মাতৃস্তন্যের কোনও বিকল্প নেই। অথচ যাঁরা নিরুপায় মা, সন্তানের পুষ্টির জন্য তাঁদের ভরসা করতে হয় বাইরের বেবি ফুডের উপরেই। আর বর্তমানে বাজারে বেবিফুড বাড়ন্ত। ফলে সন্তানের খাবার খুঁজে হন্যে মা-বাবারা। এই পরিস্থিতিতে পাশে দাঁড়িয়েছেন এক মহিলা। শিশুদের মুখে খাবার তুলে দিতে নজিরবিহীন কাজ করেছেন তিনি? কী করেছেন? আসুন, শুনে নিই।
বাজারের কোথাও দেখা নেই বেবিফুডের। সন্তানের জন্য খাবার খুঁজে হন্যে বাবা-মায়েরা। অথচ সে দিকে হুঁশ নেই প্রশাসনের।
আমেরিকার বাজার থেকে হঠাৎই করেই হাওয়া সমস্ত বেবি ফুড। বিশেষত ১২ মাসের কম বয়সী শিশুদের খাবার মিলছেই না বাজারে। করোনাকালীন সময়ে অতিরিক্ত বেবিফুড মজুত করে ফেলার ফলেই এই বিরাট ঘাটতি দেখা গিয়েছে বলেই মত অভিজ্ঞদের। এদিকে, একরত্তির মুখে খাবার তুলে দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে অভিভাবকদের।
কথায় বলে, সদ্যজাতদের ক্ষেত্রে মাতৃস্তন্যের কোনও বিকল্প নেই। অথচ বিভিন্ন কারণে নিরুপায় যাঁরা, তারা সকলেই বাইরের প্যাকেটজাত বেবিফুডের উপরেই ভরসা করেন সন্তানের পুষ্টির জন্য। অনেকেই হয়তো তেমন ভাবে স্তন্য উৎপাদন করতে পারেন না। কারওর কারওর ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তাঁদের কাজ। সেসব মায়েদের ক্ষেত্রে অন্যতম নির্ভরতার জায়গা হয়ে দাঁড়ায় এই প্যাকেটজাত বেবিফুড। আর আমেরিকার ক্ষেত্রে এই বেবিফুড নির্ভরতা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশি। কিন্তু হঠাৎ করেই বাজারে বেবিফুডের ঘাটতিকে কেন্দ্র করে বেশ হইচই পড়ে গিয়েছে আমেরিকায়।
আরও শুনুন: কেন প্রকাশ্যে স্তন দেখানো হল! খোদ ব্রিটেনে কোপ অন্তর্বাসের বিজ্ঞাপনে
এই পরিস্থিতিতে নিরুপায় বাবা-মায়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে আমেরিকার ইউটা শহরের এক বাসিন্দা। ইদানীং প্রায়শই শোনা যায় স্তনদুগ্ধ দান বা বিক্রির কথা। আলিসা চিটি নামে এই মহিলাও বেছে নিয়েছেন সেই পথই। নিজের অতিরিক্ত স্তনদুগ্ধ, যা আদতে কোনও কাজে আসে না, তা তিনি বিক্রি করে দিচ্ছেন অভাবীদের কাছে। বাজারজাত শিশুখাদ্য না পেয়ে যাঁরা হন্যে, তাঁরা ভিড় করছেন আলিসার দরজায়।
ইতিমধ্যেই নাকি ১১৮ লিটার মাতৃদুগ্ধ বিক্রি করে ফেলেছেন আলিসা। যা থেকে উপকৃত হয়েছেন অসংখ্য পরিবার। গোড়া থেকেই আলিসার স্তন্যদুগ্ধের পরিমাণ বেশ বেশি ছিল। তাঁর সন্তান খাওয়ার পরেও বেঁচে যেত সেই দুধের বেশ কিছুটা অংশ। তিনটিরও বেশি ফ্রিজারে সেই দুধ সঞ্চয় করা শুরু করেন তিনি, যা আজ মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে অসংখ্য সদ্যোজাতের মুখে।
আরও শুনুন: এনেছিলেন ‘স্বপ্নের’ ন্যানো গাড়ি, এতদিনে তার কারণ খোলসা করলেন রতন টাটা
না, শুধু আলিসা নন, আমেরিকার অনেক মা-ই ইদানীং নিজের অতিরিক্ত স্তন্য বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রাথমিক ভাবে আউন্স প্রতি এক ডলার করে দাম ধার্য করেছিলেন আলিসা। তবে বাজারের ঘাটতি দেখে সেই দাম কমান তিনি। অভিভাবকদের অনুরোধে অনেক সময়ই নামমাত্র দামে সেসব দিয়ে দিচ্ছেন আলিসা। তাঁর এই ভূমিকায় ভুয়সী প্রশংসা করেছেন মানুষ। তবে একইরকম ভাবে প্রশাসনের বিরুদ্ধে সমালোচনার সুরও চড়া করেছেন তাঁরা। গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি থেকেই বেবি ফুডের উৎপাদন ক্রমশ কমছিল মার্কিন বাজারে। তবে সে নিয়ে উদাসীন জো বাইডেন সরকার। এই ঘাটতির সমস্যা মেটাতে এখনও পর্যন্ত কোনও উদ্যোগই নেয়নি তারা। ব্যাপারটি নিয়ে ক্রমশ বাড়ছে ক্ষোভ। কবে মিটবে এই শিশু খাদ্যের ঘাটতি, সে ব্যাপারে দিশা দেখাতে পারছেন না কেউই।