পুনের এমজি রোডে কলম বিক্রি করা অশীতিপর এক বৃদ্ধাকে নিয়ে উত্তাল নেটপাড়া। এক মহিলা উদ্যোগপতির ইনস্টাগ্রামের পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পর বৃদ্ধার কথা জানতে পারে সকলে। অনেকের মতে, অনুপ্রেরণা তিনি। কেন? আসুন শুনে নিই।
অতি সাধারণ এক বৃদ্ধা। বয়স আশি পেরিয়েছে। আসক্ত শরীর। মলিন পোশাকে দারিদ্রের চিহ্ন। তবে কিনা ‘রতন’ চেনেন নেটিজেনরা! চেনেন বলেই অতি সামান্য এক পেন বিক্রেতা বৃদ্ধা আজ ভাইরাল হয়েছেন নেটপাড়ায়। প্রশংসার বন্যা বইছে তাঁকে নিয়ে। ‘সামান্যে’র অসামান্য মর্যাদাবোধে মুগ্ধ গোটা দেশ।
যাঁর কথা হচ্ছে পুণের এমজি রোডে এলেই দেখা হতে পারে তাঁর সঙ্গে। তাঁর হাতে থাকে একখানা পিচবোর্ডের বাক্স। বাক্সের সাদা ঢাকনায় গোটা গোটা অক্ষরে লেখা, ‘আমি ভিক্ষা করতে চাই না।’ পরের লাইন, ‘দয়া করে ১০ টাকা দিয়ে একটা নীল পেন কিনুন। ধন্যবাদ। আমার আশীর্বাদ রইল।’ পেন বিক্রেতা এই বৃদ্ধারই নাম রতন। ভাঙা শরীরে ক্লান্তি নেই যেন! নীল পেনের বাক্স নিয়ে সকাল থেকে সন্ধে হেঁটে বেড়ান এমজি রোডে। কেউ আগ্রহ দেখালে এক গাল হাসেন। না, কলম কেনার জন্য জোর করেন না কখনও।
আরও শুনুন: সিট বেল্ট পরেননি খোদ ‘দশরথপুত্র রামচন্দ্র’, জরিমানা করল পুলিশ
সম্প্রতি রতনের এমন আত্মমর্যাদাবোধেই মুগ্ধ হন জনৈক মহিলা উদ্যোগপতি শিখা রাঠি। শিখার মতে, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষই বাস্তবের নায়ক। ইনস্টাগ্রামে শিখা লেখেন, ‘আজ আমি বাস্তবের এক নায়ক এবং সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নের দেখা পেলাম। তিনি রতন।’ আরও লেখেন, ‘আমার বন্ধু ওঁর কলমের বাক্সটি দেখার পরই ওঁর থেকে একটি কলম কিনেছিল। তবে যেটা সবথেকে ভাল লেগেছে তা হল, রতন আরও কলম কেনার জন্য জোর করেননি।’ এই পোস্টের সঙ্গে রতনের গাল ভরা হাসি মুখের ছবিও দেন শিখা। এর পরই রতনকে নিয়ে উত্তাল হয় নেটপাড়া। ছবি দেখে আর রতনের কথা জেনে শিখার সঙ্গে সহমত পোষণ করেন অনেকেই।
সেদিন রতনের থেকে বেশ কয়েকটি কলম কিনে নেন শিখা। রতনের কথা ইনস্টাগ্রামে জানিয়ে শিখা লেখেন, ‘আমার মনে হয়, এমন মানুষের গুণগান করা উচিত। আপনারা যদি কখনও এমজি রোডে যান, দয়া করে রতনের সঙ্গে দেখা করে ওঁর থেকে কলম কিনবেন। এতে রতনের তো ভাল লাগবেই, আমি নিশ্চিত আপনারও ভাল লাগবে।’
আরও শুনুন: আমলাকে চিঠি লিখল হতাশ চোরের দল, ‘বাড়িতে টাকা নেই, দরজায় তালা কেন?’
অসংখ্য শেয়ার হয়েছে শিখা রাঠির এই পোস্ট। বৃদ্ধার মর্যাদাবোধে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন বহু মানুষ। তাঁকে জীবনের অনুপ্রেরণা বলে মন্তব্যও করেছেন কেউ কেউ। ‘রতন’কে ঠিক চিনেছেন নেটাগরিকরা।