স্বর্গ আদৌ আছে? মহিলার উত্তর দিব্যি আছে। স্রেফ তত্ত্ব কথা নয়, নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই এমনটা দাবি করেন মহিলা। কিন্তু এমনটা কীভাবে সম্ভব? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মৃত্যুর পর কী হয়? উত্তর খুঁজেছেন অনেকেই। সহমত হতে পারেননি কেউ। বিজ্ঞান এক কথা বলে, তো শাস্ত্র বলে আরেক। তবে একটা ধারণা মোটের উপর প্রচলিত, মৃত্যুর পর স্বর্গ বা নরকে ঠাঁই হয় মানুষের। মুশকিল একটাই, মরণের ওপার হতে ফিরে আসার উপায় নেই। তাই স্বর্গ বা নরকের অনুভূতি কেমন, তা হলফ করে বলতে পারেন না কেউ। ব্যতিক্রম এই মহিলা। মৃত্যুর পরবর্তী সময় নিয়ে দিব্যি ধারণা ছিল তাঁর। তাও একেবারে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার জোরে।
কথা বলছি, শার্লট হোমস সম্পর্কে। মহিলা মার্কিন মুলুকের বাসিন্দা ছিলেন। বর্তমানে মৃত। তবে মৃত্যুর শেষ দিন অবধি দাবি করে গিয়েছেন, সামনে থেকে স্বর্গ দেখার অনুভূতি তাঁর রয়েছে। তার জন্য দায়ী মহিলার শেষ জীবনের একটা ঘটনা। শার্লটের বয়স তখন ৬৮। বুকে ব্যথা নিয়ে ভর্তি হলেন হাসপাতালে। সে দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত। তড়িঘড়ি স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হল। তবে ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। প্রাণ নেই শরীরে, এই দাবিতে শার্লটকে মৃত ঘোষণা করলেন চিকিৎসকরা। প্রায় ১১ মিনিট কাটল এইভাবে। হঠাৎ সম্বিত ফিরে পেলেন শার্লট। উঠে বসলেন। ম্যাজিক নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমন ঘটনার নজির রয়েছে। ক্লিনিকালি ডেড ঘোষণা করে দেওয়ার পরও সুস্থ হয়ে উঠেছেন রোগী। এক্ষেত্রেও বিষয়টিকে স্বাভাবিক বলেই ধরে নেন সকলে। ২ সপ্তাহ হাসপাতালে কাটিয়ে বাড়ি ফেরেন শার্লট। এরপর আরও ৪ বছর দিব্যি বেঁচে ছিলেন তিনি। আর এই সময়টা জুড়ে তাঁর মুখে একটাই বুলি থাকত, আমি স্বর্গ দেখে এসেছি!
শুনে প্রলাপ মনে হলেও, শার্লটের কথা শুনলে অবাক হতেন যে কেউ। তাঁর দাবি, ওই ১১ মিনিটের মৃত্যুই তাঁকে স্বর্গ আর নরকের দেখিয়েছে। স্পষ্ট বিবরণ দিতেন স্বর্গে কী রয়েছে সেসবের। বলতেন, আমরা যতটা কল্পনা করতে পারি স্বর্গ তার চেয়ে কয়েকশো গুন সুন্দর। চারিদিকে শুধু গাছপালা। মনোরম পরিবেশ। ফুলের গন্ধে ম ম করছে চারদিক। কেউ যেন অবিরাম সুন্দর একটা গান গাইছেন। অদ্ভুত একটা ধ্বনি যা মনের সব চিন্তা কাটিয়ে দেবে, বাজছে সবসময়। শুধু তাই নয়, স্বর্গে গিয়ে নিজের হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের দেখতে পেয়েছিলেন বলেও দাবি শার্লটের। বাবা-মা , আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব, সকলেই যারা পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছেন, রয়েছেন স্বর্গে। দিব্যিই রয়েছেন। সুখে রয়েছেন। এমনকি তাঁদের বয়সও বাড়েনি। যৌবনের উজ্জ্বল দীপ্তময় চেহারা ধরে রাখতে পেরেছেন সকলে। তাঁরাই শার্লটকে অভিবাদন জানিয়েছিলেন। এখানেই অবাক হওয়ার শষ নয়। শার্লট দাবি করতেন, স্বর্গে পৌঁছে নিজের মৃত ছেলের সঙ্গেও দেখা হয়েছিল তাঁর। মায়ের গর্ভে থাকা কালীন যার মৃত্যু হয়েছিল। সে নাকি বছর ত্রিশের যুবক! তবে স্রেফ স্বর্গ নয়, দূর থেকে নরক দর্শনও হয়েছিল শার্লটের। সেখানে অবশ্য সুখের লেশমাত্র নেই। পচা দুর্গন্ধ চারিদিকে। দূর থেকে শোনা যাচ্ছে চিৎকার, হাহাকার। সেখানে কারা রয়েছে তা দেখার চেষ্টা করেননি শার্লট। স্বর্গে দেখা পেয়েছিলেন ভগবানেরও। তবে ১১ মিনিটে আর কতটুকুই বা দেখা যায়! তাও যেটুকু অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা সকলের সঙ্গে ভাগ করে দিতে চাইতেন শার্লট। বারবার বলতেন জীবনে আসলেই সুন্দর। তা উপভোগ করতে শিখুন সবাই। জীবনের শেষদিন অবধি সেই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছেন।