গ্রামের এক বাড়ির নিচে পোঁতা আছে ১০০টি মৃতদেহ! এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পেয়েই সেই বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। গোয়েন্দা কুকুর নিয়ে সঙ্গে যোগ দেয় বিশেষ ফরেনসিক দল। রাতারাতি খুঁড়েও ফেলা হয় বাড়িটির উঠোন। তারপর, কী পাওয়া গেল সেখানে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সার দিয়ে গ্রামে ঢুকছে পুলিশের ভ্যান। সাতসকালে এমন দৃশ্য দেখে খানিক চমকেই উঠেছিলেন গ্রামবাসীরা। মাটির পথ ধরে এগিয়ে সেই সবকটি গাড়ি নির্দিষ্ট একটি বাড়ির সামনে গিয়ে থামে। মুহূর্তের মধ্যে চারিদিক পুলিশে ছয়লাপ। গাড়ি থেকে নেমেই সেই বাড়ির উঠোনে তাঁরা শুরু করেন মাটি খোঁড়ার কাজ। অনেক প্রশ্নের পর জানা যায়, তাঁরা খবর পেয়েছেন এই বাড়ির নীচে নাকি ১০০টি দেহ পোঁতা রয়েছে।
আরও শুনুন: হাত ফসকে খাবার পড়ল মেট্রোয়, নিজে হাতে পরিষ্কার করে প্রশংসা কুড়োল খুদে
সম্প্রতি এমনই কাণ্ডের সাক্ষী থাকল উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলার গাদোয়ার থানার অন্তর্গত রাতসার গ্রাম। জানা গিয়েছে, সেখানকার বাসিন্দা অনু সিংহের বাড়ির নিচে ১০০টি দেহ রয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছিল কমিশন। সেই অভিযোগ যাচাই করে দেখতেই পুলিশ নিয়ে উত্তরপ্রদেশের মানবাধিকার কমিশনের কর্তারা হাজির হয়েছিলেন এই গ্রামে। তবে শুধুমাত্র পুলিশ নয়, তাঁদের সঙ্গে ছিল একটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দল ও বেশ কিছু গোয়েন্দা কুকুর। সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে শালিনী সিংহ নামে এক কানাডা নিবাসী ভারতীয় মহিলা কমিশনের কাছে এক বিস্ফোরক অভিযোগ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। নিজেকে সিংহ পরিবারের আত্মীয় হিসেবে পরিচয় দিয়ে ওই মহিলা দাবি করেন রাতসার গ্রামের এই বাড়িটির নিচে প্রায় ১০০টি দেহ পোঁতা আছে। সেগুলি নাকি ১৯৯০ থেকে ১৯৯৫-এর মধ্যে পোঁতা হয়েছিল। তারপর সেখানে অনেক গাছ লাগানো হয় বলেও জানিয়েছিলেন শালিনী। এমন অভিযোগ শুনেই পুলিশকে খবর দেয় কমিশন। তৎক্ষণাৎ একটি তদন্তকারী দল গঠন করে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মতো এই তদন্তকারীর দল অনু সিংহের বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু সারাদিন ধরে খুঁজেও কোনও দেহাবশেষ পাননি তাঁরা। এমনকি বাড়ির উঠোন খুঁড়েও কিছুই দেখা যায়নি।
আরও শুনুন: মন্দিরে উঠতে কষ্ট ভক্তদের, পাহাড় কেটে নিজেই ৪০০ সিঁড়ি বানালেন ব্যক্তি
পুলিশের এই আচমকা হানায় রীতিমতো অবাক হন বাড়ির মালিক অনু সিংহ। প্রথমে তদন্তকারীর দলকে বাড়ির উঠোন খোঁড়ার কাজে বার বার বাধা দেন তিনি। বিনা নোটিসে এ ভাবে খোঁড়াখুঁড়ি কেন করা হচ্ছে, সে বিষয়েও জানতে চান তিনি। কিন্তু তাঁর কোনও প্রশ্নের জবাবই কমিশনের কর্তারা দেননি। পরে সব জানার পর তিনি বলেন, অভিযোগকারী শালিনিকে তিনি আদৌ চেনেন না। এদিন তদন্তকারী দলের সঙ্গে উপস্থিত থাকলেও নিজের মুখ দেখাতে চাননি শালিনী। কেনই বা হঠাৎ এমন অভিযোগ করেছেন তিনি সে বিষয়টিও অনু-র কাছে পরিষ্কার নয়। এমনকি অভিযোগকারীর দেখানো কোন প্রমাণের উপর ভিত্তি করে কমিশন এমন অভিযান চালালো সে উত্তরও কমিশন তাঁকে দেয়নি। যদিও এদিনের ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট কমিশনের দপ্তরে জমা দেওয়া হবে, সবশেষে এমনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তদন্তকারী দলে থাকা এক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার।