হিন্দু মুসলিম দুই ধর্মের ভক্তদেরই অবাধ বিশ্বাস এই পির বাবার উপরে। কিন্তু সেই ভক্তির জেরেই এবার দ্বন্দ্ব বাধল দুই পক্ষের মধ্যে। পিরের নাম বদলে দিয়ে তাঁর হিন্দু নামকরণের পথে হেঁটেছেন হিন্দু ভক্তরা। যে ঘটনা মেনে নিতে নারাজ ক্ষুব্ধ মুসলিম পক্ষ। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
পির ইমাম শাহ বাবার দরগা বরাবরই সমন্বয়ের উজ্জ্বল ছবিটিকে তুলে ধরেছে। হিন্দু হোন কি মুসলিম, ধর্ম নির্বিশেষে ভক্তদের যাওয়া আসা লেগেই থাকে এখানে। কিন্তু তার মধ্যেই এবার লাগল বিতর্কের ছোঁয়া। হিন্দু ভক্তরা নতুন করে এই সুফি পিরের নামকরণ করেছেন সদগুরু হনস্তেজজি মহারাজ। স্বাভাবিকভাবেই এ ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ মুসলিম ভক্তরা। এর প্রতিবাদে অনশন শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: ভারতে যারা জন্মায় তারা সবাই হিন্দু, গুলাম নবি আজাদের দাবিতে শোরগোল নেটদুনিয়ায়
পির ইমাম শাহ বাবার প্রয়াণের পর পাঁচশো বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু আহমেদাবাদ শহরের বাইরে পিরানা গ্রামে তাঁর নামে দরগাটি এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর সেখানেই নিয়মিত যাতায়াত করে থাকেন ভক্তরা। ধর্মের নামে সেখানে কোনও বেড়া তুলতে চাননি কেউই। কিন্তু পিরের এহেন হিন্দু নামকরণ করার তীব্র বিরোধিতা করেছেন মুসলিম ভক্তরা। তাঁদের অভিযোগ, সাম্প্রতিক কালে দেশজুড়ে যে গৈরিকীকরণের চেষ্টা চলছে, এ ঘটনাও আসলে তারই ফল। সত্যি বলতে ইদানীং কালে দেশের একাধিক মসজিদ ঘিরে বিতর্ক ঘনিয়েছে হিন্দু ও মুসলিম দুই পক্ষের মধ্যে। যেমন বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ আসলে শৃঙ্গার গৌরীর মন্দির, এমনটা দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন পাঁচজন হিন্দু মহিলা। মন্দিরে গায়ে হিন্দু চিহ্ন রয়েছে, এমনকি ওজুখানায় পাওয়া গিয়েছে শিবলিঙ্গ, এমনই নানা দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই জোরালো হয়েছে জ্ঞানবাপী বিতর্ক। যার জেরে মসজিদে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই আবহে বিতর্ক উসকে উঠেছে মথুরার ইদগাহ মসজিদ ঘিরেও। জ্ঞানবাপীর মতোই সেখানেও বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা হোক, এই দাবি তুলেছেন হিন্দু ভক্তরা। এই প্রেক্ষিতে ইমাম শাহের দরগার এই ঘটনাকে আদৌ ভাল চোখে দেখছেন না সেখানকার মুসলিম ভক্তরা। তাঁদের অভিযোগ, আদতে এই মসজিদটিকেও অধিগ্রহণ করার চেষ্টা হতে পারে। আর তার জন্যই সুফি পিরের এহেন হিন্দু নাম দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সুর চড়াচ্ছেন তাঁরা। এই ইস্যুতে কর্তৃপক্ষ দ্রুত কোনও ব্যবস্থা না নিলে অনশনে বসবেন ২৫ জন মুসলিম, এবং সেই অনশন তাঁরা চালিয়ে যাবেন। ঘটনার জেরে এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছে মুসলিম পক্ষ। যার জেরে এবার নতুন করে সমস্যা ঘনিয়ে উঠল গুজরাতে।