ইন্টারনেটের সুযোগে সবকিছুই এখন হাতের মুঠোয়। এমনকি অন্যের হাঁড়ির খবরও। কিন্তু আপনার নিজের ঘরেই যদি আড়ি পাতা হয়, কেমন লাগবে আপনার? তাই সতর্ক হন। নজরদারির রাডারে কেবল খ্যাতনামা মানুষেরাই নন, পড়তে পারেন আপনিও।
তাঁদের নিজস্ব মোবাইল ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে। এমনই অভিযোগ তুলেছেন দেশের একাধিক বড় নেতা। কাঠগড়ায় খোদ রাষ্ট্রব্যবস্থা। কিন্তু এই নজরদারির আওতায় কি কেবল রাঘব বোয়ালেরা? নাকি তা থেকে ছাড় নেই আপনার আমার মতো চুনোপুঁটিদেরও? জেনে নিন সে কথাই।
সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক মহল তোলপাড় ‘পেগাসাস’ কাণ্ডে। দাবি উঠেছে যে, ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও-র তৈরি ‘স্পাইওয়্যার’ পেগাসাস দিয়ে আড়ি পাতা হয়েছে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ফোনে। রাহুল গান্ধী থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বা প্রশান্ত কিশোর, কেউই নাকি ছাড় পাননি এই নজরদারির হাত থেকে। এমনিতে কয়েকটি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ফোনে আড়ি পাততে পারে কেন্দ্রীয় সরকারের দশটি সংস্থা। দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার তাগিদে; বা অপরাধে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য, অথবা কোনও তদন্তের স্বার্থে এই কাজের অনুমতি মেলে। ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’, অর্থাৎ নির্দিষ্ট বিধিনিয়ম মেনে তবেই কোনও নাগরিকের ফোনে বা কম্পিউটারে নজরদারি চালানো যায়। তা সত্ত্বেও, ২৪ বছর আগেই ব্যক্তির নিজস্ব পরিসর লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ।
আরও শুনুন – Sex Slave: যৌনদাসীর দিনরাত, ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানিয়েছিলেন Nadia Murad
কিন্তু, এখন অবস্থাটা আরও অনেক ঘোরালো। রাজনৈতিক নেতা, আধিকারিক, প্রভাবশালী ব্যক্তি বা তদন্তকারী সাংবাদিক- এঁদের গণ্ডিতে আর কেবল সীমাবদ্ধ থাকছে না বিষয়টা। যে কোনও মুহূর্তে মেপে নেওয়া হতে পারে আমার আপনার রোজকার কার্যকলাপও। শুধু সরকার কেন, সেই নজরদারি চালাতে পারে যে কেউ, যে কোনওরকম উদ্দেশ্য নিয়ে। আর তার জন্য সবসময় পেগাসাসেরও দরকার নেই মোটেই। আপনার ফোন বা কম্পিউটার বা সোশাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে পারলেই কেল্লা ফতে। আরও অবাক কাণ্ড কী জানেন, অনেক সময় আমরা নিজেরাই সহায়তা করি এই হ্যাকিংয়ে। কীভাবে? খুলে বলা যাক।
গত বছর শোনা গিয়েছিল, হ্যাকড হয়েছে খোদ আমাজনের সিইও জেফ বেজোস-এর মোবাইল ফোন। সম্ভবত তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে এসেছিল একটি ভিডিও ফাইল, আর সেখান থেকেই যত বিপত্তি। সেরকমই, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে হরদম লিংক ফরোয়ার্ড করেন বা ফরোয়ার্ডেড লিংক পান আপনারাও। কয়েক মাস আগেই যেমন, একটা লিংক পাচ্ছিলেন অনেকেই। নিচে লেখা ছিল, হোয়াটসঅ্যাপের রং গোলাপি করতে চাইলে ক্লিক করুন এই লিংকে। অনেকেই রং বদলানোর উৎসাহে ক্লিক করেছিলেন সেই লিংকে। আর সঙ্গে সঙ্গে চুরি হয়ে যাচ্ছিল ফোনের সব তথ্য, এমনকি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্যও। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, এই লিংকটি ব্যবহারকারীকে নিয়ে গিয়ে ফেলছিল এই অ্যাপ ডাউনলোডের একটি লিংকের কাছে। তাতে ক্লিক করলেই, ফোনের যাবতীয় তথ্য চলে যাচ্ছিল কোনও অসাধু ব্যক্তির হাতের মুঠোয়।
বাকিটা শুনতে প্লে-বাটন ক্লিক করুন।