সকালে প্রাথর্না জানাবেন মুসলিমরা। বিকেলে পুজো করবেন হিন্দুরা। শিবরাত্রি উপলক্ষে এমনই নিয়ম জারি হয়েছে কর্ণাটকের এক দরগায়। কিন্তু মুসলিমদের ধর্মস্থানে হঠাৎ হিন্দুরা কেন পুজো করতে যাবেন? আসুন শুনে নিই।
বাবরি হোক বা জ্ঞানবাপি, মন্দির-মসজিদ ইস্যুতে সাম্প্রদায়িক অশান্তির খবর শিরোনাম হয় প্রায়ই। তবু এ-দেশ মূলত সম্প্রীতির ও সৌভাতৃত্বের। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন কিছু মন্দির বা মসজিদ আছে যেখানে একইসঙ্গে প্রার্থনা জানাতে পারেন হিন্দু, মুসলিম উভয় ধর্মাবলম্বীই। যেমন কর্ণাটকের লাডলে মুশাক দরগা। এতদিন সেখানে বিভিন্ন উৎসবে হিন্দু-মুসলিম একসঙ্গে শামিল হতেন। কিন্তু গতবছর মার্চ মাসে ভয়ংকর ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন এলাকার দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ। যার জেরে এবছর শিবরাত্রি পালনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
আরও শুনুন: ধর্ম বাধা নয়, শিবরাত্রি উপলক্ষে মহাদেব সেজেই নাচ মুসলিম তরুণীর
সেখানকার ডেপুটি কমিশনারের ঘোষণা অনুযায়ী, দরগায় সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত প্রার্থনা জানাতে যাবেন মুসলিমরা। আর হিন্দুরা যাবেন দুপুর ২টোর পর। তাঁরাও সন্ধে ৬টা পর্যন্ত দরগার ভিতর থাকতে পারবেন। আসলে এবছর শিবরাত্রির দিনেই মুসলিমদের এক বিশেষ উৎসব পড়েছে। তাই ঝামেলা এড়াতে এমন ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। একইসঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশও। জানা গিয়েছে, শিবরাত্রির দিন এই দরগার ভিতর পুজো করতে ঢুকবেন প্রায় ১৫ জন হিন্দু সাধু। একইসঙ্গে মুসলিমদের তরফেও অনেকেই দরগায় আসবেন। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে যেন কোনোভাবেই ঝামেলা না বাঁধে তাই এত ব্যবস্থা নেওইয়া হয়েছে।
আরও শুনুন: প্রেমে প্রত্যাখ্যান, মুসলিম তরুণীকে ৩৫ টুকরো করে কাটার হুমকি হিন্দু যুবকের
শোনা যায়, ১৪ শতকে এই দরগা তৈরি হয় বিখ্যাত এক সুফি সাধকের স্মৃতিতে। ১৫ শতকে এর সঙ্গে জুড়ে যায় রাঘব চৈতন্য নামে এক হিন্দু সাধকের নামও। সেই থেকেই এই দরগায় একসঙ্গে প্রার্থনা জানাতে আসতেন হিন্দু-মুসলিম দুজনেই। কিন্তু গতবছর কোনও এক উৎসব ঘিরে বচসা বাধে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে। যা বেশ বড়সড় আকার নেয় কিছুদিনের মধ্যেই। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অশান্তি কমলেও, এলাকায় হিন্দু মুসলিমের মধ্যে ভেদভাব বেশ জোরালো হয়ে ওঠে। তবে শিবরাত্রির আবহে আবারও একসঙ্গে দরগায় ঢুকবেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ। কড়া পাহাড়ার দরুন এবারে আর কোনও সমস্যা তৈরি হবে না বলেই মনে করছে স্থানীয় প্রশাসন।