ক্ষমতা নেই কুম্ভে যাওয়ার। বাড়ির কাছে গঙ্গাও নেই। তাই ইচ্ছা থাকলেও স্নানের সুযোগ মেলেনি। কিন্তু ইনি হার মানতে নারাজ। জেদের বশে গঙ্গাকেই টেনে আনলেন বাড়ির কাছে। কিন্তু কীভাবে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
পূর্বপুরুষদের অভিশাপ মুক্ত করতে হবে। এবং তা সম্ভব করতে পারেন কেবলমাত্র গঙ্গা। শুনতে অসম্ভব, তবে তা সম্ভব করে দেখান ভগীরথ। তাঁর শঙ্খধ্বনিতেই মর্তে আগমন হয় পতিতপাবন গঙ্গার। পুরাণের এই কাহিনি মোটের উপর সকলের জানা। কিন্তু বাস্তবেও কি এমনটা কেউ করতে পারেন?
:আরও শুনুন:
পুণ্যের আড়ালে ‘পাপের কারবার’! মহিলারা স্নান করছেন কুম্ভে, সেই ছবি-ভিডিও তুলে চলছে দেদার ব্যবসা
কুম্ভের আবহে উত্তরটা হবে হ্যাঁ! নেপথ্যে কর্নাটকের গৌরী। বছর ৫৭-র মহিলা। প্রবল ইচ্ছা ছিল কুম্ভে যাওয়ার। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। নানা অসুবিধা পেরিয়ে প্রয়াগ সঙ্গমে পা রাখতে পারেননি। তাই বাড়িতেই গঙ্গা আনয়ন করেছেন। শুনতে অবাস্তব মনে হলেও, একেবারে বাস্তব সত্যি। আসলে, ধর্মীয় কারণে বিশেষ হওয়ার দরুণ, এবারের কুম্ভ ঘিরে উন্মাদনা নেহাতই কম নয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছেন। স্নান সেরে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার কাটিয়ে যাচ্ছেন কয়েকদিন। সব মিলিয়ে সাজ সাজ রব। সেইসব ছবি-ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে। তা দেখার পর আরও অনেকের ইচ্ছা হচ্ছে কুম্ভে আসার। গৌরি অবশ্য এইসব ছবি দেখে আলাদা করে অনুপ্রাণিত হননি। বরং তাঁর বরাবরের ইচ্ছা ছিল কুম্ভে যাওয়ার। সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় আর্থিক পরিস্থিতি। যতই যাই হোক, কুম্ভে যাওয়া তাও আবার সুদূর দক্ষিণ ভারত থেকে যথেষ্ট খরচ সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই ভেবেচিন্তে বিশেষ এক বুদ্ধি আঁটেন গৌরি।
:আরও শুনুন:
কুম্ভমেলা শেষ হলেও ভিড় থাকে প্রয়াগ সঙ্গমে, কোন কোন মন্দিরের টানে ভক্তরা ছুটে যান?
প্রবল আত্মবিশ্বাসে ভর করে বাড়ির উঠোনে কুয়ো খুঁড়তে শুরু করেন। ভেবেছিলেন, একসময় এই কূপ থেকে গঙ্গাজল বেরিয়ে আসবে। টানা দুমাসের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর খোঁড়ার কাজ শেষ হয়। ততদিনে ৪০ ফুট সমান গভীর কূপ খোঁড়া হয়ে গিয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় এরপরেই বেরিয়ে আসে গঙ্গাজল। যদিও এমনটা প্রথম নয়। এর আগেও অনেক গভীর কূপ খুঁড়েছেন। সেসব মূলত চাষাবাদের প্রয়োজনে। স্থানীয়রা যে তাঁর কাজে বিশেষ সন্তুষ্ট ছিলেন তাও নয়। তবু নিজের ইচ্ছাপূরণ করতে অদম্য জেদ ছাড়েননি। আর তাতেই পেয়েছেন সাফল্য। যদিও এই জল আদৌ গঙ্গার কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকের। তাতে মাথা ব্যথা নেই গৌরির। নিজের অভীষ্ট পূরণ করে দিব্য খুশি হয়েছেন তিনি।