আইলাইনার। নিছকই এক প্রসাধন সামগ্রী। তাই দিয়েও কী কারও জীবন বাঁচানো সম্ভব? সাম্প্রতিক এক ঘটনা বলছে, অবশ্যই সম্ভব। ঠিক কীভাবে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কথায় আছে, বুদ্ধিং যস্য বলং তস্য। অর্থাৎ বুদ্ধি যার বল তার। স্রেফ কথার কথা নয়, বাস্তবে এর প্রমাণ মেলে ভুরি ভুরি। সাম্প্রতিক এক ঘটনাই ধরা যাক। সামান্য এক আইলাইনার আর কয়েকটা ইয়ারবাড কাজে লাগিয়েই নিজেকে উদ্ধার করেছেন এক মহিলা।
আরও শুনুন: হাজার খুঁজলেও খোলা বাজারে মিলবে না, কোন সংস্থা বানায় ভোটের নীল কালি?
ঠিক কী ঘটেছে?
তাহলে খুলেই বলি। ঘটনাটি সুদূর ইংল্যান্ডের। এ দেশে প্রাচীনত্বের ছড়াছড়ি। পুরনো প্রাসাদ হোক বা ইউনিভার্সিটি, গোটা বিশ্বের মানুষ ইংল্যান্ডে গিয়ে মুগ্ধ হন। এমনই এক মধ্যযুগীয় প্রাসাদে থাকতেন বছর তেত্রিশের ক্রিস্টিনা ইলকো। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির শিক্ষাবিদ ক্রিস্টিনা একাই ওই বাড়িতে থাকতেন। তাই যাবতীয় সব কাজ সামলাতে হত তাঁকেই। বিপদ হলেও যে সেটা তাঁকেই সামলাতে হবে, একথা বলাই বাহুল্য। শরীর খারাপ কিংবা অন্য কোনও সমস্যা হলে একরকম, কোনও না কোনও উপায় ঠিক বেরোবে। কিন্তু ক্রিস্টিনা যে সমস্যায় পড়েছিলেন, তা থেকে বরাতের জোর না থাকলে বেরোনো প্রায় অসম্ভব। তবে হ্যাঁ স্রেফ ভাগ্য নয়, বুদ্ধির জোর থাকাটাও আবশ্যক। ফেরা যাক ঘটনায়। দিনকয়েক আগে সেই মধ্যযুগীয় প্রাসাদের এক বাথরুমে আটকে পড়েন ক্রিস্টনা। দোষ অবশ্য তাঁর নয়। কারণ তিনি জানতেনই না বাথরুমের লক খারাপ হয়ে গিয়েছে। কোনওভাবে একবার দরজা বন্ধ হয়ে গেলে ভিতর তা খোলা আর সম্ভব নয়। কাজেই একবার ভিতরে আটকে গেলে বেরোনো প্রায় অসম্ভব। এক্ষেত্রে সমস্যাটা আরও জটিল ছিল কারণ, ওই প্রাসাদের আশেপাশে তেমন বাড়িঘর ছিল না। থাকলেও যে খুব একটা সুবিধা হত তা নয়। কারণ এর দেওয়াল এতই চওড়া যে ভিতর থেকে হাজার ডাকাডাকি করলেও বাইরের কেউ সহজে শুনতে পাবে না। এদিকে এমন একটা পরিস্থিতিতে আটকে পড়েছেন ক্রিস্টিনা। সঙ্গে কিছুই নেই। এমনকি মোবাইল ফোনও না।
আরও শুনুন: সোশাল মিডিয়ায় লকডাউন! অ্যাকাউন্ট নাকি নিজের ইমেজ হারাবার ভয়েই হাহাকার?
এরপর অবশ্য যা ঘটে তা সিনেমার গল্পকেও হার মানাতে পারে। বাথরুম থেকে বেরিয়ে নিজেই সে অভিজ্ঞতার কথা সকলকে জানিয়েছেন ক্রিস্টিনা। তাঁর কথায়, ওভাবে আটকে পড়ে প্রথমে বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। বেশ খানিকক্ষণ কিছু না করেই বসে ছিলেন ঠায়। কয়েকবার চেষ্টাও করেন দরজা খোলার। লাভ হয়নি। পুরনো দিনের দরজা, তাই ভেঙে ফেলার কথা ভাবাও বোকামি। এভাবেই কাটতে থাকে সময়। ক্রিস্টিনা ভেবে দেখেন বাড়িতে বাইরের কারও আসার সম্ভাবনা অন্তত দিন তিনেকের মধ্যে নেই। কাজেই যা করার তাঁকেই করতে হবে। এমন একটা সময় তাঁর চোখ পরে সামনে থাকা আইলাইনারের উপর। সেইসঙ্গে বাথরুমে থাকা কিছু ইয়ারবাড। ভেবেচিন্তে এই কয়েকটা জিনিস দিয়েই শুরু করেন দরজা খোলার কাজ। বেশ খানিকক্ষণের চেষ্টা। বুদ্ধি করে একেবারে চাবির মতো করে ওই আইলাইনার ব্যবহার করেন ক্রিস্টনা। ব্যস! কিছুক্ষণের মধ্যেই খুলে যায় তালা। সে যাত্রায় রক্ষা পেলেন ক্রিস্টনা। কিন্তু এমনটাও যে হতে পারে, তা অনেকেরই ভাবনার বাইরে। কোনও শক্ত ধাতব কিছু দিয়ে তালা খোলার কেরামতি অনেকেই জানেন। কিন্তু আইলাইনার বা ইয়ারবাড দিয়েও এই কাজ করা যায়, এমনটা বেশ অবাক করেছেন সকলকে। খোদ ক্রিস্টিনাও অবাক। নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে তাই সকলকে সে কথা জানিয়েছেন তিনি।