ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ঢুকল রুশ বাহিনী। শর্তসাপেক্ষে আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি দু’দেশ। যুদ্ধের জেরে ইউক্রেনে আটকে রাজ্যের বহু পড়ুয়া। সিটকে সহযোগিতা আনিসের পরিবারের। রাজ্য পুলিশেই পুরভোট করার সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের। মিটল বাজেট অধিবেশন ঘিরে জটিলতা। আইপিএলের নিয়মে বদল।
হেডলাইন:
বিস্তারিত খবর:
1. মাত্র ২৪ ঘণ্টা। তার মধ্যে সমস্ত প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দিয়ে কিয়েভে ঢুকে পড়ল রুশ বাহিনী। রাস্তায়-রাস্তায় চলছে তুমুল সংঘর্ষ। সব মিলিয়ে রাশিয়ার আগ্রাসনের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে ইউক্রেনের সর্বত্র। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে কৃষ্ণসাগরে রোমানিয়ার একটি জাহাজে হামলা চালিয়েছে মস্কো।
গত কয়েক ঘণ্টা ধরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে ছিল রাশিয়ার সেনাবাহিনী। সেখান থেকেই চলছিল লাগাতার বিমান, ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা। পালটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল ইউক্রেনও। খবর মিলছিল, উত্তর ও উত্তর-পূর্ব প্রান্ত থেকে কিয়েভে ঢুকছে রুশ বাহিনী। এর পরই পুতিন বাহিনীকে ঠেকাতে তেতেরিভ নদীর সেতুও উড়িয়ে দেয় ইউক্রেন। উড়িয়ে দেওয়া হয় রাশিয়ার দু’টি ট্যাঙ্কও। গুলি করে নামানো হয় রুশ ক্ষেপণাস্ত্রও। তবু শেষরক্ষা হল না। একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সূত্রে খবর, কিয়েভে রাশিয়ার সেনার একটি দল ঢুকে পড়েছে। একটি দোতলা বাড়িতে লুকিয়ে গুলি বর্ষণ করছে তারা।
তবে কিয়েভ দখল প্রসঙ্গে ইউক্রেনের তরফে সরকারিভাবে কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি। জানা গিয়েছে, সমুদ্রপথে যাতে বাহিনী ঢুকতে না পারে তাই ল্যান্ডমাইন বসানো হয়েছে উপকূল বরাবর। সূত্রের খবর, রাশিয়া সীমান্তে ঢুকে পড়েছে কিয়েভ বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে ২০২২ সালের রাশিয়া গ্রাঁ প্রি বাতিল করল মস্কো সরকার।
শুক্রবারই ইউক্রেনকে শর্তসাপেক্ষে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল মস্কো। শর্ত ছিল, ইউক্রেন সেনাকে আত্মসমপর্ণ করতে হবে। যুদ্ধের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন রুশ নাগরিকেরাও। দোর্দণ্ডপ্রতাপ শাসকের বিরুদ্ধে শান্তিকামীরা গর্জে উঠে বলছেন, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই। পুতিন হিটলারের মতোই ভয়ংকর। ওকেই গ্রেপ্তার করা উচিত।’ কিন্তু যুদ্ধের দ্বিতীয় দিনেই কার্যত ইউক্রেনে ঢুকে পড়ল রাশিয়ার সেনা।
2. বাংলার পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ আটকে পড়েছেন ইউক্রেনে। চিন্তায় ঘুম উড়েছে পরিবারের। তাঁদের ঘরে ফেরাতে উদ্যোগী রাজ্য। খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। দায়িত্বে সিনিয়র আইএএস অফিসার ও ডব্লুবিসিএস অফিসাররা। যোগাযোগের জন্য চালু করা হচ্ছে দুটি নম্বর, ২২১৪৩৫২৬ ও ১০৭০। ইতিমধ্যেই নবান্নের তরফে ইউক্রেনে আটকে থাকা বাসিন্দাদের তথ্য চাওয়া হয়েছে জেলাশাসকদের কাছে। এবার হয়তো খানিকটা সহজ হবে প্রিয়জনদের ঘরে ফেরা, আশায় বুক বাঁধছে ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলার বাসিন্দাদের পরিবার।
বাংলা থেকে বহু মানুষ বিভিন্ন সময়ে পাড়ি দিয়েছিলেন ইউক্রেনে। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই গিয়েছিলেন ডাক্তারি পড়তে। কেউ কেউ অশান্তির আঁচ পেয়ে ঘরে ফেরার সিদ্ধান্ত নিলেও আটকে পড়েছেন তাঁদের অনেকেই। যেমন পূর্বস্থলীর বাসিন্দা এক যুবক পড়াশোনার জন্য গিয়েছিলেন ইউক্রেনে। বর্তমানে কলেজে হস্টেলে আন্ডারগ্রাউন্ডে রয়েছেন তিনি। শুধু খাবারের অভাব নয়, অক্সিজেনের অভাবও তৈরি হয়েছে। ইভানোতে আটকে পড়েছেন দুর্গাপুরের বাসিন্দা নেহা খান। দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার অন্তর্গত রাতুড়িয়া গ্রামের ঝুমকি ও রুমকি গঙ্গোপাধ্যায় ইউক্রেনের খারকিব ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন গত ডিসেম্বরে। বর্তমানে সেখানেই আটকে পড়েছেন তাঁরা। জল নেই, আলো নেই, শীতের পোশাকও নেই, টাকা শেষ। একই অবস্থা উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের রামকৃষ্ণ পল্লির পাভেল দাসের। ইউক্রেনের একটি মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তিনি। আটকে পড়েছেন সেখানেই। শিলিগুড়ির বাসিন্দা উস্মীত রায়ও আটকে পড়েছেন ইউক্রেনে। এছাড়াও আরও বহু পড়ুয়া আটকে রয়েছেন সেখানে। বারুদের গন্ধ, বোমের শব্দ, আলো নেই, খাবার নেই, চোখের সামনে যেন মৃত্যুকে দেখছেন তাঁরা। আপাতত রাজ্য সরকারের কন্ট্রোল রুমের সাহায্যে সন্তান ও প্রিয়জনদের ঘরে ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে পরিবার।
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর।