তিনি সুন্দরী। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর নাম। অর্থাৎ বলতে গেলে গোটা দুনিয়াই তাঁকে চেনে। অথচ পুরুষসঙ্গী খুঁজতে বেরিয়ে বেশ কাঠখড়ই পোড়াতে হয় তাঁকে। আসলে যে কারণে তাঁর খ্যাতি, সেটিই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এক্ষেত্রে। তাঁর উচ্চতাই তাঁকে এনে দিয়েছে সম্মান, আবার তাই-ই বাধ সেধেছে তাঁর রোমান্সে। বিশ্বের সবথেকে লম্বা মডেলের জীবনের গল্পটা এরকমই অদ্ভুত। আসুন শুনে নিই।
নাম তাঁর একাতারিনা লিসিনা। রাশিয়ান এই মহিলাকে গোটা বিশ্ব চেনে একটি বিশেষ কারণে। তাঁকে সামনে থেকে না দেখলেও, শুধু তাঁর ছবি দেখলেই যে জিনিসটা চোখা চোখ টানে, তা হল তাঁর উচ্চতা। কৌতূহলী হয়ে যদি কেউ খোঁজ করেন তো জানবেন, একাতারিনার উচ্চতা ৬ ফুট ৯ ইঞ্চি। অবাক হচ্ছেন! এত লম্বা সচরচার কেউ হন না। আর হন না বলেই তো বিরল এক খেতাব তাঁর দখলে। তিনিই বিশ্বের সবথেকে লম্বা মডেলের তকমাধারী।
আরও শুনুন: পাহাড়ের বুকে আঁকা সাত রঙের আল্পনা যেন! কোথায় গেলে দেখা পাবেন রামধনু পাহাড়ের?
এরকম উচ্চতা যে তিনি পারিবারিক সূত্রেই পেয়েছেন, তা বলাই যায়। একাতারিনার বাবার উচ্চতা ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি আর মা ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা। প্রত্যাশিত ভাবেই একাতারিনা ছোট থেকেই ছিলেন বেশ লম্বা। শেষমেশ তিনি মাথায় ছাড়িয়ে গিয়েছেন প্রায় সবাইকে। এমনকী বেশিরভাগ পুরুষও তাঁর উচ্চতার ধারেকাছে যে নেই, তা তো সহজেই বোঝা যায়। আর এইখানেই হয়েছে সমস্যা। সম্প্রতি নিজের জীবনের গল্প শুনিয়েছেন বিশ্বের সবথেকে লম্বা মডেল। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর জীবনে উচ্চতা যেমন তাঁকে খ্যাতি দিয়েছে, তেমন সমস্যাতেও ফেলেছে। আর সেই সমস্যা মূলত তাঁর জীবনের রোমান্সে। হ্যাঁ, মনের মতো পুরুষ সঙ্গী পেতে গিয়ে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়েছে একাতারিনাকে। সাধারণ ভাবে পুরুষদের উচ্চতা হয় ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি মতো। আরও লম্বা পুরুষ যে হন না, তা নয়। তবে বোঝাই যাচ্ছে যে, তাঁর উচ্চতা স্পর্শ করতে পারেন না প্রায় কেউই। উচ্চতা নিয়ে একাতারিনার অবশ্য সেই অর্থে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু গোলমাল অন্য জায়গায়। হয়তো কোনও পুরুষকে তাঁর মনে ধরেছে। কিন্তু তাঁর উচ্চতা একাতারিনার তুলনায় এতটাই কম যে, সম্পর্ক পাতাতে গিয়ে তিনি একটু থমকেই যান। অথবা তিনি না থমকালেও সেই পুরুষটিই পিছিয়ে যান। কেননা একাতারিনার অভিজ্ঞতা বলছে, বেশিরভাগ পুরুষই তাঁর থেকে বেশি লম্বা মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক পাতাতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না।
আরও শুনুন: মেকি নয় সত্যি, গোলাপি জলের এই হ্রদ পৃথিবীর অন্যতম বিস্ময়
যদিও একাতারিনা নিজে বিশ্বাস করেন যে, একটা ঠিকঠাক সম্পর্কে উচ্চতা সেই অর্থে বড় কোনও ফ্যাক্টর নয়। তাঁর পুরুষসঙ্গীটি তাঁর খেয়াল রাখবে, যত্ন নেবে আর যদি সম্ভব হয় তো অর্থনৈতিক ভাবেও পাশে থাকবে- এরকমই ছাপোষা প্রত্যাশা এই বিশ্বখ্যাত মডেলের। তবে যে ব্যাপারটিকে তিনি সবথেকে গুরুত্ব দেন, তা হল সম্পর্কের রসায়ন আর মনের যোগাযোগ। তাঁর বক্তব্য, যদি মনের সঙ্গে মনের সংযোগটা জোরালো হয়, তাহলে কে কেমন দেখতে, কে কতটা লম্বা বা বেঁটে সে সব হাওয়ায় উড়ে যায়। যদিও সবই হাওয়ায় ওড়ে না, কেননা উচ্চতার জন্যই মনের মতো পুরুষসঙ্গী পেতে তাঁকেও যে কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে, সেই গল্পই এতদিনে শুনিয়েছেন তিনি।
আরও শুনুন: সমুদ্রসৈকতের রং নাকি টকটকে লাল! পর্যটকদের বিস্মিত করে এই আশ্চর্য সৈকত
একাতারিনার নাম লেখা হয়েছে গিনেস বুকেও। তারও নেপথ্যে তাঁর উচ্চতাই। পায়ের উচ্চতা ৪ ফুট ৩ ইঞ্চি, যা সবথেকে লম্বা পা – এরকমই স্বীকৃতি গিনেস বুকের। একসময় ভালো বাস্কেটবল খেলতেন একাতারিনা। অলিম্পিকে ব্রোঞ্জও পেয়েছিলেন। শুধু শারীরিক কারণে লম্বা নন, নানা গুণেও যে তিনি নিজেকে বেশ উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন – তাও সত্যি।