মন্দিরে ঢোকাই অপরাধ। আর তার জেরেই বেঁধে রেখে মারধর করা হল এক দলিত যুবককে, এমনকি গায়ে ছ্যাঁকাও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এহেন বর্বর ঘটনা সামনে আসায় আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল দলিত সম্প্রদায়ের সম্পর্কে এক শ্রেণির মানুষের মনোভাব। কোথায় ঘটেছে এমন কাণ্ড? শুনে নেওয়া যাক।
যতই আইন পাশ হোক, উচ্চবর্ণের অত্যাচারের হাত থেকে সম্পূর্ণভাবে রেহাই মেলেনি এ দেশের দলিত সম্প্রদায়ের। ধর্মের দোহাই দিয়ে দলিতের উপর অত্যাচারের খবর প্রায়শই শোনা যায়। এবার শুধুমাত্র মন্দিরে ঢোকার অপরাধে এক দলিত যুবককে বেঁধে রাখার ঘটনা প্রকাশ্যে এল। জানা গিয়েছে, তাঁর গায়ে কাঠ জ্বালিয়ে ছ্যাঁকা পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের এই ঘটনা সামনে আসতেই ফের স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে এ দেশে দলিত সম্প্রদায়ের অবস্থানটি।
আরও শুনুন: ভিসার জন্য যৌনতার প্রস্তাব পাক দূতাবাসে, ভারতীয় অধ্যাপিকার অভিযোগে নড়েচড়ে বসল পাকিস্তান
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরকাশী জেলার সালরা গ্রামে। ঘটনার দিন অন্য একটি গ্রাম থেকে এই গ্রামে এসেছিলেন আয়ুষ নামের ওই দলিত যুবক। বছর বাইশের ওই যুবকের উদ্দেশ্য ছিল সালরা গ্রামের এক প্রসিদ্ধ মন্দিরে পুজো দেওয়া। কিন্তু দলিত হওয়ার অপরাধে তাঁকে সেই অধিকারও দিতে চাননি গ্রামের কিছু তথাকথিত উচ্চবর্ণের মানুষ। দলিত যুবকটি মন্দিরে ঢুকেছেন এমন খবর পাওয়া মাত্রই সে গ্রামের একদল যুবক মন্দিরে হাজির হয়। ওই দলিত যুবককে পিছমোড়া করে বেঁধে রাখে তারা। মারধরও করা হয় তাঁকে। এখানেই শেষ নয়। মন্দির চত্বরে পড়ে থাকা কিছু কাঠের টুকরো তুলে নিয়ে আগুন জ্বালায় হামলাকারীরা। আর সেই জ্বলন্ত কাঠ দিয়ে ওই যুবকের শরীরে ছ্যাঁকা দিতে শুরু করে তারা। প্রায় সারারাত ধরেই এমন পাশবিক অত্যাচার চালিয়েছিল ওই হামলাকারী দলটি, অভিযোগ এমনটাই। সকাল হতেই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় ওই দলটি। কোনওমতে নিজেকে মুক্ত করে মন্দির চত্বর ছাড়েন দলিত যুবক। স্থানীয় হাসপাতালে গেলে তাঁর অবস্থা দেখে চমকে যান সেখানকার কর্মীরা। তাঁদের প্রশ্নের সূত্রেই সামনে আসে আসল ঘটনা। হাসপাতালের সহযোগিতায় পুলিশের কাছে অভিযোগও দায়ের করেন ওই দলিত যুবক।
আরও শুনুন: হোটেলে ডাক যৌনকর্মীদের, খেতেও দেওয়া হয়নি, বিস্ফোরক অভিযোগ পাক অভিনেত্রীর
পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর বয়ানের ভিত্তিতেই গ্রামের জনা পাঁচেক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। অনগ্রসর শ্রেণির প্রতি হিংসা আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এই আধুনিক সময়ে দাঁড়িয়েও জাতপাত ইস্যুতে এমন অমানবিক আচরণ অস্বস্তিতে ফেলে দিল সে রাজ্যের প্রশাসনকেই।