অশান্তিতে অগ্নিগর্ভ রামপুরহাট। আগুনে পুড়ে মৃত্যু অন্তত ৮ জনের। দ্রুত পদক্ষেপ প্রশাসনের। গঠিত হল সিট। সরানো হল OC, SDPO-কে। রামপুরহাট কাণ্ডে রিপোর্ট তলব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের। রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় দলও। একযোগে CBI-NIA তদন্তের দাবি শুভেন্দুর। আদালতের দ্বারস্থ বিজেপি। আগামী দিনে সব শূন্যপদ পূরণ করবে রাজ্য। দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস ব্রাত্য বসুর। সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা জিইয়ে রাখল মিতালির ভারত।
হেডলাইন:
আরও শুনুন: 21 মার্চ 2022: বিশেষ বিশেষ খবর- ‘মাথা নত করব না’, ইডি-র ম্যারাথন জেরা শেষে বিজেপিকে তোপ অভিষেকের
আরও শুনুন: 20 মার্চ 2022: বিশেষ বিশেষ খবর- ‘মাথা নত করব না’, ইডির তলবে দিল্লি যাওয়ার আগে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের
বিস্তারিত খবর:
1. রাজনৈতিক অশান্তিতে অগ্নিগর্ভ বীরভূমের রামপুরহাট। সোমবার রাতের অন্ধকারে বগটুই গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় অন্তত ৮ জন গ্রামবাসীর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত গোটা এলাকা। সোমবারই রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ খুন হন বরশাল গ্রামের উপপ্রধান ভাদু শেখ। রাত বাড়তেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে। এরপরই ঘটে অগ্নিসংযোগের ঘটনা। এতজনের মৃত্যুর খবর পেয়েই দ্রুত পদক্ষেপ করে প্রশাসন। নবান্নে জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি। গোটা ঘটনার রিপোর্ট তলব করা হয় নবান্নের তরফে। পুরো ঘটনার তদন্তের তৈরি করা হয় বিশেষ তদন্তকারী দল SIT. দায়িত্ব, কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ক্লোজ করা হয় রামপুরহাট থানার ওসি, আইসিকে। অপসারিত এসডিপিও। ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্তের কাজে তদারকি করেন বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রামপুরহাটে যান রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য জানান, এই ঘটনার পিছনে রাজনীতির যোগ নেই। গ্রাম্য বিবাদ বা পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরেই এমনটা ঘটে থাকতে পারে। তবে সবটাই তদন্তসাপেক্ষ। এ নিয়ে বিধানসভায় বিবৃতি দিয়ে রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, ”এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। রাজ্যকে বদনাম করার জন্য এটি করা হয়েছে।” মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে টুইটে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে ফের সরব হন। এ বিষয়ে মুখ্যসচিবের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি।
এদিকে ঘটনা নিয়ে চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। তৃণমূলের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, বগটুই গ্রামে অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। একই বক্তব্য জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলেরও। তিনি শর্ট সার্কিটে বিপত্তির দাবি তুলেছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অবশ্য এতজনের মৃত্যুর মতো মর্মান্তিক ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে দায়ী করে মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেছেন। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের দাবি, ওই এলাকায় বালিখাদান, কয়লাখাদানে লুটের টাকার ভাগ নিয়ে বচসা, তার জেরে এই গণহত্যা। সব মিলিয়ে রামপুরহাট নিয়ে তপ্ত রাজ্যের রাজনীতিও। এরই মধ্যে নিরাপত্তার অভাবে গ্রাম ছাড়লেন ভাদু শেখের পরিবার।
2. বগটুই গ্রামের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তার জবাব দিয়ে রাজ্যপালকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল। রিপোর্ট চেয়ে পাঠান মুখ্যসচিবের কাছেও। সেই প্রেক্ষিতেই চিঠি মমতার। রামপুরহাটের ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ হিসেবে উল্লেখ করে মমতা লিখেছেন, “আপনি যে ধরনের মন্তব্য করেছেন, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আপনার মন্তব্য নিরপেক্ষ তদন্তে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সাংবিধানিক পদে থেকেও এই ধরনের মন্তব্য কার্যত অসাংবিধানিক।” পাশপাশি মুখ্যমন্ত্রীর লেখেন,”বিজেপি শাসিত রাজ্য-সহ দেশের অন্য কোথাও এধরনের ঘটনা ঘটনা আপনি নীরব থাকেন। আর বাংলাতে কিছু ঘটলেই সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।” রাজ্যপালের বিবৃতি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেও দাবি করেছেন তিনি। এই ঘটনায় রাজ্য কী কী পদক্ষেপ করেছে তাও চিঠিতে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ব্যাখ্যা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাৎপর্যপূর্ণভাবে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে উঠে এসেছে সোমবার রাতে বগটুই গ্রামে খুন হওয়া তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখের কথাও। তার পরই রাতে আগুনে পুড়ে খাক হয়ে যায় গ্রামের একাধিক বাড়ি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “রাজ্যকে অপদাস্থ করতে, বাংলার ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করতে এটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রও হতে পারে। তদন্ত করে আসল সত্যটা উদঘাটন করা হবে।”
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর।