গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বারবার ভেসে এসেছে সাম্প্রদায়িক হিংসার খবর। কখনও মসজিদের ভিতরে হিন্দু ধর্মের নিদর্শন খোঁজার চেষ্টা হয়েছে তো কখনও ছড়িয়েছে লাউড স্পিকার বিতর্ক। কখনও বা হজরত মহম্মদকে কেন্দ্র করে নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশ। ‘কালী’ তথ্যচিত্রের পোস্টার ঘিরেও ছড়িয়েছিল উত্তেজনা। এহেন অসহিষ্ণুতার আবহেই এক ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিল আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি। নতুন শিক্ষাবর্ষে তাঁরা শুরু করল এক অন্য ধরনের পাঠ্যক্রম। আসুন, সে ব্যাপারেই শুনে নেওয়া যাক।
জ্ঞানের আলোই একমাত্র পারে অন্ধকার তাড়াতে। তা সেই ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার হোক বা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ। কোনও কিছুকে প্রত্যাখ্যান বা নিন্দা করার আগে তো প্রয়োজন সে বিষয়টিকে জানা। আর এবার তেমন পদক্ষেপই করল উত্তরপ্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়। নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে এক অভিনব পাঠ্যক্রম শুরু হয়েছে সেখানে। যেখানে অন্য ধর্ম সম্পর্কে জানা বা বোঝার সুযোগ পাবেন পড়ুয়ারা। মিলবে তুলনামূলক আলোচনার সুযোগও।
আরও শুনুন: ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ উদ্যোগে শামিল নয় RSS! আক্রমণ কংগ্রেসের, কী জবাব সঙ্ঘের?
এতদিন পর্যন্ত শুধুমাত্র ইসলামিক পড়াশোনারই সুযোগ ছিল আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে নয়া শিক্ষাবর্ষ থেকে সনাতন ধর্ম সম্পর্কে পড়াশোনার সুযোগও মিলবে সেখানে। শুধু তাই নয়, অন্যান্য ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কেও খুঁটিয়ে জানতে পারবেন পড়ুয়ারা। বেদ, পুরাণ, উপনিষদ, রামায়ণ, গীতা থেকে শুরু করে সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিষয় পড়ার সুযোগ যেমন থাকবে, তেমনই বৌদ্ধ, জৈন, শিখ এবং অন্যান্য ধর্ম সম্পর্কেও পড়তে পারবেন পড়ুয়ারা। স্নাতকোত্তর স্তরে সম্প্রতি এমনই পাঠক্রম যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
আরও শুনুন: শিবের বন্দনা গাওয়া ‘পাপ’, এবার মুসলিম ধর্মগুরুদের রোষের মুখে শিল্পী
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র এম শেফলি কিদওয়াই জানান, কোর্সটি চালু করতে ইতিমধ্যেই প্রস্তাব পেশ করেছেন ইসলামিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের চেয়ারপার্সন। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই পড়ুয়ারা ওই বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি নতুন শিক্ষাবর্ষে বেশ কিছু বদল এনেছেন এএমইউ কর্তৃপক্ষ। ইসলামিক স্টেট তথা আইএস-এর মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে সমর্থনের অভিযোগে দুই লেখকের বইকে পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই দুই লেখকের বই বাদ দেওয়ার দাবি নিয়ে এর আগে কুড়ি জন শিক্ষাবিদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে একটি চিঠি লেখেন। নয়া শিক্ষাবর্ষে কার্যকর হতে চলেছে সেই সিদ্ধান্তও।