সেও। আসলে নরেন্দ্র মোদি বারাণসী কেন্দ্রের সাংসদ হওয়ার পর থেকে বিশ্বনাথ মন্দির-সহ সমগ্র বারাণসীর আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। সংস্কার করা হয়েছে দশাশ্বমেধ ঘাট সহ মন্দিরটি। ভক্তদের সুবিধার জন্য মন্দির থেকে সরাসরি গঙ্গা পর্যন্ত করিডর নির্মাণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এই গঙ্গা করিডরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তার ফলে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের ভক্ত-পর্যটকের সংখ্যাও অনেকটা বেড়েছে। ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে মন্দিরের আয় ছিল ২৬ কোটি টাকার কাছাকাছি। ২০২২-২৩ এ তা বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে ৫৮ কোটি টাকা। আর ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে মন্দিরের যা আয় ছিল, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে তা বেড়ে গিয়েছে প্রায় সাড়ে ৪২ শতাংশ। এমনকি শুধু চলতি বছরের মার্চ মাসেই মন্দিরের আয় হয়েছে ১১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা। এ পর্যন্ত মন্দিরের মাসিক আয় যা ছিল, সেইসব পরিমাণকেই ছাপিয়ে গিয়েছে এই আয়। মন্দির অর্থনীতির বিচারে এবার রাম মন্দির বা তিরুপতি বালাজি মন্দিরের সঙ্গেই জুড়ে গেল কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের নামও।