কুম্ভের আবহে চাহিদা তুঙ্গে গীতা এবং রামচরিত মানসের। তবে ধর্মগ্রন্থে ইংরাজি অনুবাদ কিনতেই বেশি আগ্রহ অনেকের। তবে কি ধর্মের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে নতুন প্রজন্মের? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
অনেকেই বলেন, ধর্মের প্রতি আগ্রহ নেই নতুন প্রজন্মের। বিশেষ করে ভারতে সনাতন ধর্মে মন নেই বর্তমান প্রজন্মের, এই অভিযোগ হামেশাই শোনা যায়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি সেই কথা বলছে না। বরং উলটোটাও ভাবা যেতেই পারে। আর সেক্ষেত্রে কারণ হিসেবে উঠে আসবে গীতা এবং রামচরিতমানসের ইংরাজি অনুবাদের চাহিদা বৃদ্ধি।
ঠিক কী হয়েছে?
তাহলে খুলেই বলা যাক। দীর্ঘ অপেক্ষার পর প্রয়াগে বসেছে মহাকুম্ভের আসর। দলে দলে ভিড় জমাচ্ছেন ভক্তরা। তালিকায় সাধুরা যেমন রয়েছেন, তরুণরাও হাজির হয়েছেন। অনেকে বলছেন, কুম্ভমেলার বিভিন্ন ঘটনা মোবাইল বন্দী করতেই নতুন প্রজন্মের এই আগ্রহ। তাঁরা প্রয়াগে আসছেনও সেই কনটেন্টের লোভে। কিন্তু বিষয়টা সবার ক্ষেত্রে এক ভাবা ভুল। আরও একটা ছবি কুম্ভ মেলায় স্পষ্ট ধরা পড়ছে, তা হল ধর্মগ্রন্থের ইংরাজি অনুবাদের চাহিদা বৃদ্ধি। বিশেষ করে গীতা এবং রামচরিতমানসের ইংরাজি অনুবাদ কিনতেই ব্যস্ত হচ্ছেন সকলে। মনে হতেই পারে, কুম্ভে আগত বিদেশী ভক্তরা এই বই কিনছেন। কিন্তু না, এ দেশের তরুণ তুর্কিরাও সেই দলে রয়েছেন বড় সংখ্যায়। ইংরাজি অনুবাদ পড়তে তাঁরা বেশি স্বচ্ছন্দ্য, তাই মেলা থেকে ধর্মের বই কিনছেন সকলে।
:আরও শুনুন:
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে আধ্যাত্মিকতার পাঠ! পড়ুয়াদের কুম্ভযাত্রার ব্যবস্থা মাদ্রাজ আইআইটির
রামমন্দির প্রতিষ্ঠার আবহে রামচরিতমানসের যোগান দিতে হিমশিম খেতে হয়েছিল গীতা প্রেস-কে। এবারও একই অবস্থা ওই প্রকাশনী সংস্থার। কুম্ভে বেশ কিছু স্টল রয়েছে তাদের। গীতা এবং রামচরিতমানস, এই দুই-য়ের চাহিদাই সবথেকে বেশি। তবে উভর ক্ষেত্রেই ইংরাজি অনুবাদ বিক্রি হচ্ছে বেশি। ৩৫০ টাকা প্রতি কপি হিসেবে, দিনে অন্তত ১০০ কপি রামচরিতমানস বিক্রি হচ্ছে। মূল সংস্কৃত লেখা তার সঙ্গেই ইংরাজি অনুবাদ রাখা হয়েছে বইয়ে। বোঝার সুবিধার জন্য বিশেষ কিছু শব্দের অর্থও লেখা হয়েছে। আর তাতেই সকলের পছন্দের হয়ে উঠছে এইসব বই। যদিও গীতার ইংরাজি অনুবাদ বিদেশের মাটিতে যথেষ্ট জনপ্রিয়। ইসকনের তরফে দীর্ঘদিন ধরে যে ধর্মীয় প্রচার চালানো হচ্ছে গোটা বিশ্বজুড়ে, তার গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সকলকে গীতা পাঠে উৎসাহ যোগানো। সেক্ষেত্রে ভিনদেশীদের জন্য গীতার ইংরাজি অনুবাদ রাখা হয়। এবারের কুম্ভে সেই গীতা এবং রামচরিত মানস দুটি বইয়ের অনুবাদই চাহিদার তুঙ্গে পৌঁছল। যার নেপথ্যে অবদান স্রেফ বিদেশী ভক্তদের নয়, বরং এ দেশের তরুণদেরও রয়েছে।