ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই শপিং করার নেশা মহিলার। তবে স্বপ্নে নয়, সত্যি সত্যিই। ঘুমের মধ্যে যা ইচ্ছে তাই কিনে ফেলেই ঘাড়ে চাপল বিপুল ঋণের বোঝা। কী ঘটল তারপর? শুনেই নিন।
শপিং করতে ভালোবাসেন না, এমন মানুষ কমই। নতুন নতুন জিনিসপত্র কেনাকাটা করে অনেকেরই মন ভালো হয়ে যায়। আবার এর আরও একটা দিকও রয়েছে বইকি। শপিং-এর নেশা থাকে যাঁদের, তাঁরা যে খুব প্রয়োজনের তাগিদে জিনিস কেনেন, এমনটা তো নয়! বরং কিনতে ভালো লাগে বলেই অনেকসময়ই বেশি বেশি জিনিস কেনা হয়ে যায়, বা কেনার তালিকায় ঢুকে পড়ে নিতান্তই অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। কিনে তো ফেললেন, কিন্তু তারপর বিল দেখে মনে হল, না কিনলেও তো হত। এই হতাশাতেও ভোগেন অনেকেই, তবে এই মহিলার হতাশার সঙ্গে বোধহয় কারোরই তুলনা চলে না। কেননা তিনিও শপিং করেন বটে, তবে অনেকটাই অজ্ঞানে। আর সে অবস্থায় বিল যে কোথায় গিয়ে পৌঁছয়, সেদিকেই বা তাঁর হুঁশ থাকবে কেমন করে!
ভাবছেন, ব্যাপারটা ঠিক কী? তাহলে খুলেই বলা যাক বরং।
আরও শুনুন:
‘বেড পারফরম্যান্সে’র জন্য বেতনে কাঁটা শিক্ষকদের! কী ঘটল বিহারে?
বলছিলাম কেলি নাইপসের কথা। ৪২ বছরের এই মহিলা ইংল্যান্ডের এসেক্স অঞ্চলের বাসিন্দা। মাঝে মাঝেই দেখা যায় পরিকল্পনা ছাড়াই কেনাকাটা করে ফেলেন তিনি। আসলে সবটাই ঘটে একরকম স্লিপ ডিসঅর্ডারের কারণে। অর্থাৎ কিনা, ঘুমের একরকমের সমস্যা। তাঁর এমনিতেই স্লিপ অ্যাপনিয়া রয়েছে, অর্থাৎ ঘুমের মধ্যে যখনতখন নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া। আর ২০১৮ সালে ধরা পড়ে, এই মহিলা প্যারাসমনিয়াতে ভুগছেন। এই রোগটিতে যাঁরা ভোগেন, অনেকসময়ই তাঁরা ঘুমোচ্ছেন কি না বোঝা যায় না। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে তাঁরা কথা বলছেন, হাঁটছেন, এমনকি খাবার খাচ্ছেন, এমনটা দেখা যেতেই পারে। অর্থাৎ এমন অনেক কিছুই তাঁরা ঘুমের মধ্যেই করে বসতে পারেন, যা দেখে বোঝার উপায় নেই যে তাঁরা ঘুমোচ্ছেন। মনে হবে জেগেই আছেন বুঝি। কিন্তু আসলে ওই সময়ে তাঁদের মস্তিষ্ক আংশিকভাবে জেগে থাকে। ফলে ঠিক কী করছেন, তা নিয়ে সম্যক জ্ঞান থাকে না রোগীর। জেগে ঘুমিয়ে থাকা বোধহয় একেই বলে। আর এই রোগের বশেই অদ্ভুতরকমের শপিং করে ফেলেন কেলি।
আরও শুনুন:
‘আঙুল ঠিক জায়গায় দিন’, অভিনেত্রীর হস্তমৈথুনের দৃশ্য ঘুরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচনী প্রচারও
যেমন ধরা যাক, একবার গোটা একটা বাস্কেটবল কোর্টই তিনি অর্ডার করে বসেছিলেন। প্লাস্টিকের সেই কোর্টে নেট, পোল, ব্যাকবোর্ড, সবকিছুই ছিল। আরও অনেকের মতোই ফোনে ক্রেডিট কার্ডের যাবতীয় তথ্য জমিয়ে রাখা স্বভাব কেলির, সুতরাং কেনাকাটার জন্য কার্ডের তথ্যও দরকার হয় না। এই ঘুমন্ত কেনাকাটার সুবাদেই কার্ডে প্রায় সোয়া তিন লাখ টাকা ইতিমধ্যেই খরচ করে বসেছেন কেলি। অর্থাৎ এই বিপুল টাকা মিটিয়ে দিতে হবে তাঁকে। এমনকি জালিয়াতের হাতেও টাকা খুইয়েছেন। এই রোগের জন্য আরও কী কী দুর্ভোগ যে তাঁকে পোহাতে হবে, সেই আশঙ্কা নিয়েই প্রতি রাতে ঘুমোতে যান তিনি- এমনটাই আক্ষেপ কেলির।