খুন করা হয়েছে মেয়েকে। এমনই দাবি পরিবারের। অভিযোগ ছিল মেয়ের শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। এদিকে বাড়ির বউকে অপহরণ করা হয়ছে, পালটা এই অভিযোগ এনেছিল তরুণীর শ্বশুরবাড়ির। অবশেষে খোঁজ মিলল সেই নিখোঁজ তরুণীর। কোথায় কীভাবে পাওয়া গেল তাঁকে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
খুন না অপহরণ? নিখোঁজ তরুণীকে কেন্দ্র করে এই নিয়েই তুঙ্গে ওঠে বচসা। একদিকে তাঁর শ্বশুরবাড়ি, অন্যদিকে বাপেরবাড়ি। একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে ব্যস্ত ছিলেন সবাই। এদিকে তরুণী দিব্যি ছিলেন। সবার অলক্ষ্যে প্রেমিকের সঙ্গে বহুদূরে।
ঠিক যেন সিনেমার গল্প। কিংবা সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে এই সত্যি ঘটনা। কাণ্ড সেই যোগীরাজ্যের। কেন্দ্রে রয়েছেন বছর ২৫-এর কবিতা। তরুণীর বিয়ে হয়েছিল বিনয় নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। বছর চার সংসার করেন দুজনে। পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন তাঁরা। গোল বাঁধে ২০২১ সালে। হঠাৎ শ্বশুরবাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান কবিতা। চারিদিকে খোঁজ শুরু হয়। পুলিশের কাছেও খবর যায়। বেশ কয়েকদিন খোঁজ চালিয়েও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। এরপরই কবিতার পরিবার ভেবে নেয় তাঁদের বাড়ির মেয়েকে খুন করা হয়েছে। আর সেই দায় তাঁরা চাপান মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের উপর। থানায় অভিযোগ অবধি দায়ের করেন। এদিকে, বাড়ির বউ নিখোঁজ হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ জানান কবিতার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরাও। তাঁদের অভিযোগ ছিল কবিতার পরিবারের বিরুদ্ধে। তবে খুন নয়, কবিতাকে অপহরণ করা হয়েছে বলেই দাবি তোলেন তাঁরা। এই নিয়ে জোর বচসায় জড়ায় দুই পরিবার। একদলের দাবি কবিতাকে হত্যা করা হয়েছে, অন্যদলের দাবি বাড়ির বউ অপহৃত। মাঝে পড়ে বিভ্রান্ত হয়ে যান পুলিশ আধিকারিকরাও। তৈরি হয় বিশেষ দল। আলাদা ভাবে কবিতার খোঁজ শুরু করেন পুলিশের গোয়েন্দারা। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও খোঁজ মেলেনি।
খোঁজ থামল তিন বছর পর। জানা গেল, দিব্যি বেঁচে আছেন কবিতা। খুন বা অপহরণ নয় একপ্রকার নিজের ইচ্ছাতেই বাড়ি ছেড়ে চলা এসেছিলেন তরুণী। নিজের ভালোবাসার মানুষের কাছে। তিন বছর প্রেমিকের সঙ্গেই কাটিয়েছেন। বাড়ির কেউ খোঁজ করছে কিনা, সেসব নিয়ে মাথাও ঘামাননি। বর্তমানে রয়েছেন লখনউতে। তবে বাড়ি থেকে পালিয়ে এখানে আসেননি। হাজির হয়েছিলেন অযোধ্যায়। সেখানে বেশ কয়েক মাস কাটিয়ে লখনউ এসেছেন। ভালোবাসা অবশ্য ছোটবেলার নয়। স্থানীয় এক দোকানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল কবিতার। সেই দোকানিকেই মন দিয়ে ফেলেন। তাঁর সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আর সেইমতো দুজনে পালিয়ে যান বহুদূরে। তবে কবিতার এই আচরণ মোটেও ভালভাবে নেয়নি কেউ। পরিবারের সদস্যরা তো বটেই, বিরক্ত হয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরাও। জানা গিয়েছে, কবিতা ও তাঁর প্রেমিককে আদালতে তোলা হবে। যেহেতু বিচারাধীন বিষয়, তাই আদালতের হাতেই সবটা ছাড়তে চাইছেন পুলিশ কর্তারা।