মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চান আলোচনা। এবার চিঠি দিয়ে মমতাকে রাজভবনে ডাক রাজ্যপালের। রামপুরহাট ও বিধানসভায় হাতাহাতি নিয়ে বলবেন কথা। উন্নয়নই হোক মূল মন্ত্র। পাহাড়ের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। তীব্র কটাক্ষ বিজেপিকে। অবিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি মমতার। বার্তা একজোট হয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের। ইডির তলব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী ও শ্যালিকাকে। ব্যক্তিগত কারণে মঙ্গলবার হাজিরা দিলেন না অভিষেকও।
হেডলাইন:
আরও শুনুন: 28 মার্চ 2022: বিশেষ বিশেষ খবর- বিধানসভায় নজিরবিহীন হাতাহাতি, সাসপেন্ড শুভেন্দু-সহ ৫ বিজেপি বিধায়ক
বিস্তারিত খবর:
1. রামপুরহাট কাণ্ড এবং সোমবার বিধানসভার হাতাহাতি নিয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা চান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। চলতি সপ্তাহের যে কোনও দিন মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে রাজ্যপাল বলছেন, “রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হওয়া এবং রামপুরহাট ও বিধানসভার উদ্বেগজনক ঘটনাক্রম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা দরকার।” রামপুরহাট কাণ্ডে সিবিআই তদন্তে গাফিলতি বা তদন্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হলে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গে রাজ্যপালের বক্তব্য, “আদালতের নির্দেশে এবং নজরদারিতে যে তদন্ত চলছে, তার পালটা যদি কোনও পদক্ষেপ করতে হয়, তাহলে সেটা করতে হবে আইনি পথেই। কোনওভাবেই রাস্তায় নেমে নয়।” মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের অবস্থান নিয়েছেন, রাজ্যপাল তা নিয়েও উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “রাজ্যপাল বিজেপির প্রতিনিধির ভূমিকা পালন করছেন। অন্যান্য রাজ্যগুলির তুলনায় বাংলার আইনশৃঙ্খলা যথেষ্ট ভাল। যে দু’ একটি কুৎসিত ঘটনা ঘটছে, তার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপযুক্ত পদক্ষেপ করেছেন। কিন্তু বিজেপি রাজ্যের মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে পিছনের দরজা দিয়ে মাথা গলানোর চেষ্টা করছে। রাজ্যের বিরুদ্ধে যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের চেষ্টা হচ্ছে, রাজ্যপাল তার অংশীদার হিসাবে কাজ করছেন।” রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপালের সংঘাতে এই চিঠি নয়া সংযোজন হতে চলেছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
2. উন্নয়নই হোক মূলমন্ত্র। কোনও রকম ঝগড়া-বিতণ্ডা চলবে না। মঙ্গলবার পাহাড়ের প্রশাসনিক বৈঠকে এই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্রুত জিটিএ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, “পাহাড় হাসলে আমার ভাল লাগে। কথা দিন, আগামী ১০ বছর কোনও ঝগড়া করবেন না, শুধু মানুষের জন্য কাজ করবেন। আপনারা মন দিয়ে পাহাড়ের জন্য কাজ করুন, দেখুন দার্জিলিং-কার্শিয়াং কোথায় পৌঁছে যায়।” পাশাপাশি এদিন বিজেপিকেও তীব্র কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। গেরুয়া শিবিরকে পরিযায়ী আখ্যা দিয়ে তাঁর মন্তব্য, কোনও কোনও দল আছে যারা ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দেয়, ভোটের পর আর তাদের দেখা মেলে না। পাহাড়বাসীর উদ্দেশে তাই তাঁর সাফ কথা, ‘ভুলেও দিল্লির লাড্ডু খাবেন না।’ সাধারণ ভাবে পাহাড়ের রাজনীতি কেন্দ্রের শাসকদলের দিকে ঝুঁকে থাকে বলেই রাজনৈতিক মহলের প্রচলিত মত। সেই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর এই কথা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। একই মঞ্চ থেকে কেন্দ্র সরকারকেও একহাত নেন মমতা। বলেন, “বারবার জ্বালানির দাম বাড়াচ্ছে কেন্দ্র। পাঁচ রাজ্যে ভোট মেটার পর থেকে বেশ কয়েকবার জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে।” সাধারণ মানুষের ভোগান্তির জন্য যে কেন্দ্রের নীতিই দায়ী, তা কার্যত স্পষ্ট করে দিয়ে মমতা বলেন, “রাজ্যের অন্যান্য এলাকার মতো পাহাড়েও ত্রিস্তর পঞ্চায়েত চালুর জন্য বলেছিলাম। এখনও আইন পাশ করতে পারেনি কেন্দ্র।” সম্প্রতি ইউক্রেন ফেরত ডাক্তারি পড়ুয়াদের সরকারি খরচে কোর্স শেষ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু কেন্দ্রের অনুমতি মেলেনি। সেই প্রসঙ্গ তুলেই কেন্দ্র সরকারের যে পড়ুয়াদের প্রতি দরদ নেই, তা বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। একদিকে পাহাড়ে বিবাদ ভুলে উন্নয়ন আর ঐক্যের ডাক, অন্যদিকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ঝাঁজালো আক্রমণ – এই সভা থেকেই যেন জিটিএ নির্বাচনের রাজনৈতিক ভূমি তৈরি করে দিয়ে গেলেন মমতা, মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর।