পা নেই, তাতে কী! দুই হাতে ভর করেই স্কেটিং করেন তরুণী। আর তাতেই গড়লেন বিশ্ব রেকর্ড। তাঁর কাহিনি অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে সকলকেই। কার কথা বলছি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
আসলে শরীর নয়, প্রতিবন্ধকতা থাকে মনে। তাই মনের ইচ্ছা থাকলে যে কোনও বাধাই অনায়াসে জয় করে ফেলা যায়। এ কথাই যেন ফের প্রমাণ করে দিলেন কানিয়া সেসর। বয়স মাত্র ৩০। এর মধ্যেই বিশ্ব রেকর্ডের খাতায় নাম তুলেছেন তিনি। তাও আবার এমন এক নজির গড়ে, যা ভাবলেই অবাক লাগে।
ঠিক কী করেছেন কানিয়া?
এক কথায় বললে, স্কেট বোর্ডে নিজের অসাধারণ দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। তবে সাধারণ মানুষ যেভাবে পায়ে করে স্কেট বোর্ড চালান, ইনি তেমনটা করেননি। যা করেছেন তা সম্পূর্ণভাবে দুই হাতে ভর করে। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। আমেরিকার এই তরুণী মাত্র ১৯.৬৫ সেকেন্ডে বিশেষ দূরত্ব পার করেছেন। তাতেই ২০২৫-এর বিশ্ব রেকর্ডের খাতায় নাম উঠেছে তাঁর। জন্ম থেকেই দুই পা নেই কানিয়ার। সম্ভবত সেই কারণেই তাঁকে অস্বীকার করে তাঁর পরিবার। এমনকি রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া হয় সদ্যোজাত কানিয়াকে। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন এক মহিলা। তাঁর কাছে কানিয়া বেশিদিন থাকেনি। আমেরিকার এক ধনী দম্পতি তাঁকে দত্তক নেয়। সেই পরিবারেই কানিয়ার বড় হওয়া। প্রতিবন্ধকতার সঙ্গেই বেড়ে ওঠা। তাই আলাদা করে এই নিয়ে আক্ষেপ করার সুযোগ হয়নি কখনও। সহজাত ভাবেই পায়ের বদলে হাতকে সচল করেছেন। কিন্তু প্রয়োজনে চলাফেরা করা আর স্কেট বোর্ড চালানো মোটেও এক ব্যাপার নয়। তবু নিজেকে প্রমাণ করার লড়াই চালিয়ে যান কানিয়া।
তবে একদিনেই যে এমন পারদর্শী হয়েছেন তা নয়। প্রথমে সাঁতার, গলফ এইসব খেলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কানিয়া। পড়ে স্কেট বোর্ডে চড়েন। ধীরে ধীরে এই খেলাতেই ভালোবাসা জন্মায় কানিয়ার। সব ছেড়ে এই দিকেই মন নিবেশ করেন। সাফল্য আসতে থাকে। হাতে ভর দিয়ে স্কেটিং করেই সকলকে চমকে দিতে থাকেন কানিয়া। এরইমাঝে একাধিক অস্ত্রোপচার হয় তাঁর শরীরে। তাতেও দমে যাননি। আন্তর্জাতিক পুরস্কার তো ছিলই, এবার জুটল বিশ্ব রেকর্ডের তকমাও। তাঁর এই সাফল্য অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে আগামী প্রজন্মকে। শারিরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে অনেক নতুন কিছু করতে ভয় পান, এঁদের সকলের কাছে উদাহরণ হয়ে উঠলেন কানিয়া।