পরা যাবে না কোনও জামাকাপড়। সম্পূর্ণ নগ্ন হয়েই কাটাতে হবে পাঁচ দিন। নিয়ম অবশ্য স্রেফ মহিলাদের জন্যই। তবে না মানলে হতে পারে চরম বিপদ। দীর্ঘদিন ধরে তাই এমন পালন করে আসছেন দেশের এই গ্রামের ভারতের মহিলারা। কোথায় রয়েছে এমন গ্রাম? আসুন শুনে নিই।
ভারতের মহাকাশযান পৌঁছে গিয়েছে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে। তবে শিক্ষার আলো এখনও পৌঁছায়নি দেশের সর্বত্র। তারই পরিচয় মেলে উত্তরের এই গ্রামে। সেখানে এখনও বিশেষ এক প্রথা মেনে, নগ্ন হয়ে দিন কাটাতে হয় মহিলাদের। টানা পাঁচদিন চলে সেই অদ্ভুত প্রথা।
আরও শুনুন: প্রদর্শনীর দোরগোড়ায় দুই নগ্ন মডেল, স্পর্শ করেই ঢুকতে হবে দর্শকদের
কথা বলছি, হিমাচল প্রদেশের পিনি গ্রামের এক শতাব্দি প্রাচীন প্রথা সম্পর্কে। এমনিতেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মের নামে বিভিন্ন অদ্ভুত প্রথার চল রয়েছে। কোথাও দেবতাকে সন্তুষ্ট করতে নিরীহ পশুর বলি দিতে হয়, কোথাও আবার পুজোর সময় শিশুদের গায়ে সুচ ফোটানো নিয়ম। কিছুক্ষেত্রে বর্ষার আগেও একাধিক বিচিত্র নিয়ম পালনের চল রয়েছে। তবে হিমাচলের এই গ্রাম সেই সবকিছুকে ছাপিয়ে যায়। এখানেও বর্ষার শুরুতেই মানা হয় ওই অদ্ভুত নিয়ম। কিন্তু তার সঙ্গে বৃষ্টির বিশেষ সম্পর্ক নেই। পিনি গ্রামের এক বিশেষ উপজাতির মধ্যেই এই নিয়ম পালনের চল রয়েছে। আসলে তাদের আরাধ্যকে তুষ্ট করার উদ্দেশেই এই নিয়ম পালনের চল। প্রথা অনুযায়ী বছরে পাঁচ দিন গ্রামের মহিলাদের সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে কাটাতে হয়। এই সময় তাদের কথা বলাও বারণ। থাকতে হয় ঘরের ভিতরেই। লজ্জা ঢাকতে কেউ কেউ উলের তৈরি ওড়না ব্যবহার করেন, কিন্তু পোশাক পরা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। কথিত আছে, একসময় কোনও এক অসুর গ্রামের মহিলাদের উপর চরম অত্যাচার চালিয়েছিল। প্রায় প্রত্যেকের সম্ভ্রম লুঠ করেছিল সেই দস্যু। তবে সেই অসুরকে হত্যা করে গ্রামের প্রধান আরাধ্য হয়ে ওঠেন ‘লাহু গন্ধ’ নামে এক দেবতা। প্রতি বছর বর্ষার শুরুতে এই দেবতার পুজোতেই মেতে ওঠেন গ্রামবাসী। আর এই সময়েই মানতে হয় ওই অদ্ভুত পোশাক না পরার নিয়ম।
আরও শুনুন: কন্ডোম পরে সঙ্গমেই পকেটে ১০ হাজার! মিলবে কোন শর্তে?
তবে গ্রামের পুরুষদেরও এই সময় মেনে চলতে হয় বিশেষ কিছু নিয়ম। তাঁরাও এই বিশেষ সময় মদ্যপান থেকে বিরত থাকেন। এমনকি এইসময় মাংস খাওয়ারও নিয়ম নেই। থাকতে হয় সাত্ত্বিকভাবে। তবে নিয়ম না মানলে হতে পারে চরম বিপদ। স্থানীয় বিশ্বাস এই সময় নির্দিষ্ট প্রথা না মানলে দেবতার রোষে চরম সর্বনাশ হতে পারে। তবে বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই এই নিয়ম কিছুটা হলেও শিথিল করেছেন বলেই শোনা যায়। সম্পূর্ণভাবে নগ্ন থাকতেয় চান না কেউ কেউ। তবে গ্রামের বয়স্ক মহিলারা এখনো কঠোরভাবে মেনে চলেন নিয়ম। দীর্ঘদিন ধরে নিয়ম মেনে এই প্রথা পালন করে আসছেন তাঁরা।