দলের সর্দার ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। বেসরকারি হাসাপাতালে চিকিৎসার খরচও আকাশছোঁয়া। তাই খরচ জোগাড়ের জন্য চুরির পথই বেছে নিয়েছিল অনুগামীরা। মাত্র এক মাসে ২০টি গাড়ি চুরি করে এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল চোরের দল। অবশেষে পুলিশের জালে তারা ধরা পড়তেই ফাঁস হয়েছে আসল উদ্দেশ্য। আসুন শুনে নিই।
মাত্র এক মাসে দিল্লির এনসিআর এলাকা থেকে চুরি হয়েছে ২০টি গাড়ি। স্বাভাবিক ভাবেই এমন ঘটনায় নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয় পুলিশ। কিছুদিনের মধ্যেই অবশ্য সমাধান হয় সেই চুরির রহস্য। পুলিশের বিশেষ দলের হাতে ধরা পড়ে ৪ জন। পুলিশি জেরার মুখে তারাই স্বীকার করে যে, দলের সর্দারের চিকিৎসার খরচ মেটাতে এমন কাজ করতে হয়েছে তাদের। তদন্তে নেমে আসল সত্যি বিস্তারিত ভাবে জানতে পারে পুলিশ।
আরও শুনুন: উপনয়ন স্পেশাল ‘ব্রাহ্মণ কুকিজ’ আনল বেকারি সংস্থা, দেখেই খাপ্পা নেটিজেনরা
বিগত এক মাস ধরে দিল্লির ওই নির্দিষ্ট এলাকায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছিল ওই ৪ অভিযুক্তের কাণ্ডকারখানা। ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২০টি গাড়ি এই কয়েকদিন চুরি যায় ওই এলাকা থেকে। যার মধ্যে ছিল বিলাসবহুল এসইউভি-র মতো গাড়িও। পুলিশ সূত্রে খবর, ৪ জনের এই দলটি গাড়িগুলি চুরি করে স্থানীয় একটি গ্যারাজে রাখত। সেখান থেকে ধীরে ধীরে গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করত। ক্রমশই বেড়ে চলেছিল চুরির ঘটনা। ঘটনার কথা জানার পরই তদন্তে নামে পুলিশের বিশেষ দল। তাঁরাই কিছুদিন আগে হাতেনাতে পাকড়াও করে ওই ৪ জনকে। তারপর তাদের আটক করে নিয়ে আসা হয় থানায়। প্রশ্ন করা হয়, হঠাৎ এত গাড়ি চুরি করার কারণ কী? সেই প্রশ্নের জবাবেই অদ্ভুত ব্যাখ্যা দেয় ওই ৪ জন। তারা জানায়, তাদের দলের সর্দার দীর্ঘদিন ধরে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। বর্তমানে দিল্লির এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে সর্দারের। কেমোথেরাপি-সহ আরও কিছু চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। তাই এই চুরির পথ বেছে নিয়েছে তারা। ইতিমধ্যেই গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি করে বেশ কিছু টাকা জমিয়েও ফেলেছে তারা। তাদের কথার সত্যতা যাচাই করে পুলিশও। জানা যায় সত্যিই তাদের দলের সর্দার আশিস ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। গত বছর ডিসেম্বরে ওই ব্যক্তিকে ভরতি করা হয়েছে দিল্লির এক নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে।
আরও শুনুন: বাবা পাকিস্তানি আর মা বাংলাদেশি, সন্তানের নাম তবু রাখতেই হল ‘ইন্ডিয়া’, নেপথ্যে কী কারণ?
যদিও একথা জানার পর যে ওই চারজনকে ছাড় দেওয়া হয়েছে, তা নয়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে চার অভিযুক্তকেই। ইতিমধ্যেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ৫০টি গাড়ির যন্ত্রাংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই এর আগে গাড়ি চুরি বা মদ পাচার করার মতো অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। এই ঘটনার অছিলায় সেইসবও প্রকাশ্যে এসেছে। পরোক্ষভাবে গাড়ি চুরির মামলায় যোগ হয়েছে তাদের সর্দার আশিসের নামও। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় সর্দারকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। এছাড়াও পুলিশ জানিয়েছে, আরও অনেকেই এই চক্রের অংশ। তাদের মধ্যে কয়েক জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তার করতেই এখন তৎপর পুলিশ।