ক্রিকেট ম্যাচ খেলবেন সলমন খান। এমন কথা শোনার পর যে কোনও বলিউড ফ্যানই বেশ উত্তেজিত হবেন। উপরন্তু যদি বলা হয়, এই ম্যাচে টাকা বিনিয়োগ করলেই অনেক টাকা লাভ সম্ভব, তাহলে তো আর কথাই নেই! সাত পাঁচ না ভেবেই অনেকে মোটা টাকার বিনিয়োগ করে ফেলতে পারেন। কিন্তু আসলে এমন প্রতিশ্রুতির আড়ালেই লুকিয়ে থাকে আর্থিক প্রতারণার ফাঁদ। ঠিক যেরকম প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে মোটা টাকা খোয়ালেন এক মহিলা। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভবিষ্যতে লাভের আশায় অনেকেই বিভিন্ন সংস্থায় টাকা বিনিয়োগ করেন। কিছু ক্ষেত্রে সত্যিই লাভ হয়। তবে এই ধরনের অনেক সংস্থা লাভের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর্থিক প্রতারণার ফাঁদও পেতে রাখে। সম্প্রতি এমনই এক আর্থিক প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে।
আরও শুনুন: স্ত্রীকে খুশি করতে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন সিস্টেম হ্যাক, গ্রেপ্তার ইঞ্জিনিয়ার
ঘটনার সূত্রপাত হরিয়ানার গুরুগাঁওয়ে। সেখানকার এক বেসরকারি সংস্থার ডিরেক্টর, ববিতা যাদব আর্থিক প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা খুইয়েছেন বলে খবর। অভিযোগ, বছর চারেক আগে ববিতার দুই পরিচিত এক অদ্ভুত বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে তাঁর অফিসে হাজির হয়। তাদের দাবি ছিল, বলিউডের বিখ্যাত তারকাদের নিয়ে একটি ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করবে তারা। তাদের কথা অনুযায়ী, সলমন খান থেকে আরম্ভ করে বলিউডের নামকরা সব তারকারা অংশ নেবেন এই ম্যাচে। থাকবেন পরিচালক বনি কাপুরও। তাই এই ম্যাচে বিনিয়োগ করতে পারলে প্রচুর টাকা লাভ হবে। একইসঙ্গে তারা জানায়, তাদের আরও দুই সঙ্গী ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত। তাই তাদের মাধ্যমেই এই ম্যাচ আয়োজন করা হবে। প্রথমে এমন প্রস্তাব শুনে বেশ উত্তেজিত হন ববিতাও। একইসঙ্গে এতজন সেলেব্রিটিকে সামনে থেকে দেখার সুযোগ, উপরন্তু তাঁরা ক্রিকেট খেলবেন মানে সে খেলা দেখতে অনেকেই আসবে। তাই লাভ যে হবে এ কথা বলাই বাহুল্য। প্রাথমিক ভাবে এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে একটি মিটিং ঠিক করতে বলেন তিনি। সেই মতো তাঁর অফিসেই কিছুদিন পর হাজির হয় চারজন। যাদের মধ্যে ছিল ববিতার দুই পরিচিত এবং তাদের দুজন বন্ধু। মিটিংয়ের দিনও নিজেদের ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সদস্য বলেই পরিচয় দেয় নবাগত দুজন। সব কিছু বিস্তারিত শোনার পর তাদের সঙ্গে বিনিয়োগ করতে পাকাপাকি ভাবে রাজি হন ববিতা। প্রথমে ৮৫ লক্ষ, তারপর খেপে খেপে আরও ৬৫ লক্ষ টাকা মিলিয়ে মোট দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন তিনি।
আরও শুনুন: হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা করা হোক ভারতকে, হিন্দুত্ববাদীদের সুরেই সুর শিল্পী অনুপ জলোটার
টাকা নেওয়ার পর ওই চারজনের দল ববিতাকে জানায় আগামী তিন মাসের মধ্যেই আয়োজিত হবে ক্রিকেট ম্যাচ। কিন্তু তিন মাস কেন, গোটা বছর ঘুরে গেলেও ক্রিকেট ম্যাচের নামগন্ধ পাননি ববিতা। যখনই জিজ্ঞাসা করেছেন, বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়েছে ওই চারজন। এরপরেই ঘটনায় মোড় আসে। তাঁর সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে বুঝতে পেরেই নিজের বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত চান ববিতা। কিন্তু উল্টোদিক থেকে আসে অদ্ভুত এক উত্তর। ববিতাকে সরাসরি টাকা দিতে সরাসরি অস্বীকার করে ওই ঠগবাজের দল। একইসঙ্গে তারা জানিয়ে দেয়, আবার টাকা চাইলে ববিতাকে প্রাণেই মেরে দেবে তারা। এমন হুমকি শুনে বেশ ভয় পেয়ে যান ববিতা। তবে অবশেষে ভয় কাটিয়ে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অভিযুক্তদের নামে এফআইআর করা হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত। তবে এই ধরনের ফাঁদে যেন আর কেউ পা না দেন, সে বিষয়েও সকলকে সচেতন করেছে পুলিশ।