বিশ্বের সবচেয়ে হিংসুটে মহিলা নাকি তিনিই। কিন্তু প্রেমের ক্ষেত্রে সেই হিংসা যে কী গোল পাকাতে পারে, সে কথা হাড়ে হাড়ে জানেন তাঁর স্বামী। সেই হিংসার জেরে যে প্রায়ই লাই ডিটেক্টর টেস্টে বসতে হয় তাঁকে। কিন্তু কেন? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
অনেকেই বলেন, প্রেমের ক্ষেত্রে একটু আধটু হিংসা হল রান্নায় নুন দেওয়ার মতো। তা না হলে যেন স্বাদ খোলে না ঠিক। অর্থাৎ কিনা, সঙ্গী অন্য কারও প্রতি বাড়তি মনোযোগ দিচ্ছেন কি না, তা নিয়ে একটু মান অভিমান তো করাই যায়। দুজনের পারস্পরিক বিশ্বাস কতখানি মজবুত, তাও যাচাই করে নেওয়া চলে এইভাবেই। কিন্তু কথা হচ্ছে, সিনেমার পর্দায় এই রোমান্টিক হিংসাকে যতই রোমান্টিসাইজ করা হোক না কেন, বাস্তবে বিষয়টি বেশ গোলমেলে। বাইরের দুনিয়ার প্রতিযোগিতা ঠেলে ঘরের মধ্যে রোজ রোজ পরীক্ষা দেওয়া যেমন ঝক্কির, তেমনই অন্যজন আপনাকে কেবলই ঠকাচ্ছেন বলে ভাবলে আপনিই বা শান্তি পাবেন কেমন করে! ঠিক তেমনটাই ঘটেছে এই মহিলা ও তাঁর স্বামীর ক্ষেত্রে। সত্যি সত্যিই, স্ত্রীর কাছে হামেশাই পরীক্ষায় বসতে হয় এই ব্যক্তিকে। তবে খাতায় কলমে পরীক্ষা নয়, দিতে হয় লাই ডিটেক্টর টেস্ট। অর্থাৎ কিনা, স্বামী মিথ্যে বলছেন কি না, তা একেবারে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে দেখে নেন মহিলা। তা আর হবে না? তিনি যে বিশ্বের সবচেয়ে হিংসুটে মহিলা। স্বামী অন্য কারও প্রতি আকৃষ্ট হলে যে হিংসায় বুক ফেটে যাবে তাঁর। সেই কারণেই এহেন পরীক্ষার আশ্রয় নিয়েই সম্পর্কটি টিকিয়ে রেখেছেন তিনি।
আরও শুনুন: নিরাপত্তাকর্মী হয়ে কটু কথা শুনেছেন, বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়ে জবাব দিল মেয়ে
গল্প নয়, একেবারে সত্যি ঘটনা। ইংল্যান্ডের এই মহিলার নাম ডেবি উডস। বয়স বছর ৫২। বর্তমান স্বামী স্টিভের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শুরু হয়েছিল ২০১১ সাল নাগাদ। সোশাল মিডিয়ার সম্পর্ক শেষমেশ বিয়ে পর্যন্তও গড়ায়। কিন্তু হলে হবে কী, স্বামীকে পুরোপুরি বিশ্বাস আর কিছুতেই করে উঠতে পারেন না মহিলা। তাই প্রতিবার স্বামী ঘরে ফেরার পরেই তাঁকে বসতে হয় নিজের বিশ্বস্ততার প্রমাণ দিতে। এমনিতে ফোন, ই-মেল চেক করা, ফোনে বা ল্যাপটপে নানারকম গোয়েন্দাগিরির অ্যাপ লাগানো তো রয়েছেই। কিন্তু তাতেও মন ওঠে না, তাই পলিগ্রাফ টেস্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মহিলা।
আরও শুনুন: পোষ্যের ইচ্ছেখুশি নাম রাখছেন? সাবধান! আইন কিন্তু সব দেখছে
আসলে ওথেলো সিনড্রোমে ভুগছেন এই মহিলা। শেক্সপিয়রের বিখ্যাত নাটকে যেমন স্ত্রীকে সন্দেহ করা থামাতে পারত না ওথেলো, আর শেষ পর্যন্ত সন্দেহের বশে স্ত্রীকে খুন করেই নিশ্চিন্ত হয় সে, অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণতাকে তার নামেই চিহ্নিত করা হয়। এই ওথেলো সিনড্রোমের কারণেই প্রাণ ওষ্ঠাগত এই বিদেশি দম্পতির। তবে রোগ ধরা পড়ার পর চিকিৎসা শুরু হয়েছে ওই মহিলার, সেটাই আপাতত ভরসা তাঁর সঙ্গীর।