অযোধ্যায় প্রাণপ্রতিষ্ঠা রামলালার। মন্দির উদ্বোধন করে ‘ভবিষ্যৎ ভারতের’ ছবি আঁকলেন মোদি। শুভেচ্ছা রাষ্ট্রপতির, আবেগে ভাসলেন তারকারাও। সংহতির বার্তা দিতে রাজপথে মমতা। ধর্মের রাজনীতি নিয়ে বিজেপিকে তোপ নেত্রীর। মিছিলে হাঁটলেন অভিষেক, থাকলেন একাধিক ধর্মগুরুও। লোকসভার আগে ‘ইন্ডিয়া’ জোট নিয়ে বাড়ল জট। রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার সম্প্রচার নিয়ে অশান্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
হেডলাইন:
আরও শুনুন: 21 জানুয়ারি 2024: বিশেষ বিশেষ খবর- নিরাপত্তার চাদরে মোড়া অযোধ্যা, মন্দির চত্বরে র্যাফ-কমান্ডোর ভিড়
বিস্তারিত খবর:
1. মহা সমারোহে অযোধ্যায় রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা। উপবাস করে প্রধান যজমান হিসেবে পুজো দিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। সমস্ত প্রথা মেনেই সারলেন পুজো, করলেন আরতি-ও। অযোধ্যায় এই রামমন্দির প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গেই ‘সমর্থ, সক্ষম, ভব্য, দিব্য ভারত’ প্রতিষ্ঠিত হল, এমনটাই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন মন্দির থেকেই জাতির উদ্দেশে ভাষণে ভবিষ্যৎ ভারতের ছবিও আঁকলেন তিনি। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধনে এক নতুন ভারত গড়ার বার্তাও ফুটে উঠল তাঁর কথায়। বললেন, রাম কোনও বিভেদের সূচক নন, বরং সকল সমস্যার সমাধান। তাঁর প্রস্তাবিত রামরাজ্যে কোনও বিভেদ থাকবে না বলেই দেশবাসীকে আশ্বস্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী। রাম মন্দির আন্দোলনের চূড়ান্ত প্রাপ্তির দিন হিসাবেই শুধু এই দিনটিকে সীমাবদ্ধ করলেন না প্রধানমন্ত্রী। বরং এই দিন থেকেই যে দেশে নতুন সময়পর্বের সূচনা হল, তা-ও স্পষ্ট করে দেন।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর হাতে রামমন্দিরের রেপ্লিকা তুলে দেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মন্দির উদ্বোধনের আগে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও। এদিকে রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে তারকাদের ভিড় জমল অযোধ্যায়। একদিকে উচ্ছ্বাসে ভাসলেন শচীন তেন্ডুলকর থেকে সাইনা নেহওয়াল-রা, অন্যদিকে ঠান্ডা লড়াই ভুলে রাম নামে একাকার হল বলিউড ও দক্ষিণ। অমিতাভ বচ্চন, অনুপম খের, রণবীর-আলিয়া, ভিকি-ক্যাটরিনার পাশাপাশি রজনীকান্ত, রামচরণও শামিল হলেন রামবন্দনায়। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই ছিল নানা আয়োজন। অয্যোধ্যার প্রাণপ্রতিষ্ঠার রেশ ছড়িয়ে পড়ল গোটা দেশেই।
2. অযোধ্যায় রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিনেই বঙ্গে সংহতির বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিয়ে পথে নামেন মমতা। তাঁর নেতৃত্বে গুরুদ্বার, গির্জা, মসজিদ ঘুরে পার্কসার্কাস মোড় পর্যন্ত এগোয় সংহতি মিছিল। সেখানে সংহতি মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-ও। ছিলেন বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিরাও। মঞ্চ থেকে সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশে চলতে থাকা ধর্ম-রাজনীতির বিরুদ্ধে কার্যত তোপ দেগে মমতা জানান, ভোটের নামে দেশটাকে বিক্রি করছে কয়েকজন। ভোটের আগে ধর্মে উসকানি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাংলা কিংবা দেশ, কোনও কিছুই ভাগ করা চলবে না। এদিন বিজেপিকে নারীবিদ্বেষী বলেও কটাক্ষ করেন মমতা। তাঁর সাফ কথা, তিনি রামের বিরুদ্ধে নন, তবে একযোগে রাম-সীতার পক্ষে। এদিকে নাম না করেও অভিষেক স্পষ্ট নিশানা করলেন বিজেপিকে। বললেন, ”আমরা ধর্মকে সামনে রেখে রাজনীতি করি না। গোটা দেশে যখন ধর্মের নামে অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছে, তখন বাংলায় সব ধর্মের ঐক্য সংহতি দেখিয়েছে।” অযোধ্যার আয়োজনকে কটাক্ষ করে তাঁর বক্তব্য, “ধর্মাচরণ আমি বাড়িতে পালন করব। কিন্তু মানুষকে পরিষেবা দেব মানবধর্ম দিয়ে। ধর্মের নামে নয়, কাজের নামে, ১০০ দিনের টাকার নামে ভোট দিতে হবে।” রাম মন্দির উদ্বোধনে আমন্ত্রণ পেলেও অযোধ্যা যাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে সংহতি মিছিল করেই ধর্মীয় ভেদাভেদের বিরুদ্ধে দিলেন সমন্বয়ের বার্তা।
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর।