পৃথিবীর সবচেয়ে দুঃখী গরিলার তকমা পেয়েছে বুয়া নোই। এই গরিলাটির দুঃখ ঘোচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন দেশবিদেশের পশুপ্রেমীরা। কিন্তু কিছুতেই কিছু হওয়ার নয়। কারণ সে আসলে মুক্তি চায়। জীবনের ৩২ বছর বন্দিদশাতেই কেটেছে তার। কিন্তু তাকে মুক্তি দিতে যে নিতান্তই নারাজ তার মালিকেরা। সেই কারণেই কোনও মতেই দুঃখ ঘুচছে না এই গরিলাটির।
বুয়া নোই, এই নামের মানে আসলে ছোট্ট পদ্ম। কিন্তু নামের উপযুক্ত আদর কখনোই জোটেনি এই প্রাণীটির। জানা যায় ১৯৯০ সালে জার্মানি থেকে ঠাঁইনাড়া হয়ে থাইল্যান্ডের পাতা শপিং মলে এসে পৌঁছেছিল বুয়া নোই। যখন তার বয়স মাত্র এক বছর। এই শপিং মলের উপরেই রয়েছে একটি ছোট্ট চিড়িয়াখানা। দীর্ঘ এতগুলো বছর সেখানেই বন্দি হয়ে দিন কাটছে অসহায় প্রাণীটির। তার খাঁচাটিও ছোট্ট এবং নোংরা বলে বারেবারে প্রতিবাদ জানিয়েছেন পশুপ্রেমীরা। এই অবস্থাকে ভয়াবহ এবং নিষ্ঠুর বলেছেন খোদ পেটা-র এশিয়া দপ্তরের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জেসন বেকার। প্রাণীটিকে কোনও অভয়ারণ্যে ছেড়ে দেওয়ার আরজি জানিয়েছেন তাঁরা, যেখানে তার শারীরিক এবং মানসিক চাহিদাগুলি পূরণ হওয়া সম্ভব। কিন্তু কোনও কিছুতেই লাভ হয়নি। তাকে মুক্তি দিতে একান্তই নারাজ ওই চিড়িয়াখানার মালিক পক্ষ। যেহেতু প্রাণীটি আইনি ভাবে তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হচ্ছে, সেই কারণে প্রশাসনেরও হাত পা বাঁধা। জানা গিয়েছে, একবার ৭ লক্ষ ডলারের বিনিময়ে বুয়া নোই-কে বিক্রি করতে রাজি হয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অল্প সময় পরেই তারা সিদ্ধান্ত বদলে ফেলে। বর্তমানে ওই গরিলাটির দাম হিসেবে ৭ লক্ষ ৮০ হাজার ডলার, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা ধার্য করে বসেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। থাইল্যান্ডের পরিবেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ক্রাউড-ফান্ডিং করে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কর্তৃপক্ষের অনমনীয় মনোভাবের দৌলতে এখনও ওই ছোট্ট খাঁচায় একলার জীবন কাটাতেই বাধ্য হচ্ছে ‘লিটল লোটাস’ ওরফে বুয়া নোই।