বৃদ্ধাকে মৃত বলেই ঘোষণা করে দিয়েছিল হাসপাতাল। শেষকৃত্য করার জন্য পরিবারের লোকজন তাঁর মৃতদেহ নিয়ে যায় শ্মশানে। কিন্তু শ্মশানে পৌঁছেই আর ‘মৃত’ থাকলেন না তিনি। সবাইকে অবাক করে দিয়ে চোখ মেলে উঠে বসলেন বৃদ্ধা। কোনও অজানা জাদুবলেই কি বেঁচে উঠলেন এই মৃত মহিলা? নাকি নেপথ্যে রয়েছে অন্য কোনও রহস্য? আসুন শুনে নিই।
বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে, ঘোষণা করে দিয়েছিলেন চিকিৎসক। সুতরাং শেষকৃত্যের জন্য বৃদ্ধার দেহ নিয়ে শ্মশানে হাজির হয়েছিল পরিবার। কিন্তু শ্মশানে পৌঁছেই ঘটে গেল এক অদ্ভুত কাণ্ড। আত্মীয়স্বজন যখন তাঁর অন্ত্যেষ্টির জোগাড়যন্ত্র করতে ব্যস্ত, তখনই চোখ মেলে জেগে উঠলেন বছর ৮১-র হরি ভেজি। এমন কাণ্ড দেখে স্বাভাবিক ভাবেই স্তম্ভিত হয়ে যান শ্মশানে উপস্থিত সকলেই।
আরও শুনুন: অপারেশনের সময় পেটের ভিতর থেকে গেল তোয়ালে, বেনজির গাফিলতি উত্তরপ্রদেশে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জীবিত ও মৃত গল্পে এরকমই এক ঘটনা কথা লিখেছিলেন। সেই গল্পে যে মহিলাকে মৃত ভেবে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, আসলে তিনি মারা যাননি। কিন্তু তিনি জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর কেউই সে কথা বিশ্বাস করতে চায়নি। বরং সকলেই একে ভূতুড়ে কাণ্ড ভেবে ভয়ে দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল। উত্তরপ্রদেশের এই ঘটনাটিতে অবশ্য মৃতদেহ-র জেগে ওঠা দেখে কেউ ভয় পেয়ে পালিয়ে যাননি। বরং বৃদ্ধা মাকে আবার ফিরে পেয়ে বেজায় খুশি হন বৃদ্ধার ছেলেমেয়েরা।
জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদের একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন হরি ভেজি। ঘটনার দিন হাসপাতালের তরফে তাঁর পরিবারকে জানানো হয়, মহিলার ‘ব্রেন ডেথ’ হয়েছে। অর্থাৎ তাঁর মস্তিষ্ক আর কাজ করছে না। হাসপাতালের ডাক্তাররা এমন অবস্থাকে মৃত বলেই চিহ্নিত করেন। তাঁদের কথামতোই মহিলার দেহ নিয়ে এসে শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করে তাঁর পরিবার। কিন্তু শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার পরেই ঘটে এমন অদ্ভুত কাণ্ড। সবাইকে অবাক করে দিয়ে হঠাৎ চোখ মেলে তাকান ৮১-র বৃদ্ধা। এমন অবস্থা দেখে তড়িঘড়ি উপস্থিত সকলে তাঁর কাছে ছুটে আসেন। কিন্তু কিছুক্ষণ ওভাবে জেগে থাকার পরই বেশ অসুস্থ বোধ করেন মহিলা। ক্রমশ নিস্তেজ হতে থাকে তাঁর শরীর। তড়িঘড়ি বৃদ্ধাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তাঁর ছেলে সুগ্রীব সিং।
আরও শুনুন: ডিপ্রেশনে কয়েন খাওয়া অভ্যাস, ব্যক্তির পেটে ৬৩টি কয়েন পেয়ে তাজ্জব চিকিৎসকরা
কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। বাড়িতে আসার পর আরও অবনতি হতে থাকে বৃদ্ধার। এবং সেদিন রাতেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন তিনি। পরদিন আবার মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন ছেলে সুগ্রীব। তিনিই ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা সকলের সামনে প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে ওই ব্যক্তির অভিযোগ, তাঁর মা মারা যাওয়ার আগেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা আরও একবার প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে গেল উত্তরপ্রদেশের চিকিৎসাব্যবস্থাকে।