অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে নিয়োগের নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রীরই। দাবি শিক্ষাসচিবের। সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভারই, পালটা দাবি ব্রাত্য বসুর। সৌজন্য সাক্ষাৎ মমতা-শুভেন্দুর। অতিরিক্ত শূন্যপদ নিয়ে রাজ্যের সমালোচনা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের। দল হিসাবে তৃণমূলের মান্যতা প্রত্যাহারেরও হুঁশিয়ারি। কড়া প্রতিক্রিয়া কুণাল ঘোষের। চোটের কারণে বেশ বিপাকে নেইমার, সুইজারল্যান্ড ম্যাচ থেকে ছিটকেই গেলেন তারকা।
হেডলাইন:
আরও শুনুন: 24 নভেম্বর 2022: বিশেষ বিশেষ খবর- অতিরিক্ত শূন্যপদ নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল ডিভিশন বেঞ্চেও
বিস্তারিত খবর:
১। শিক্ষক নিয়োগ মামলায় অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। হাই কোর্টের প্রশ্নের উত্তরে এদিন এমনটাই দাবি করলেন শিক্ষাসচিব মনীশ জৈন। এই নিয়ে আদালতের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শিক্ষাসচিব জানান, ‘উপযুক্ত জায়গা থেকে নির্দেশ এসেছিল। ব্রাত্য বসুর নির্দেশ ছিল। তিনি আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। আইনজীবী এবং অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। আইন দপ্তরের সঙ্গেও কথা হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়। মুখ্যসচিবকে জানানো হয়। ক্যাবিনেটে নোট পাঠানো হয়।’ তবে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির এই সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভারই, এমনটাই পালটা দাবি ব্রাত্য বসুর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ক্যাবিনেটই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারপরই শিক্ষাসচিবকে আইনি পরামর্শ নিতে বলেছিলাম। তবে আইনি বিষয়ে কিছু বলব না। বিচারপতি কী জানতে চেয়েছেন, শিক্ষাসচিব কী বলেছেন, তা আদালতের বিষয়। আমার কিছু বলার নেই। কিছু বলার হলে উপযুক্ত জায়গা থেকে বলা হবে।” এদিকে এদিনের সওয়াল-জবাব শেষে এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। অন্যথায় কঠোর পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানান দেন। এমনকী দল হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেসের মান্যতা প্রত্যাহার করার হুঁশিয়ারিও দেন। এ বিষয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “আমরা বিচার ব্যবস্থাকে সম্মান করি। বিচারপতিদের শ্রদ্ধা করি। বিচার ব্যবস্থার ঊর্ধ্বে কেউ নয়। কিন্তু দেখতে হবে কারও উইশ লিস্ট অনুযায়ী আদালত নির্দেশ দিচ্ছে না তো!’ অতিরিক্ত শূন্যপদ নিয়ে চাপান-উতোরের মধ্যেই রাজ্যকে এদিন প্রায় নজিরবিহীন ভাবেই কড়া বার্তা দিয়ে রাখল আদালত। এদিকে SSC মামলায় নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপাতত স্বস্তি রাজ্যের। বেনামী নিয়োগ নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশে ৩ সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ জারি করল শীর্ষ আদালত। ওই মামলায় সিবিআই তদন্ত আপাতত নয়, শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনকেও নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হবে না। স্থগিতাদেশে এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
২। সাম্প্রতিক সময়ের রাজনীতিতে প্রায় বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থাকল বিধানসভা। তৃতীয় তৃণমূল সরকার গঠনের পর এই প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। এদিন সংবিধান দিবসের প্রাক্কালে বিধানসভা চত্বরে নতুন ভবনের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এদিনের এই অনুষ্ঠানও এড়ান বিরোধী দলনেতা ও বিজেপির বিধায়করা। এ বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, রাজ্যের কোনও অনুষ্ঠানে নিয়ম মেনে বিরোধীদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না। কিন্তু পালটা মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিরোধীদের ডাকা সত্ত্বেও কোনও অনুষ্ঠানে তাঁরা যোগ দেন না। তবুও এদিন স্মারক ভবন উদ্বোধনে বিরোধীদের যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সেই সময় বিরোধী দলনেতা জানান, অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্রে তাঁর নাম নেই। ফলত তিনি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না। এর কিছুক্ষণ পর শুভেন্দু অধিকারীকে বিধানসভায় নিজের ঘরে ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর ডাক পেয়েই হাসিমুখে তাঁর ঘরে যান শুভেন্দু। সঙ্গে ছিলেন পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গা, বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল, অশোক লাহিড়িও। তবে বিধানসভা কক্ষে ভাই সম্বোধন করলেও শুভেন্দুর কটাক্ষের কড়া জবাবই দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি জানিয়েছেন, বিরোধীদের তিনি সম্মান করেন। এদিন কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে স্পিকারের কাছে বাংলার সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল তৈরিও আহ্বান জানান তিনি। তবে সংঘাতের আবহে মমতা-শুভেন্দু সৌজন্য সাক্ষাত যে এই মুহূর্তে বাংলার রাজনীতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর